গুণীজন
যাঁরা তাঁদের সৃজনশীল চিন্তা, মনন ও মেধা দিয়ে শান্তি, মানবতা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন এবং এখনও যাচ্ছেন, যাঁরা তাঁদের লেখনী, শব্দমালা, বৈজ্ঞানিক আবিস্কার ও শিল্পকর্ম এবং অন্যান্য সৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন, আমাদের প্রিয় জন্মভূমির এসব গুণী ব্যক্তিবৃন্দকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করে তোলার একটি প্রয়াস এই গুণীজন উদ্যোগ। ২০০৩ সালে পথ চলা শুরু করে ‘গুণীজন’ আজ ট্রাস্ট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
গুণীজন ট্রাস্টের কার্যক্রম
গুণীজন ওয়েব জার্নাল
এই ওয়েব জার্নালে রয়েছে আমাদের দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের (ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষা, সাহিত্য, সমাজ বিজ্ঞান, গণমাধ্যম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মানবাধিকার, নারী অধিকার আন্দোলন, সঙ্গীত, চিত্রকলা, দর্শন, ক্রীড়া, আদিবাসী অধিকার আন্দোলন ইত্যাদি) গুণীজনদের বেড়ে ওঠার গল্প, তাঁদের বিভিন্ন সময়ের আলোকচিত্র, তাঁদের অডিও
সাক্ষাৎকার, নির্বাচিত লেখা/সৃজনশীল কর্ম, পুরস্কার বা স্বীকৃতি, গুণীজনবৃন্দের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র ইত্যাদি। ১০২৩ জন গুণীজনকে নিয়ে গুণীজন কাজ করে যাচ্ছে।
গুণীজন স্কুল কর্মসূচি
শ্রেষ্ঠ সন্তানদের উপর নির্মিত এই ওয়েব জার্নালের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্ম সহজেই তাদের অনুপ্রেরণার উৎস খুঁজে পাবে এবং এর ফলে তারা দেশের প্রতি দায়িত্ব পালনে আরও বেশী উদ্বুদ্ধ এবং সৃজনশীল হবে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সৃজনশীল হতে অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে গুণীজন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্কুল কর্মসূচি’র আয়োজন করে যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে গুণীজন ওয়েবসাইটসহ সব প্রকাশনার মাধ্যমে বিভিন্ন গুণীজনের জীবনী, আলোকচিত্র এবং গুণীজনদের জীবন সংশ্লিষ্ট উপস্থাপনা প্রদর্শন করা হয়। এক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের পছন্দ অনুসারে গুণীজনবৃন্দের জীবনী উপস্থাপন করা হয়। সবশেষে গুণীজনবৃন্দের উপরে একটি সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
প্রদর্শনী
গুণীজন কর্মসূচি ‘গুণীজন জীবনী এবং আলোকচিত্রের ডিজিটাল প্রদর্শনী’ আয়োজন করে আসছে। প্রথম প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় ২০০৬ সালে, দ্বিতীয়টি ২০০৯ সালে।
প্রকাশনা
গুণীজন কর্মসূচি ইতিমধ্যে ৬টি সিডি প্রকাশ করেছে। এগুলো- ২০০৩ সালে ‘মহারাজ’ (অধ্যাপক আনিসুর রহমানের রবীন্দ্রসঙ্গীত), ২০০৪ সালে ‘টাঙ্গুয়ার হাওড়’ (প্রামাণ্য চিত্র- রোনাল্ড হালদার) এবং ‘পাখির ডাক’ (রোনাল্ড হালদার), ২০০৫ সালে ‘বধূ’ এবং ‘বর্ষা’ (অধ্যাপক আনিসুর রহমানের রবীন্দ্রসঙ্গীত) এবং গুণীজনবৃন্দের জীবনী, আলোকচিত্র ইত্যাদি সম্বলিত সিডি ‘মহিমা তব উদ্ভাসিত’ প্রকাশিত হয় ২০০৮ সালে, ‘মহিমা তব উদ্ভাসিত-মুক্তিযুদ্ধ, খন্ড-১’ – ২০০৯ সালে এবং ২০১১ সালে ‘মহিমা তব উদ্ভাসিত-মুক্তিসংগ্রাম’ প্রকাশিত হয়। ভবিষ্যতে গুণীজনবৃন্দের জীবনী সমন্বিত সিডি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের পরিকল্পনা আছে। কম্পিউটার সারা দেশে সহজলভ্য না হওয়ায় অর্ধবার্ষিক গুণীজন পত্রিকা প্রকাশ করা হচ্ছে।
