GUNIJAN
  • মূলপাতা
  • ক্ষেত্র
    • সাহিত্য
    • আদিবাসী অধিকার আন্দোলন
    • ক্রীড়া
    • নারী অধিকার আন্দোলন
    • মুক্তিসংগ্রাম
    • শিল্পকলা
    • আলোকচিত্র
    • গণমাধ্যম
    • পারফর্মিং আর্ট
    • সংগীত
    • সংগঠক
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • ইতিহাস গবেষণা
    • চিকিৎসা বিজ্ঞান
    • প্রকৃতি ও পরিবেশ
    • লোকসংস্কৃতি
    • সমাজবিজ্ঞান
    • আইন
    • দর্শন
    • মানবাধিকার
    • শিক্ষা
    • স্থাপত্য
    • সাহিত্য
    • শিল্পকলা
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • আইন
    • আদিবাসী অধিকার আন্দোলন
    • আলোকচিত্র
    • ইতিহাস গবেষণা
    • ক্রীড়া
    • গণমাধ্যম
    • চিকিৎসা বিজ্ঞান
    • দর্শন
    • নারী অধিকার আন্দোলন
    • পারফর্মিং আর্ট
    • প্রকৃতি ও পরিবেশ
    • মানবাধিকার
    • মুক্তিসংগ্রাম
    • লোকসংস্কৃতি
    • শিক্ষা
    • সংগঠক
    • সংগীত
    • সমাজবিজ্ঞান
    • স্থাপত্য
  • কর্মসূচি
  • সহযোগিতা
  • মনোনয়ন
  • কার্যক্রম
  • মূলপাতা
  • ক্ষেত্র
    • সাহিত্য
    • আদিবাসী অধিকার আন্দোলন
    • ক্রীড়া
    • নারী অধিকার আন্দোলন
    • মুক্তিসংগ্রাম
    • শিল্পকলা
    • আলোকচিত্র
    • গণমাধ্যম
    • পারফর্মিং আর্ট
    • সংগীত
    • সংগঠক
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • ইতিহাস গবেষণা
    • চিকিৎসা বিজ্ঞান
    • প্রকৃতি ও পরিবেশ
    • লোকসংস্কৃতি
    • সমাজবিজ্ঞান
    • আইন
    • দর্শন
    • মানবাধিকার
    • শিক্ষা
    • স্থাপত্য
    • সাহিত্য
    • শিল্পকলা
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • আইন
    • আদিবাসী অধিকার আন্দোলন
    • আলোকচিত্র
    • ইতিহাস গবেষণা
    • ক্রীড়া
    • গণমাধ্যম
    • চিকিৎসা বিজ্ঞান
    • দর্শন
    • নারী অধিকার আন্দোলন
    • পারফর্মিং আর্ট
    • প্রকৃতি ও পরিবেশ
    • মানবাধিকার
    • মুক্তিসংগ্রাম
    • লোকসংস্কৃতি
    • শিক্ষা
    • সংগঠক
    • সংগীত
    • সমাজবিজ্ঞান
    • স্থাপত্য
  • কর্মসূচি
  • সহযোগিতা
  • মনোনয়ন
  • কার্যক্রম
No Result
View All Result
GUNIJAN
No Result
View All Result

ইলা মিত্র

অবদানের ক্ষেত্র: ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন
ইলা মিত্র

