বাবা-মায়ের ইচ্ছে ছিল তিনি ডাক্তার বা প্রকৌশলী হবেন। তাঁর নিজের ইচ্ছে ছিল তিনি ভাল আইনজীবী হবেন। সেই মেধা তাঁর যথেষ্ঠই ছিল। কিন্তু বাবা-মায়ের ইচ্ছা বা নিজের ইচ্ছা কোনোটাই পূরণ হয়নি। হয়েছেন কৃষি বিজ্ঞানী। মূলত আর্থিক সঙ্গতি না থাকার কারণেই নিজের জীবনকে এভাবে সাজাতে হয়েছে বলে মনে করেন ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা। কিন্তু কৃষিক্ষেত্রে কাজ করতে এসে বুঝেছেন ‘অভাব’ তাঁর জীবনে কী অপূর্ব সুযোগ এনে দিয়েছে মানুষের জন্য কাজ করার, এদেশের কৃষির জন্য অবদান রাখার। দারিদ্র্য সত্যিকার অর্থেই তাঁর জীবনকে মহান ও মহৎ করে তুলেছে। ড. কাজী এম বদরুদ্দোজার নিরলস পরিশ্রম ও একাগ্র সাধনার ফলে এদেশের কৃষক ও কৃষি পেয়েছে আধুনিকতা ও উন্নয়নের ছোঁয়া।
১৯২৭ সালের পহেলা জানুয়ারী কাজী এম বদরুদ্দোজা বগুড়া জেলায় নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা কাজী বদিউজ্জামান পেশায় ছিলেন আইনজীবি। মা জমিলা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। ৩ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে কাজী এম বদরুদ্দোজা সকলের বড়।
কাজী এম বদরুদ্দোজার পূর্বপুরুষগণ ছিলেন মীরাটের (বর্তমানে ভারতের অংশ) নবাবদের বংশধর। ১৮৫৭ সালে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম সিপাহী বিদ্রোহে এই পরিবারের সদস্যরা জড়িত ছিলেন ওতপ্রোতভাবে। সৈনিকদের এই বিদ্রোহে পক্ষ নেয়ার কারণে ইংরেজ শাসককূল কাজী বদিউজ্জামানের পরিবারের প্রতি দারুণভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ফলে পরিবারের সদস্যরা একপর্যায়ে নিজেদের জীবন বাঁচাতে ভারত থেকে বিতাড়িত হয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন এদেশের মাটিতে। এদেশে আসার কারণে তাঁরা আর্থিক দিক থেকে প্রবল ক্ষতির সম্মুখীন হলেন। পরিবারের সদস্যদের আর্থিক নিরাপত্তার অভাব ক্রমেই বাড়তে থাকে। কিন্তু নানা টানা-পোড়নের মধ্যেও এই পরিবারটি একসময় এদেশের মাটি ও মানুষের সাথে মিশে যায়।
কাজী বদরুদ্দোজা নানাবাড়ী বগুড়াতে জন্মগ্রহণ করলেও বড় হয়েছেন গাইবান্ধা জেলায়। তাঁর শৈশবকাল কেটেছে পৈত্রিক বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায়। ছোটবেলা থেকেই বদরুদ্দোজা ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। শৈশবেই পড়ালেখা শুরু হয়েছিল গাইবান্ধায়। তাঁর নিজের ভাষায়, ‘আমি যখন নবম শ্রেণীতে উঠি তখন আমার বাড়ীর লোকেরা আমাকে জোর করে গোবিন্দগঞ্জ স্কুলে নিয়ে গেলেন। গোবিন্দগঞ্জ স্কুলে কোনোদিন কোনো মুসলমান ছেলে-মেয়েরা ভাল রেজাল্ট করতে পারত না। সেই ঐতিহ্য ভাঙ্গার জন্যই আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমি তাদের আশাহত করিনি। নবম ও দশম শ্রেণীতে আমি ক্লাশে প্রথম হই।’
ছোটবেলা থেকেই আরেকটি বিষয় কাজী বদরুদ্দোজাকে মানসিকভাবে সাহস জুগিয়েছে। তিনি কখনোই তাঁর পরিবারের টাকায় লেখাপড়া করেননি। মেধাবৃত্তির টাকা এবং টিউশানি করে লেখাপড়া করেছেন। এটা নিয়ে এখনো তিনি গর্ববোধ করেন। শৈশবকাল থেকেই এই স্বাবলম্বী মনোভাব তাঁকে পরবর্তীতে কঠিন বাস্তবতার পথে এগোতে মানসিক শক্তি যুগিয়েছে।
কাজী বদরুদ্দোজার বাবা পেশায় ছিলেন একজন আইনজীবী। কিন্তু আইন পেশায় তিনি বিশেষ পসার সৃষ্টি করতে পারেননি। এদিকে তিনিই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি হওয়ায় এতো বড় একটি পরিবার চালানো একটু কঠিন হয়ে পড়ে। ছেলে-মেয়েরা সবাই তখন পড়ছে।
ইতিমধ্যে কাজী বদরুদ্দোজা গোবিন্দগঞ্জ হাইস্কুল থেকে ১৯৪২ সালে ইংরেজীতে লেটারমার্কসহ মেট্রিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। ১৯৪৪ সালে রাজশাহী সরকারী কলেজ থেকে আই.এসসি. পাশ করেন।
ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর কোথায় ভর্তি হবেন তা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। কারণ বদরুদ্দোজার এক ভাই কলকাতাতে ডাক্তারি ভর্তি হয়েছেন। তাঁর জন্য মাসে মাসে খরচ পাঠাতে হচ্ছে বদিউজ্জামানকে। এই অবস্থায় আরেকজন ছেলেকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানোর সাধ্য তাঁর নেই। শেষমেষ কি আর করা? ১৯৪৫ সালে এসে ভর্তি হলেন উপমহাদেশের প্রথম কৃষি কলেজ তেজগাঁওস্থ বেঙ্গল এগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট-এ। এই কলেজে আসন সংখ্যা ছিল মাত্র চল্লিশটি। এই আসনগুলোতে সাধারণত হিন্দু মেধাবী ছাত্ররাই ভর্তি হতে পারত। কিন্তু শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক যখন বাংলার প্রধানমন্ত্রী হন তখন কলেজের বিশটি আসন মুসলমান ছাত্রদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেন। ফলে লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়া পূর্ববঙ্গের মুসলমান ছাত্ররা সেখানে সহজেই ভর্তির সুযোগ পেয়ে যায়। অবশ্য কলেজটিও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফজলুল হক নিজে উদ্যোগ নিয়ে। কৃষক দরদী এই মানুষটি পূর্ববঙ্গের মেধাবী ছাত্রদেরকে প্রথম কৃষিবিদ্যা সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলেছিলেন।
বদরুদ্দোজা যখন কৃষি কলেজে ভর্তি হয়ে ঢাকায় আসেন তখন উপমহাদেশ জুড়েই বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে। কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন একজন ইংরেজ সাহেব। কলেজটি আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইন্সষ্টিটিউট হিসাবে কাজ করত। কলেজের অধ্যক্ষ একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন হিসাবেও দায়িত্ব পালন করতেন। বদরুদ্দোজা শেরেবাংলা নগরে কলেজের নির্ধারিত হোস্টেলেই থাকতেন। অধ্যক্ষ সাহেব মেধার গুণেই বদরুদ্দোজাকে আদরে কাছে টেনে নেন। শিক্ষক ও প্রশাসক হিসাবে তিনি ছিলেন খুবই অমায়িক ও ছাত্র-বৎসল। বদরুদ্দোজা ১৯৪৮ সালে কৃষি কলেজ থেকে বি.এজি. এবং ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এসসি.-এগ্রি ডিগ্রি লাভ করেন।
ডিগ্রী কোর্স সম্পন্ন করার পরই বদরুদ্দোজা ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানে বিভাগীয় পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অনুমোদনে এগ্রিকালচার রিসার্চ ল্যাবরেটরীতে একজন রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে সঠিকভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন ও নেতৃত্বের গুণাবলীর জন্য তিনি ‘ফুলব্রাইট’ স্কলারশীপ পেয়ে উচ্চতর শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান । ১৯৫৬ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করে তিনি দেশে ফিরে এসে কৃষি গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্রপ (CROP) বোটানিতে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর থেকে সারাজীবন তিনি নিজের গবেষণা ও এদেশের কৃষির উন্নতির জন্যই ব্যয় করে গেছেন।
১৯৫৭ সালে ড. বদরুদ্দোজা ইকনোমিক বোটানিষ্ট (ফাইবার) পদ লাভ করেন। সেই সময়ের কৃষকদের কাছে ফসল বলতে ছিল প্রধানত ধান ও পাট। স্বল্প পরিচিত ফসল গম ও ভূট্টা চাষ সম্পর্কে জানার জন্য তিনি সুইডেনের বিশ্বখ্যাত স্তালভ গবেষণা কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ লাভ করেন। এর পর পরই লুগন্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ.ইন. জেনেটিক্স উপাধি অর্জন করেন। ১৯৬১ সালে দেশে ফিরেন এবং নতুন উদ্যোমে কৃষি গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের পাকিস্তান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ কাউন্সিলের পরিচালক, নির্বাহী পরিচালক ও মহাপরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে তিনিই প্রথম বাংলাদেশে উচ্চফলনশীল গম প্রবর্তন করার উদ্যোগ নেন।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বিধ্বস্ত বাংলাদেশের কৃষি গবেষণাকে নতুন করে দাঁড় করানোর দায়িত্ব নেন ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা। তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্বে গড়ে ওঠে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বারি)। ১৯৭৪-১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি বারি’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। এখানে দায়িত্ব পালনকালে ১৯৭৮ সালে ড. বদরুদ্দোজা বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব এডভানটেজ সায়েন্স-এর সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনিই কৃষি বিজ্ঞানে প্রথম স্নাতক ডিগ্রীধারী যিনি ‘বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর এডভানটেজ অব সায়েন্স-এর প্রেসিডেন্ট (১৯৭৬) নিযুক্ত হন।
ড. বদরুদ্দোজা ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে তিনি রিসার্চ এন্ড এডুকেশনের ডাইরেক্টর, বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনষ্টিটিউটের ডাইরেক্টর জেনারেল এবং মিল্কভিটার চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি দু’বছর মেয়াদে বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড অব ম্যানেজমেন্টের একজন ডাইরেক্টর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
দীর্ঘ কর্মজীবনে ড. কাজী বদরুদ্দোজা বেশ কিছু আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ও সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। ফিলিপাইনের আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট (ইরি)-এর মূল্যায়ন বোর্ডের সদস্য হিসেবে, লন্ডনের ট্রপিক্যাল প্রজেক্ট ইনষ্টিটিউটের উপদেষ্টা কমিটিতে, নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস অব ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (ইনজার)-এর বোর্ড অব ট্রাষ্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দেশের জন্য এনেছেন দুর্লভ খ্যাতি। এছাড়াও পাকিস্তান-আমেরিকা কৃষি গবেষণা মূল্যায়ন কমিটি, মেক্সিকোর আন্তর্জাতিক গম ও ভূট্টা গবেষণা ইনষ্টিটিউট, ইন্দোনেশিয়ার গভর্নিং বোর্ড অব সিজিপিআরটি সেন্টার, ভিয়েতনামের ভূট্টা গবেষণা প্রকল্পের মূল্যায়ন কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভিয়েতনামের প্রধান গবেষণা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভিয়েতনামের জেনেটিক্স ইনষ্টিটিউট প্রতিষ্ঠা (১৯৮৭) এবং ভিয়েতনামের কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কাউন্সিল পুনঃগঠনে (১৯৮৫-৮৮) অবদান রাখেন।
গত ২০-২৫ বছর যাবৎ দেশে যে উন্নত জাতের পেয়ারা উৎপাদিত হয়, প্রতিটি পেয়ারা এক কেজির মতো ওজন হওয়ায় যাকে অনেকেই ‘কেজি পেয়ারা’ বলে ডাকে সেটি আসলে হবে ‘কাজী পেয়ারা’। আর এই কাজী পেয়ারার উদ্ভাবক হচ্ছেন দেশের স্বনামধন্য কৃষি বিজ্ঞানী ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা। কাজী পেয়ারার কাজী নামটি এসেছে মূলত তাঁর নামের প্রথম অংশ থেকেই।
বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী হিসেবে বাংলাদেশ ছাড়াও তিনি যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, মিশর, ইরাক, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা ও ভিয়েতনামে বিভিন্ন সময় কর্মরত ছিলেন।