গুণীজন কিভাবে কাজ করে
একদল গবেষক যাঁদের অধিকাংশই সাংবাদিক ও উন্নয়ন কর্মী নিরলসভাবে গুণীজনবৃন্দকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁরা গুণীজনবৃন্দের নানা তথ্য সংগ্রহ করছেন এবং গুণীজন ওয়েব জার্নাল সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
সংগঠক খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, শিক্ষাবিদ জামিলুর রেজা চৌধুরী, সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ও মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল এবং চিত্রশিল্পী, মুদ্রণ ও ইলেকট্রনিক সাংবাদিক, উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি ট্রাস্টি পরিষদ গুণীজন দলকে গুণীজন নির্বাচনসহ সার্বিক সহায়তা করছেন। বর্তমানে বাংলা ওয়েবসাইট www.gunijan.org.bd সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে এবং ইংরেজী ওয়েবসাইট নির্মাণের কাজ চলছে। পুরো কর্মসূচিটিই মূলত দেশপ্রেম এবং আগ্রহ থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে।
এর প্রভাব কি হতে পারে
গুণীজন কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হল শ্রেষ্ঠ সন্তানদের উপর নির্মিত ওয়েব জার্নালসহ সব প্রকাশনার মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্ম যেন সহজেই তাদের অনুপ্রেরণার উৎস খুঁজে পায় এবং এর ফলে তারা দেশের প্রতি দায়িত্ব পালনে আরও বেশী উদ্বুদ্ধ, গুণগত মানসম্পন্ন এবং সৃজনশীল হয়ে ওঠে। গুণীজনবৃন্দ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের অবদানের জন্য স্বীকৃতি পেয়েছেন এবং তাঁদের অনেকের জীবনবৃত্তান্ত ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়েছে। তবে এসব প্রকাশনা এবং স্বীকৃতির অধিকাংশই ক্ষণস্থায়ী। কারণ প্রকাশনাগুলো বিতরণের পর অধিকাংশ সময় তা আর খুঁজে পাওয়া যায় না বা সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সেক্ষেত্রে অনলাইন আর্কাইভ হচ্ছে একটি স্থায়ী মাধ্যম এবং যে কেউ যে কোন সময় এখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।
সাংবাদিকবৃন্দের জন্য এটি একটি তথ্যের উৎস ভান্ডার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে যাঁদের বিভিন্ন সময়ে বিখ্যাত বা প্রসিদ্ধ ব্যক্তিদের নিয়ে রিপোর্ট বা নিবন্ধ লিখতে হয় তাঁদের জন্য এই অনলাইন আর্কাইভ বিশেষ উপকারে আসছে। তারা এখান থেকে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে তাঁদের লেখনীকে সমৃদ্ধ করতে পারছেন।
গুণীজন ট্রাস্ট এর অর্জন
এসব গুণী ব্যক্তিবৃন্দকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করে তোলার একটি প্রয়াস এই গুণীজন উদ্যোগ। ২০০৩ সালে পথচলা শুরু করে গুণীজন আজ ট্রাস্ট হিসেবে আপ্রকাশ করেছে|
এসব গুণী ব্যক্তিবৃন্দকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করে তোলার একটি প্রয়াস এই গুণীজন উদ্যোগ। ২০০৩ সালে পথচলা শুরু করে গুণীজন আজ ট্রাস্ট হিসেবে আপ্রকাশ করেছে|