পাবনা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক নিরক্ষর মাঝির সন্তান তিনি। নাম মোহাম্মদ আবদুল জব্বার। পড়াশুনা শুরু করেন গ্রামের পাঠশালায়। বাবার আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল না হওয়ায় অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে তাঁকে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে হয়েছে। তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে অনেকেই তাঁকে কোনো গৃহস্থ বাড়িতে কাজে লাগিয়ে দেয়ার পরামর্শ দেন তাঁর বাবা-মাকে। কিন্তু তাঁর বাবা-মা এবং তিনি আত্মীয়স্বজনদের সেসব কথায় কর্ণপাত করেননি। পড়াশুনা চালিয়ে যান তিনি। গ্রামের লোকদের পরামর্শে একবার তাঁকে মাদ্রাসায় ভর্তি করানোর চেষ্টা চালায় তাঁর পরিবার। কিন্তু জেদ ধরেন মাদ্রাসায় নয় স্কুলেই পড়াশুনা করবেন । অবশেষে তাঁকে স্কুলেই রাখা হয় এবং সাফল্যের সাথে স্কুলের পাঠ শেষ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। কলেজ পাশ করার পর লন্ডনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান উচ্চশিক্ষার জন্য। এভাবেই সব সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে তিনি পড়াশুনায় অনন্য সাফল্য অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার পথিকৃৎ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন।
মুন্সী মিয়াজান মল্লিক এবং বুলু বেগমের সংসারে আবদুল জব্বার জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৫ সালে। জন্মস্থান পাবনা জেলার সুজানগর থানার গোপালপুর গ্রাম। দুই বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে আবদুল জব্বার ছিলেন সবার ছোট। মিয়াজান মল্লিক প্রথম জীবনে মাঝি ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি স্বাধীনভাবে ছোট ছোট ব্যবসা শুরু করেন এবং এই ব্যবসার সীমিত আয় দিয়েই সংসার চালাতেন তিনি। মিয়াজান মল্লিক তাঁর বড় ছেলে মোহাম্মদ আবিদ আলীকে প্রথমে গ্রামের পাঠশালায় ভর্তি করান। পাঠশালার হেডপণ্ডিত শশী ভূষণ দাস মেধাবী আবিদ আলীকে বৃত্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেন। বৃত্তি পরীক্ষায় আবিদ আলী জেলার সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম হয়ে মাসিক দুই টাকা বৃত্তি লাভ করেন এবং স্কুলে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পান। আবদুল জব্বার এবং তাঁর মেজো ভাই আকবর আলীকেও হেডপণ্ডিত পাঠশালায় বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ দেন।
গোপালপুর পাঠশালা থেকে বৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মোহাম্মদ আবদুল জব্বার নিশ্চিন্তপুর উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর ১৯৩২ সালে সাতবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র হিসেবে লেটারসহ ম্যাট্রিক পাস করেন। একই বছর তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে আই.এসসি. ভর্তি হন। ১৯৩৪ সালে তিনি এই কলেজ থেকে গণিতে লেটারসহ কৃতিত্বের সঙ্গে আই.এসসি. পাস করেন। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মুসলমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং বৃত্তি লাভ করেন। এরপর গণিতে অনার্স নিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজে বি.এসসি. ভর্তি হন তিনি। মেজো ভাই আকবর আলীর মতো রসায়নে অনার্স নিয়ে বি.এসসি. পড়ার ইচ্ছে ছিল তাঁর। কিন্তু আই.