কাজী বদরুদ্দোজা ২ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জনক। বড় ছেলে ড’ কাজী মোর্তুজা কবির, ছোট ছেলে ড. কাজী সাজিউজ্জামান এবং মেয়ে ড: তাসনীম।
বর্তমানে বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থার যে পরিকাঠামো তার প্রায় পুরোটিই ড. কাজী এম বদরুদ্দোজার হাতে গড়া। কৃষি এবং এর উন্নতিই তাঁর একমাত্র সাধনা। এদেশে কৃষির ব্যাপক সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তুলেছিলেন যে কয়েকজন মানুষ তারমধ্যে কাজী এম বদরুদ্দোজা অন্যতম। এদেশের কৃষির বিকাশে তাঁর অবদান অপরিসীম।
সরকারীভাবে চাকুরি থেকে অবসর নেয়ার পর নানাভাবে যুক্ত রয়েছেন কৃষির সঙ্গেই। প্রায় নব্বই বছর বয়সেও তাঁর কাছে কৃষি সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের ভীড় লেগেই আছে। যারা আসছেন তাঁদের প্রায় সবারই হাতেখড়ি হয়েছে বদরুদ্দোজার হাত ধরে। নানা পরামর্শ নিতে আসেন তাঁরা। তিনিও অসুস্থ শরীর নিয়ে একের পর এক আলোচনা করে যাচ্ছেন সবার সাথে। সরকার তাঁকে আজীবন প্রফেসর এমিরিটাস পদ দিয়েছে। সপ্তাহে একদিন ‘বারি’তে তাঁর জন্য নির্ধারিত অফিসে গিয়ে বসেন তিনি। সেখানে দেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা আসেন। তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। সরকার এজন্য তাঁকে একটি আলাদা বাড়ি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি সেটা গ্রহণ করেননি। নিজের বাড়ি থাকতে সরকারী টাকায় খরচ করে ভাড়া থাকবেন এটি মানতে পারেননি। এই বয়সেও শরীরের সমস্ত যন্ত্রণা ভুলে নানা জায়গায় গিয়ে প্রকল্পের দেখভাল করেন।
গবেষণাকর্মে মনোনিবেশ করার পর বাংলাদেশে ব্যাপক গম উৎপাদনের সম্ভাবনা তাঁর বিজ্ঞানী দূরদৃষ্টিতে স্থায়ী রূপ নেয়। ড. বদরুদ্দোজার অনুপ্রেরণায় ড. এস এম হাসানুজ্জামানের বলিষ্ঠ উদ্যোগ ও নেতৃত্বের ফলে উচ্চফলনশীল গম এদেশের কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দেয়। এর ফলে এদেশের কৃষক আজ উচ্চফলনশীল গম আবাদ করে খাদ্য ঘাটতি কমাতে সক্ষম হয়েছে। তাঁর এই অসামান্য অবদানের জন্য নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী ড. নরম্যান বোরল্যাগ এপ্রিল ২৫, ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কাছে লেখা চিঠিতে বলেন, “When I visited Bangladesh less than four years ago, there was no mention of wheat in the national plans. Nevertheless, during the current crop cycle, Bangladesh harvested somewhere between 350,000 to 400,000 acres of wheat, much of it with excellent yield. This is a fantastic accomplishment. It could not have been achieved without the vision and excellent organizational ability of the Director of Bangladesh Agricultural Research Institute (BARI), Dr. Kazi M. Badruddoza. Under his excellent leadership, he has assembled an excellent, enthusiastic, well-motivated team of wheat scientists.” (Ref. Wheat Research and Development in Bangladesh, CIMMYT p.24)
ড. কাজী বদরুদ্দোজার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোগের ফলেই প্রতিষ্ঠিত হয় সাভারের বাংলাদেশ পশুসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান , মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউট, বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনষ্টিটিউট, ইনষ্টিটিউট অব পোষ্ট গ্রাজুয়েট ষ্টাডিজ ইন এগ্রিকালচার (বর্তমান নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর), বাংলাদেশ একাডেমী অব এগ্রিকালচার, এরিড জোন রিসার্চ ইনষ্টিটিউট, পাকিস্তান। তাঁর উৎসাহ, উদ্দীপনা ও ব্যবস্থাপনায় পূনর্বিণ্যাস