এসব গুণী ব্যক্তিবৃন্দকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করে তোলার একটি প্রয়াস এই গুনীজন উদ্যোগ। ২০০৩ সালে পথচলা শুরু করে গুনীজন আজ ট্রাস্ট হিসেবে আপ্রকাশ করেছে|
এসব গুণী ব্যক্তিবৃন্দকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করে তোলার একটি প্রয়াস এই গুনীজন উদ্যোগ। ২০০৩ সালে পথচলা শুরু করে গুনীজন আজ ট্রাস্ট হিসেবে আপ্রকাশ করেছে|
গুণীজন ট্রাষ্ট এর ইতিহাস
ডি.নেটের কর্মযজ্ঞের অন্যতম অংশ হল ‘তথ্যে প্রবেশাধিকারের’ তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক দিক নিয়ে কাজ করা। বাংলাদেশ নিয়ে গবেষণাকর্মের ওয়েবসাইট bdresearch.org.bd স্থাপনের পর চিন্তা আসলো, নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে বাংলাদেশে গুণীজনবৃন্দকে তাঁদের সাথে পরিচিত করে তোলা দরকার। চারিদিকে হতাশা আর দিকভ্রান্তির মধ্যে গুণীজন আমাদের আলোক-বর্তিকা। অধ্যাপক আনিসুর রহমানের সঙ্গে ‘গুণীজন’ কর্মসূচি নিয়ে আমাদের প্রথম আলাপ হয়। আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ও ডি.নেটের যৌথ উদ্যোগে অধ্যাপক আনিসুর রহমানের একক রবীন্দ্র সঙ্গীত সন্ধ্যা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘গুণীজন’ কর্মসূচির সূচনা ঘটে ২০০৩ সালের মার্চে। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী ‘গুণীজন’ ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন। কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, অধ্যাপক আনিসুর রহমানের রবীন্দ্র সঙ্গীতের সিডি ‘মহারাজ’- এর মোড়ক উন্মোচন করেন। ‘গুণীজন’ ওয়েবসাইট তৈরীতে সিপিডির সাঈদ আহমেদ, ওয়েব ডেভেলপার ফয়সাল আহমেদ এবং ঐ সময়ে কনসার্নে কর্মরত তাইফুর রহমান গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। নাইমুল হক জোয়ারদার পুরো ‘গুণীজন’ কর্মসূচি আগলে রাখেন। ‘গুণীজন’ এর কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট জুরী বোর্ড গঠন করা হয়। মূলত: গুণীজন নির্বাচনে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির আবির্ভাব প্রতিরোধ করাই ছিল ‘জুরী বোর্ডের’ মূল কাজ। পরবর্তী সময়ে ‘জুরী বোর্ডে’র নাম পরিবর্তন করে ‘উপদেষ্টা পরিষদ’ করা হয়। অধ্যাপক আনিসুর রহমান, কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী জুরী বোর্ডের সদস্য ছিলেন। বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদে আছেন সেলিনা হোসেন, হামিদা হোসেন ও জামিলুর রেজা চৌধুরী ।
২০০৪ সালে ‘গুণীজনে’র কাজ স্থবির হয়ে পড়লে আবারো তাকে চাঙ্গা করার উদ্যোগ নেয়া হয়। তপন বাগচীকে কর্মসূচির সমন্বয়ক নিয়োগ করা হয়। এরপর আশ্রাফ আবির ‘গুণীজন’ কর্মসূচির দায়িত্ব নেন। আশ্রাফ আবির দায়িত্ব নেয়ার পর ‘গুণীজন’ আবার সবল হয়ে ওঠে। তিনি একদল সাংবাদিককে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ‘গুণীজনে’র কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হন। ধীরে ধীরে ওয়েবসাইটে গুণীজনদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
২০০৬ সালের মে মাসে দৃক গ্যালারী ও গুণীজনের যৌথ উদ্যোগে গুণীজনবৃন্দের ডিজিটাল বায়োগ্রাফী প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এ ধরনের প্রদর্শনী বাংলাদেশে প্রথম ছিল। দীন মোহাম্মদ শিবলীর তোলা গুণীজনবৃন্দের আলোকচিত্রের পাশাপাশি সারি সারি কম্পিউটার স্ক্রীনে গুণীজনের ছবি, জীবনী, সৃষ্টির প্রদর্শনী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
ঐ সময়েই স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘গুণীজন স্কুল ইভেন্ট’ নামের একটি কর্মসূচি শুরু করা হয়।
আবির নতুন কর্মসূচির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় স্বেচ্ছাসেবী সমন্বয়ক হিসেবে ঊর্মি লোহানী ২০০৭ সালে ‘গুণীজন’ কর্মসূচির দায়িত্ব নেন।
গুণীজন এর কাজে সহায়তা করার জন্য বিশিষ্ট প্রকৃতিবিদ রোনাল্ড হালদার তাঁর সৃষ্টি ‘বাংলার পাখি’ ও ‘টাঙ্গুয়া হাওর’ থেকে বিক্রয়লব্ধ অর্থ দান করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফেডারেল সরকারের শিক্ষা বিভাগে নিয়োজিত ক্যাথেরিনা রোজারিও তাঁর আবৃত্তির সিডি থেকে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ‘গুণীজন’ কর্মসূচির কাজে দান করেন।
এছাড়া ডি.নেটের কর্মীবৃন্দ বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহায়তা করে ‘গুণীজন’ কর্মসূচিকে সচল রেখেছেন।