এসসি. পরীক্ষায় গণিতে লেটার পাওয়ায় প্রেসিডেন্সি কলেজের রসায়ন বিভাগের তৎকালীন প্রধান ড. কুদরাত-এ-খুদার পরামর্শে তিনি গণিত বিষয়ে অনার্স পড়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে গণিতে অনার্সসহ বি.এসসি. পাস করেন। মাত্র অল্প কয়েক নম্বরের জন্য তিনি প্রথম বিভাগ পাননি। এরপর গণিত বিষয়ে এম.এসসি. ডিগ্রি লাভের জন্য তিনি পড়াশোনা শুরু করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনিযুক্ত জার্মান অধ্যাপক এফ. ডব্লিউ. লেভি এম.এসসি. শ্রেণিতে মডার্ণ অ্যালজেবরা নামে একটি নতুন বিষয় প্রবর্তন করেন। এই নতুন বিষয়ের একমাত্র ছাত্র ছিলেন আবদুল জব্বার। ১৯৩৮ সালে তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে এম.এসসি. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
এম.এসসি. পাস করার পর অধ্যাপক লেভির সুপারিশে আবদুল জব্বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গবেষণা-বৃত্তি লাভ করেন। এ বৃত্তি নিয়ে অধ্যাপক লেভির তত্ত্বাবধানে গবেষণা কাজ শুরু করেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের শুদ্ধ গণিত (পিওর ম্যাথমেটিক্স) বিভাগের প্রভাষক নিযুক্ত হন। সে-সময় তৎকালীন সরকার ফরেন স্কলারশিপ চালু করেন এবং আবদুল জব্বার এই স্কলারশিপ লাভ করেন। এই স্কলারশিপ অর্জনের মধ্য দিয়ে আবদুল জব্বারের বিদেশে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভ করে তাঁর প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর সুযোগ এলো। শুভানুধ্যায়ী অধ্যাপক লেভির পরামর্শে আবদুল জব্বার ডি.এসসি. ডিগ্রি অর্জনের লক্ষ্যে এমএস ডিগ্রির জন্য ভর্তি হন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরে অবস্থিত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে আবদুল জব্বার ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর বোম্বাই থেকে জাহাজে ওঠেন। ইউরোপে তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়েছে। বোম্বাই থেকে তাঁদের জাহাজ ছাড়ার দুইদিন পর ব্রিটেন জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এ-সময় জার্মান যুদ্ধজাহাজের অতর্কিত আক্রমণের আশঙ্কায় জাহাজের যাত্রাপথ পরিবর্তন করতে হয়। সুয়েজ খাল ধরে এগুনোর পরিবর্তে তাঁদের জাহাজ পুরো আফ্রিকা ঘুরে ব্রিটেনে পৌঁছায় নির্দিষ্ট সময়ের অনেকদিন পর। বিশ্বযুদ্ধের সেই অস্থির সময়ে আবদুল জব্বার একজন অধ্যাপকের অধীনে তাঁর পড়াশোনা শুরু করেন। যুদ্ধকালীন নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে এক বছর গবেষণা করে তিনি যখন পিএইচডি ডিগ্রির জন্য মনোনীত হলেন, তখনই যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে লন্ডনের সকল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশে অন্যান্য সক্ষম লোকদের মতো আবদুল জব্বারের অধ্যাপককেও বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হয়। আবদুল জব্বার তখন অন্য কোনো অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে তাঁর কাজ শেষ করার চেষ্টা করতে থাকেন। এসময় ব্রিটিশ সরকার সব বিদেশীকে ইংল্যান্ড ছেড়ে চলে যাবার আদেশ জারি করলে আবদুল জব্বার তাঁর উচ্চশিক্ষা অসমাপ্ত রেখেই দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন।