ও পূনর্গঠিত হয় বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ কাউন্সিল, বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচার (স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান)। এছাড়া তিনি ইনষ্টিটিউট অব জেনেটিক, ভিয়েতনাম-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি পাকিস্তানের ARIDZONE রিসার্চ ইন্সস্টিটিউট-এর প্রতিষ্ঠাতা। কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক সূত্রে গেঁথে এদেশের কৃষি ও কৃষকের প্রয়োজনের সাথে তাল মিলিয়ে সামগ্রিক কৃষি গবেষণাকে সুসমন্বিত করার উদ্দেশ্যে ড. কাজী বদরুদ্দোজার অবদান ব্যাপক।
ড. বদরুদ্দোজা নিজেকে শুধু কৃষি ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনিই এখন একমাত্র ব্যক্তিত্ব যিনি সর্বমোট ১৬ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের উপদেষ্টা বোর্ডের উপদেষ্টা হিসেবে দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তিনি দু’বছর মেয়াদে বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড অব ম্যানেজমেন্টের একজন ডাইরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সার্ক গঠনের সময় এগ্রিকালচারাল গ্রুপের সভাপতি হিসেবেও ড. কাজী বদরুদ্দোজার সুদক্ষ নেতৃত্ব বাংলাদেশের জন্য এনেছে সম্মান ও কৃতিত্ব। তিনিই সার্কের ইনফরমেশন সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা । বর্তমানে যা সার্কের এগ্রিকালচারাল সেন্টার নামে পরিচিত এবং যা বাংলাদেশে অবস্থিত।
এত সাফল্যের পরও কৃষির জন্য সরকারগুলো যখন যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারে না, তখন তিনি ব্যথিত হন। বীজ, এদেশের একটি অমূল্য সম্পদ। এই বীজ নিয়ে আজ সারা পৃথিবী জুড়ে তুলকালাম অবস্থা। কে কোন বীজের প্যাটেন্ট নিজ দেশের নামে করাবে তা নিয়ে চলছে নানা ছলচাতুরি। বিদেশী গবেষকরা আমাদের দেশে এসে গবেষণার নাম করে অনেক দেশীয় উন্নত জাতের ফসলের জীন নিজেদের দেশে নিয়ে যাচ্ছে। তারপর সেগুলো নিজেদের নামে প্যাটেন্ট করছে। অথচ সরকারের এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেই। মাথাব্যথাও নেই। বদরুদ্দোজা অনেক পরিশ্রম করে দেশীয় বীজগুলো রক্ষার জন্য উদ্যোগ নেন। প্রকল্পের জন্য প্রস্তাব দেন সরকারকে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই প্রস্তাব আলোর মুখ দেখেনি। এর জন্য তিনি দুঃখ পান। ক্ষুব্ধ হন।
বিজ্ঞান এবং ব্যবস্থাপনায় অসামান্য সাফল্যের ফলশ্রুতিতে তিনি দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রভূত সম্মানে ভূষিত হন। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাঁকে কৃষি গবেষণা ও শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য তমঘা-ই-পাকিস্তান এবং তমঘা-ই-ইমতিয়াজ খেতাবে ভূষিত করে। ১৯৮২ সালে বিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের স্বকৃতীস্বরূপ বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী মাহবুবউল্লাহ কল্যাণ ট্রাস্ট তাঁকে বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করে। ১৯৮৩ সালে বিশ্ব উন্নয়ন সংসদ ভারত, ড. বদরুদ্দোজাকে ‘National Professor‘ সম্মান প্রদান করে। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে আজীবন জাতীয় এমরিটাস বৈজ্ঞানিকের সম্মান প্রদান করে। ১৯৯৯ সালে কৃষি বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনায় সাফল্যের স্বীকৃতিতে বিশ্বের কৃষি গবেষণা সংক্রান্ত সর্বোচ্চ সংস্থা Consultative Group on International Agricultural Research (CGIAR), World Bankতাঁর সম্মানে সম্মাননা প্রদান করে এবং আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসিতে এক সম্বর্ধনার আয়োজন করে। ২০০২ সালে ভারতের দেশবন্ধু সি.আর. দাস রিসার্চ কাউন্সিল তাঁকে গবেষণা কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ স্বর্ণপদক প্রদান করে। এছাড়াও তিনি আরো অনেক পুরস্কার অর্জন করেন। কৃষি গবেষণা, শিক্ষা এবং ব্যবস্থাপনার উপর কাজী বদরুদ্দোজার অনেক প্রবন্ধ দেশে-বিদেশে প্রকাশিত হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত জীবনী:
জন্ম:১৯২৭ সালের পহেলা জানুয়ারী কাজী এম বদরুদ্দোজা বগুড়া জেলায় নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন।
বাবা-মা: বাবা কাজী বদিউজ্জামান পেশায় ছিলেন আইনজীবি। মা জমিলা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। ৩ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে কাজী এম বদরুদ্দোজা সকলের বড়।
পড়াশুনা : ছোটবেলা থেকেই বদরুদ্দোজা ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। শৈশবেই পড়ালেখা শুরু হয়েছিল গাইবান্ধায়। তাঁর নিজের ভাষায়, ‘আমি যখন নবম শ্রেণীতে উঠি তখন আমার বাড়ীর লোকেরা আমাকে জোর করে গোবিন্দগঞ্জ স্কুলে নিয়ে গেলেন। গোবিন্দগঞ্জ স্কুলে কোনোদিন কোনো মুসলমান ছেলে-মেয়েরা ভাল রেজাল্ট করতে পারত না। সেই ঐতিহ্য ভাঙ্গার জন্যই আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমি তাদের আশাহত করিনি। নবম ও দশম শ্রেণীতে আমি ক্লাশে প্রথম হই।’
গোবিন্দগঞ্জ হাইস্কুল থেকে ১৯৪২ সালে ইংরেজীতে লেটারমার্কসহ মেট্রিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। ১৯৪৪ সালে রাজশাহী সরকারী কলেজ থেকে আই.এসসি. পাশ করেন। ১৯৪৫ সালে ভর্তি হলেন উপমহাদেশের প্রথম কৃষি কলেজ তেজগাঁওস্থ বেঙ্গল এগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট-এ। বদরুদ্দোজা ১৯৪৮ সালে কৃষি কলেজ থেকে বি.এজি. এবং ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এসসি. এগ্রি ডিগ্রি লাভ করেন।
ডিগ্রী কোর্স সম্পন্ন করার পরই বদরুদ্দোজা ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানে বিভাগীয় পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অনুমোদনে এগ্রিকালচার রিসার্চ ল্যাবরেটরীতে একজন রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে সঠিকভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন ও নেতৃত্বের গুণাবলীর জন্য তিনি ‘ফুলব্রাইট’ স্কলারশীপ পেয়ে উচ্চতর শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান । ১৯৫৬ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করে তিনি দেশে ফিরে এসে কৃষি গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্রপ (CROP) বোটানিতে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৫৭ সালে ড. বদরুদ্দোজা ইকনোমিক বোটানিষ্ট (ফাইবার) পদ লাভ করেন। সেই সময়ের কৃষকদের কাছে ফসল বলতে ছিল প্রধানত ধান ও পাট। স্বল্প পরিচিত ফসল গম ও ভূট্টা চাষ সম্পর্কে জানার জন্য তিনি সুইডেনের বিশ্বখ্যাত স্তালভ গবেষণা কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ লাভ করেন। এর পর পরই লুগন্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ.ইন. জেনেটিক্স উপাধি অর্জন করেন। ১৯৬১ সালে দেশে ফিরেন এবং নতুন উদ্যোমে কৃষি গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের পাকিস্তান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ কাউন্সিলের পরিচালক, নির্বাহী পরিচালক ও মহাপরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে তিনিই প্রথম বাংলাদেশে উচ্চফলনশীল গম প্রবর্তন করার উদ্যোগ নেন।