লন্ডন থেকে ফিরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক লেভির তত্ত্বাবধানে গবেষণা শুরু করেন। অধ্যাপকের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি গবেষণা-বৃত্তি লাভ করেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অবৈতনিক লেকচারার নিযুক্ত করা হয়। গবেষণা কাজের তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক লেভির সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিষয়ক সেমিনারগুলোতে যোগ দেয়ার সুযোগ হয় তাঁর। অধ্যাপকের সঙ্গে মিলিতভাবে কয়েকটি গবেষণা-নিবন্ধও তিনি প্রকাশ করেন এসময়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈতনিক প্রভাষক হিসেবে নিযুক্তির সময় তাঁকে আশ্বাস দেয়া হয়েছিল যে, পদ খালি হলে তাঁকে প্রভাষকের পদে স্থায়ী নিয়োগ দেয়া হবে। কিন্তু এই আশ্বাস শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে ১৯৪৩ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। কিছুদিন পর সেখান থেকে বদলি হয়ে তিনি ফিরে আসেন প্রেসিডেন্সি কলেজে।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর আবদুল জব্বার পাকিস্তানের কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। প্রথমে তাঁকে নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর কলেজে বদলি করা হয়। কিন্তু এর পরপরই কৃষ্ণনগর ভারতের অন্তর্ভুক্ত হলে তাঁকে রাজশাহী কলেজে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়। বছরখানেক এই কলেজে থাকার পর ১৯৪৮ সালে তিনি নিযুক্ত হন তৎকালীন ঢাকা আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান হিসেবে। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত তিনি এই বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। সেই বছরই আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হলে তিনি এর রেজিস্ট্রার নিযুক্ত হন এবং ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৮ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তিনি ছাত্রকল্যাণ পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ড. এম. এ. রশীদের নামে সম্মানসূচক পদ (চেয়ার)-এর সূচনা করা হয়। মোহাম্মদ আবদুল জব্বার প্রথমবারের মতো ‘ড. রশীদ অধ্যাপক’ নিযুক্ত হয়ে পুনরায় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। এই সময়ে তাঁর পরিকল্পনায় ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হয় প্রথম সিলেস্চিয়াল গ্লোব বা খ-গোলক (আকাশ সম্বন্ধীয় গোলক)। এই খ-গোলকটি জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছে। ৪০ ইঞ্চি ব্যাসের এই গোলকটিতে সর্বমোট ১ হাজার ৯ শত ৯০ টি তারার অবস্থান দেখানো হয়েছে। এছাড়া এতে আরও রয়েছে ৮৯টি তারামণ্ডলের সরলরৈখিক চিত্র। একইসঙ্গে প্রায় দুই হাজার তারার অবস্থান নির্দেশিত আছে ঐ গোলকে।
মোহাম্মদ আবদুল জব্বার জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়েছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজে শিক্ষকতা করার সময়। এই কলেজে ছোট একটি অবজারভেটরি ছিল। সেখান থেকে টেলিস্কোপে আকাশের গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি দেখানো হতো। সে-সময়েই জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলায় তাঁর লেখা বিভিন্ন নিবন্ধ প্রকাশিত হয় ‘মোহাম্মদী’, ‘সওগাত’, ‘পাঠশালা’ ইত্যাদি পত্রিকায়। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ড. রশীদ অধ্যাপক হিসেবে কাজ করার সময় তিনি রচনা করেন গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ‘বিশ্ব ও সৌরজগৎ’। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত এই গ্রন্থের ভূমিকায় তিনি বলেছেন “..জ্যোতির্বিদ্যা আমার সখের বিষয়।…” এই শখের বিষয়টি নিয়ে গবেষণাকাজ চালিয়ে যাবার ইচ্ছে তাঁর অবশ্যই ছিল। কিন্তু এর জন্য বিষয়োপযোগী বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম, গবেষণাগার ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা তিনি কখনোই পাননি। তা সত্ত্বেও তিনি নানাভাবে সচেষ্ট হয়েছেন এই বিষয়ের গবেষণার জন্য এবং স্ব-উদ্যোগে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার জন্য কিছু কিছু মডেল ধরনের সরঞ্জাম তৈরি করিয়েছিলেন।
মোহাম্মদ আবদুল জব্বার যখন জ্যোতির্বিজ্ঞান-চর্চা শুরু করেছিলেন তখন এখনকার মতো কারিগরি সুযোগ সুবিধা ছিল না। কোনোরকম সরকারি, বেসরকারি সহযোগিতা না পেয়েও নিভৃতচারী এই জ্যোতির্বিদ নিজের অর্থ ব্যয় করে অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিভিন্ন স্থান থেকে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় রসদ জোগাড় করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার থেকে ভারতীয় পুরাণ, নাসিরুদ্দিন আল-তুসীর কয়েকটি মূল আরবী গ্রন্থ (যার অধিকাংশই গ্রীক গ্রন্থের অনুবাদ) সংগ্রহ করে অধ্যয়ন করেছেন। এছাড়া ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা লাইব্রেরি থেকে ইসলামী যুগের জোতির্বিদ্যার পুস্তক, কুমিল্লার রামমালা লাইব্রেরিতে চীনের জোতির্বিদ্যা সম্বন্ধে সন্ধান লাভ করেন। চীন ও মিসরের প্রাচীন জোতির্বিদ্যা সম্বন্ধে ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে প্রকাশিত জোতির্বিদ্যা বিষয়ক বিভিন্ন পত্র পত্রিকা এবং বই-এর সাহায্য নিয়েছেন। ঢাকার ভূতপূর্ব নর্মাল স্কুলের (বর্তমানে জুনিয়র ট্রেনিং কলেজ) পরিত্যক্ত বইয়ের স্তুপ থেকে Alex Keith Johnston -এর লেখা School Atlas of Astronomy বইটি সংগ্রহ করেন। প্রাচীন বিবরণের সঙ্গে মিলিয়ে এই বইয়ের অস্পষ্ট ছবিগুলো সম্পর্কে একটা কাল্পনিক ধারণা তিনি চিত্রশিল্পী হাশেম খানকে দিয়েছিলেন এবং এভাবে প্রায় একবছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে অনেক অস্পষ্ট ছবি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এর পাশাপাশি তফসিরে কাশসাফ থেকে ২৭টি মঞ্জিলের নাম, ইউলিয়াম ব্রেননান্ড কর্তৃক লিখিত Hindu Astronomy পুস্তক থেকে এ-সকল মঞ্জিলের অবস্থান এবং ভারতীয় নক্ষত্রের সঙ্গে তাদের সম্বন্ধ খুঁজে বের করেছিলেন। ঢাকার আলীয়া মাদ্রাসার লাইব্রেরি ও লাহোর থেকে উর্দুতে প্রকাশিত একটি বই থেকে তারাসমূহের আরবী নাম এবং ‘ভগোল-চিত্রম’ বই থেকে সংস্কৃত নাম সংগ্রহ করেছেন।
মোহাম্মদ আবদুল জব্বারের গ্রন্থসমূহের মধ্যে ‘বিশ্ব-রহস্য সন্ধানে’, ‘খগোল পরিচয়’, ‘তারা- পরিচিতি’, ‘প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যা’, ‘আকাশ পট’ ইত্যাদি অত্যন্ত উচ্চমানের বিজ্ঞান-গ্রন্থ। ‘মহাকাশ গ্রন্থমালা’ সিরিজের অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয় তাঁর ‘খগোল পরিচয়’, ‘তারা-পরিচিতি’ এবং ‘প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যা’ গ্রন্থ তিনটি। জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বিজ্ঞানমনস্ক পাঠকসমাজের জন্য ১৯৪৯ সালে প্রকাশ করেন ‘বিশ্ব-রহস্যে নিউটন ও আইনস্টাইন’ এবং ১৯৫১ সালে ‘বিশ্ব-রহস্য সন্ধানে’ নামক দুটি বই। ‘বিশ্ব-রহস্যে নিউটন ও আইনস্টাইন’ বইটির ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. কুদরাত-এ-খুদা। সকল গ্রন্থেই অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষা এবং গাণিতিক যুক্তির মাধ্যমে তিনি বিষয়বস্তুকে উপস্থাপন করেছেন। ‘তারা