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বিধ্বস্ত বাংলাদেশের কৃষি গবেষণাকে নতুন করে দাঁড় করানোর দায়িত্ব নেন ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা। তাঁর সুদক্ষ নেতৃত্বে গড়ে ওঠে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বারি)। ১৯৭৪-১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি বারি’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। এখানে দায়িত্ব পালনকালে ১৯৭৮ সালে ড. বদরুদ্দোজা বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব এডভানটেজ সায়েন্স-এর সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনিই কৃষি বিজ্ঞানে প্রথম স্নাতক ডিগ্রীধারী যিনি ‘বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর এডভানটেজ অব সায়েন্স-এর প্রেসিডেন্ট (১৯৭৬) নিযুক্ত হন।
ড. বদরুদ্দোজা ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে তিনি রিসার্চ এন্ড এডুকেশনের ডাইরেক্টর, বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনষ্টিটিউটের ডাইরেক্টর জেনারেল এবং মিল্কভিটার চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি দু’বছর মেয়াদে বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড অব ম্যানেজমেন্টের একজন ডাইরেক্টর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
দীর্ঘ কর্মজীবনে ড. কাজী বদরুদ্দোজা বেশ কিছু আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ও সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। ফিলিপাইনের আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট (ইরি)-এর মূল্যায়ন বোর্ডের সদস্য হিসেবে, লন্ডনের ট্রপিক্যাল প্রজেক্ট ইনষ্টিটিউটের উপদেষ্টা কমিটিতে, নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস অব ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (ইনজার)-এর বোর্ড অব ট্রাষ্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দেশের জন্য এনেছেন দুর্লভ খ্যাতি। এছাড়াও পাকিস্তান-আমেরিকা কৃষি গবেষণা মূল্যায়ন কমিটি, মেক্সিকোর আন্তর্জাতিক গম ও ভূট্টা গবেষণা ইনষ্টিটিউট, ইন্দোনেশিয়ার গভর্নিং বোর্ড অব সিজিপিআরটি সেন্টার, ভিয়েতনামের ভূট্টা গবেষণা প্রকল্পের মূল্যায়ন কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভিয়েতনামের প্রধান গবেষণা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভিয়েতনামের জেনেটিক্স ইনষ্টিটিউট প্রতিষ্ঠা (১৯৮৭) এবং ভিয়েতনামের কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কাউন্সিল পুন:গঠনে (১৯৮৫-৮৮) অবদান রাখেন।
বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী হিসেবে বাংলাদেশ ছাড়াও তিনি যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, মিশর, ইরাক, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা ও ভিয়েতনামে বিভিন্ন সময় কর্মরত ছিলেন। সরকারীভাবে চাকুরি থেকে অবসর নেয়ার পর নানাভাবে যুক্ত রয়েছেন কৃষির সঙ্গেই।
ছেলে-মেয়ে : কাজী বদরুদ্দোজা ২ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জনক। বড় ছেলে ড. কাজী মোর্তুজা কবির, ছোট ছেলে ড. কাজী সাজিউজ্জামান এবং মেয়ে ড: তাসনীম।
তথ্যসূত্র: কাজী বদরুদ্দোজার সরাসরি সাক্ষাৎকার নিয়ে জীবনীটি লেখা হয়েছে।
লেখক: মীর মোফাখখারুল আলম
পুনর্লিখন: চন্দন সাহা রায়
যেহেতু বশেমুরকৃবি এর নাম উল্লেখ করেছেন।তাহলে উনি যেই ইন্সটিটিউটে পড়েছেন তার বর্তমান নামটাও উল্লেখ করা দরকার ছিল।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়(শেকৃবি) এর নামটাও উল্লেখ করেন।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি বশেমুরকৃবি বলতে কি বেঙ্গল এগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট বুঝিয়েছেন? জানানোর জন্য অনুরোধ করছি।