পরিচিতি’ গ্রন্থটি উভয় বাংলায় অত্যন্ত সমাদৃত হয়। এসকল গ্রন্থ ছাড়াও তাঁর রচিত গণিতের বেশ কয়েকটি পাঠ্যপুস্তক দীর্ঘকাল ছাত্র ও শিক্ষকদের কাছে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুস্তক হিসেবে সমাদৃত হয়েছে। তাঁর অনুবাদ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘জগত ও মহাজগত’, ‘চাঁদের দেশে অ্যাপোলো’, ‘জ্ঞান ও বিস্ময়’ এবং প্রকাশিতব্য ‘নিদ্রাচারী’ (Arthur Koesler রচিত Sleep Walker-এর বঙ্গানুবাদ)। বাংলাদেশের পাশাপাশি সমগ্র ভারতেও তাঁর বইগুলোর মতো মানসম্পন্ন বইয়ের সংখ্যা খুব কম।
চাকুরি থেকে অবসর নেওয়ার পর আবদুল জব্বার সদ্যপ্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি-এর প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি নিযুক্ত হন। ১৯৮৫-৮৬ সালে ৭৬ বছর পরপর আবির্ভাব ঘটা ‘হ্যালীর ধূমকেতু’ পর্যবেক্ষণের জন্য যখন সারা বিশ্বের জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু হয়, তখন তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে এই ধূমকেতু পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উদ্যোগী হন। তাঁর প্রচেষ্টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যা বিভাগ একটি ভালো টেলিস্কোপ কেনার জন্য এক লক্ষ টাকার মঞ্জুরী প্রদান করে। ঐ টাকা দিয়েই ১৬ ইঞ্চি রিফ্লেক্টর টেলিস্কোপ আনা হয় আমেরিকা থেকে। এছাড়া হ্যালীর ধূমকেতু পর্যবেক্ষণের জন্য বিজ্ঞান জাদুঘরের পক্ষ থেকে যে ৮ ইঞ্চি ব্যাসের ‘স্মিট ক্যাসেগ্রেইন’ টেলিস্কোপ সংগ্রহ করা হয়েছিল, সেখানেও আবদুল জব্বারের পরোক্ষ অবদান ছিল। ১৯৮৭ সালে বিজ্ঞান জাদুঘরের পক্ষ থেকে ‘প্রাথমিক জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রশিক্ষণ কোর্স’ নামে একটি স্বল্পমেয়াদী পাঠক্রম চালু করা হলে তিনি অসুস্থ শরীর নিয়েও এই প্রশিক্ষণ কোর্সে প্রায় দু’ঘণ্টা একটানা দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করতেন এবং প্রশিক্ষণার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যেতেন।
মোহাম্মদ আবদুল জব্বার সংসারজীবন শুরু করেছিলেন উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশ যাওয়ার আগেই। সুসাহিত্যিক মোহাম্মদ বরকতুল্লাহর বড় মেয়ে নূরজাহান বেগমের সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ১৯৩৯ সালের ৮ জুন। নূরজাহান বেগমও সাহিত্যচর্চায় বিশেষ আগ্রহী ও পারদর্শী ছিলেন। তিনি স্যার আর্থার কোনান ডয়েল এর ‘লস্ট ওয়ার্ল্ড’ অবলম্বনে রচনা করেছিলেন ‘হারিয়ে যাওয়া জগৎ’ এবং শিশু-কিশোরদের জন্য ‘সোনার কাঠি’। আবদুল জব্বার-নূরজাহান দম্পতির ৫ পুত্র ও ২ কন্যা। নিজের সন্তান এবং তাঁর অন্য দুই ভাইয়ের সন্তানদের লেখাপড়ার ব্যাপারে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সচেতন। তাঁর সন্তানদের সকলেই পরবর্তী জীবনে নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। মোহাম্মদ আবদুল জব্বার ঘটা করে কোনো কিছু পালন না করলেও তাঁর বিবাহ বার্ষিকীর ৮ জুন তারিখটিতে স্ত্রীর জন্য একটি উপহার ও সন্ধ্যার দুটো সিনেমার টিকেট নিয়ে আসতেন। এই একটি দিনের জন্য পড়ার জগত থেকে ছুটি নিতেন পণ্ডিত ও জ্ঞানসাধক এই মানুষটি। সন্ধ্যায় তিনি স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন সিনেমা দেখতে।
জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণার ক্ষেত্রে বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মোহাম্মদ আবদুল জব্বার ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল এসোসিয়েশন প্রবর্তিত ‘ব্রুনো পদক ১৯৯০’ লাভ করেন। এছাড়া বিজ্ঞান চর্চায় অবদানের জন্য তিনি ১৯৮০ সালে কুদরাত-এ-খুদা স্মৃতি পুরস্কার এবং ১৯৮৫ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একুশে পদক লাভ করেন। প্রবন্ধ-গবেষণা ক্ষেত্রে, একজন লেখক হিসেবে ১৯৮৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
মোহাম্মদ আবদুল জব্বার সবসময় সকল গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় আন্দোলনে সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। ছোটবেলায় তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বদেশী আন্দোলনে স্থানীয়ভাবে সক্রিয় অংশ নিয়েছিলেন। ভাষা আন্দোলনেও শরীক হয়েছিলেন। ছোটো ছেলে মোহাম্মদ শফিকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন তিনি।
১৯৭৯ সালের ২ মার্চ তাঁর স্ত্রী পরলোক গমন করেন। ১৯৯৩ সালের ২৯ মে আবদুল জব্বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলার পর সোহরাওয়ার্দী হাসাপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়। পরে কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে উঠলে তাঁকে পিজি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে সি.টি. স্ক্যান করার পর চিকিৎসকেরা জানান যে তাঁর ব্রেইন সংকুচিত হয়ে গেছে। এ সময়ে তাঁর রক্তশূন্যতা দেখা দেয় এবং ১৬ জুলাই থেকে অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। অবশেষে ১৯৯৩ সালের ২০ জুলাই সকাল সাতটা দশ মিনিটে পিজি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মোহাম্মদ আবদুল জব্বার।
সংক্ষিপ্ত জীবনী
পূর্ণনাম: মোহাম্মদ আবদুল জব্বার
জন্ম: ১৯১৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন পাবনা জেলার সুজানগর থানার গোপালপুর গ্রামে।
বাবা-মা: মুন্সী মিয়াজান মল্লিক, বুলু বেগম
স্ত্রী: নূরজাহান বেগম
সন্তান: আবদুল জব্বার-নূরজাহান দম্পতির ৫ পুত্র ও ২ কন্যা। সবার বড় মেয়ে হাসিনা জাহান এবং সবার ছোট মেয়ে সাবিয়া মালিক শম্পা। পাঁচ পুত্রের মধ্যে বড় ছেলে আবদুল লতিফ, মেজো ছেলে আবদুল মতিন, সেজো ছেলে আবদুল মজিদ, চতুর্থ ছেলে মোহাম্মদ রফি এবং ছোট ছেলে মোহাম্মদ শফী।
পেশা: শিক্ষকতা; জ্যোতির্বিজ্ঞানী
শিক্ষা: মাধ্যমিক (ম্যাট্রিকুলেশন)-সাতবাড়িয়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় (১৯৩২); উচ্চমাধ্যমিক (আই.এসসি.)-কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ (১৯৩৪), আই.এসসি. পরীক্ষায় গণিতে লেটারসহ পাস করেন এবং বৃত্তি লাভ করেন; বি.এসসি.-গণিতে অনার্সসহ (প্রেসিডেন্সি কলেজ); এম.এসসি.-কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৩৮), এমএসসি.-তে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন; এম.এসসি. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর অধ্যাপক লেভির সুপারিশে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গবেষণা-বৃত্তি লাভ করেন। এ বৃত্তি নিয়ে অধ্যাপক লেভির তত্ত্বাবধানে গবেষণা-কাজ শুরু করেন তিনি। একইসঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুদ্ধ গণিত বিভাগের প্রভাষক নিযুক্ত হন। সে সময় বাংলাদেশ সরকার ফরেন স্কলারশিপ চালু করেন এবং আবদুল জব্বার এই স্কলারশিপ লাভ করে ডি.এসসি. ডিগ্রির লক্ষ্যে এম.এস. ডিগ্রির জন্য ভর্তি হন লন্ডনের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিএইচডি ডিগ্রির জন্য মনোনীত হন কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে লন্ডনের সকল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলে পিএইচডি ডিগ্রির গবেষণা অসমাপ্ত রেখে দেশে ফিরে আসেন।
কর্মজীবন: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাবে অবৈতনিক প্রভাষক হিসেবে নিযুক্ত হন (১৯৪১); গণিতের প্রভাষক হিসেবে চট্টগ্রাম কলেজে যোগদান (১৯৪৩); রাজশাহী সরকারি কলেজে গণিতের শিক্ষক হিসেবে যোগদান (১৯৪৭); ঢাকা আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে গণিত বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগদান (১৯৪৮); ১৯৬২ সালে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হলে এর প্রথম রেজিস্ট্রার নিযুক্ত হন; ১৯৬৮ সালে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক পদে যোগ দেন; ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৪ সালে ‘ড. রশীদ অধ্যাপক’ নিযুক্ত হয়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পুণরায় যোগ দেন।
প্রকাশনা: জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলায় তাঁর লেখা নিবন্ধ প্রকাশিত হয় মোহাম্মদী, সওগাত, পাঠশালা ইত্যাদি পত্রিকায়। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ‘বিশ্ব ও সৌরজগৎ’ (১৯৮৬), ‘বিশ্ব-রহস্য সন্ধানে’ (১৯৫১), ‘খগোল পরিচয়’ (১৯৬৫), ‘তারা-পরিচিতি’ (প্রথম প্রকাশ ১৯৬৭, ষষ্ঠ প্রকাশ ২০০৯), ‘প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যা’ (প্রথম প্রকাশ ১৯৭৬, দ্বিতীয় প্রকাশ ২০০০), ‘আকাশ পট’ (প্রথম প্রকাশ ১৯৮৮, চতুর্থ প্রকাশ ২০০৯) ইত্যাদি। ‘মহাকাশ গ্রন্থমালা’ সিরিজের অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয় তাঁর ‘খগোল পরিচয়’, ‘তারা-পরিচিতি’ এবং ‘প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যা’ গ্রন্থ তিনটি। জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা বিষয়ে তাঁর কালানুক্রমিক পঠন-পাঠনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বিজ্ঞানমনস্ক পাঠকসমাজের ১৯৪২ সালে প্রকাশ করেন ‘বিশ্ব-রহস্যে নিউটন ও আইনস্টাইন’, ১৯৫১ সালে ‘বিশ্ব-রহস্য সন্ধানে’ এবং ১৯৫২ সালে ‘মুসলিম যুগে জ্যোতির্বিদ্যা’ গ্রন্থগুলি। তাঁর অনুবাদগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে জগত ও মহাজগত (১৯৬৮), চাঁদের দেশে এ্যাপোলো (১৯৬৯), জ্ঞান ও বিস্ময় (১৯৭০)। এছাড়া উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির জন্য তাঁর রচিত পাঠ্যপুস্তক হলো এ টেকস্ট বুক অন ইন্টারমেডিয়েট স্ট্যাটিক্স (১৯৫২) এবং এ টেকস্ট বুক অন ইন্টারমেডিয়েট ডাইনামিক্স (১৯৫২)।
সম্মাননা: জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণার ক্ষেত্রে বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ লাভ করেন ‘ব্রুনো পদক ‘৯০’ (বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল এসোসিয়েশন, ১৯৯০)। বিজ্ঞান চর্চায় অবদানের জন্য ১৯৮০ সালে কুদরাত-এ-খুদা স্মৃতি পুরস্কার এবং ১৯৮৫ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একুশে পদক লাভ করেন। প্রবন্ধ-গবেষণা ক্ষেত্রে, একজন লেখক হিসেবে ১৯৮৩ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
মৃত্যু: ১৯৯৩ সালের ২০ জুলাই, ঢাকার পিজি হাসপাতালে।
তথ্যসূত্র:
১.ব্যক্তিগত যোগাযোগ: মোহাম্মদ আবদুল মতিন (মোহাম্মদ আবদুল জব্বারের সন্তান);
২.সুব্রত বড়ুয়া; মোহাম্মদ আবদুল জব্বার: জীবন ও কর্ম; বাংলা একাডেমী; ১৯৯৫।
লেখক: মোঃ কুতুব উদ্দিন সজিব