ইলা মিত্র

আলোকচিত্র / অডিও / ভিডিও / ফাইল

১৯৫০ সালের ৭ জানুয়ারি সাঁওতাল বেশ ধারণ করে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। ভারত সীমানা পার হওয়ার প্রস্তুতিকালে তিনি রোহনপুর রেলওয়ে স্টেশনে ধরা পড়ে যান৷ তাঁকে ধরে আনা হয় নাচোল স্টেশনে। পুলিশ শুরু করে অমানুষিক নির্যাতন। তাঁকে উপর্যুপরি নির্যাতন চালানো হচ্ছিলো। কারণ যেভাবেই হোক স্বীকার করাতে হবে পুলিশ কর্মকর্তা ও কনস্টেবল হত্যার পিছনে তাঁর ইন্ধন ও পরিকল্পনা ছিল। নারী হিসাবে তাঁকে সামান্য সম্মান দেখানো হয়নি বরং একজন নারী, তার ওপর তিনি হিন্দু-কমিউনিস্ট নারী, এজন্য অত্যাচারের মাত্রা ছিল আরো বেশি। টানা চার দিন প্রচন্ড অত্যাচারের পর নাচোল স্টেশন থেকে তাঁকে নবাবগঞ্জ পুলিশ স্টেশনে আনা হয়। সে সময় তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্ত ঝরছিল, গায়ে ছিল অসহনীয় জ্বর। তবুও তাঁর উপর নির্যাতন থেমে থাকেনি। তাঁর ওপর যেসব অত্যাচার চালানো হয় তার মধ্যে ছিল- বাঁশকল, শরীরের নাজুক অংশে বুটের আঘাত, অনাহারে রাখা, পায়ের গোড়ালি দিয়ে লোহার পেরেক ঢুকিয়ে দেওয়া ইত্যাদি। কিন্তু শত অত্যাচারের পরও তাঁর স্বীকারোক্তি আদায় করতে পারেনি শোষক শ্রেণী। এই মহিয়সী নারী শোষক শ্রেণীর শত অত্যাচারের মুখেও থেকেছেন অনড়।

তিনি ইলা মিত্র। তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী, বাংলার কৃষকের রাণীমা। বাংলার শোষিত ও বঞ্চিত কৃষকের অধিকার আদায়ে যিনি এগিয়ে এসেছিলেন। বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি স্বেচ্ছায় জীবনের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়েছেন। ভোগ করেছেন অমানুষিক নির্যাতন। কিন্তু থেমে যায়নি তাঁর আদর্শের লড়াই। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য লড়ে গেছেন এই সংগ্রামী, মহিয়সী নারী।

এই সংগ্রামী নারী ১৯২৫ সালের ১৮ অক্টোবর কোলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয় ইলা সেন। তাঁর বাবা নগেন্দ্রনাথ সেন ছিলেন বৃটিশ সরকারের অধীন বাংলার একাউন্টেন্ট জেনারেল। তাঁদের আদি নিবাস ছিল তত্‍কালীন যশোরের ঝিনাইদহের বাগুটিয়া গ্রামে। বাবার চাকুরির সুবাদে তাঁরা কলকাতায় থাকতেন এ শহরেই তিনি বেড়ে ওঠেন, লেখাপড়া করেন কলকাতার বেথুন স্কুল ও কলেজে। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন৷ কৈশোরে তিনি খেলাধুলায় তুখোর ছিলেন। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন রাজ্য জুনিয়র এ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়ন। সাঁতার, বাস্কেটবল ও ব্যাডমিন্টন খেলায়ও তিনি ছিলেন পারদর্শী। তিনিই প্রথম বাঙালি মেয়ে যিনি ১৯৪০ সালে জাপানে অনুষ্ঠিতব্য অলিম্পিকের জন্য নির্বাচিত হন। যুদ্ধের জন্য অলিম্পিক বাতিল হয়ে যাওয়ায় তার অংশগ্রহণ করা হয়নি। খেলাধুলা ছাড়াও গান, অভিনয়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী।

ইলা সেন যখন বেথুন কলেজে বাংলা সাহিত্যে বি.এ. সম্মানের ছাত্রী তখন থেকেই রাজনীতির সাথে তাঁর পরিচয় হয়। নারী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাঁর রাজনীতিতে প্রবেশ। সময়টা ছিল ১৯৪৩ সাল, ইলা সেন কলকাতা মহিলা সমিতির সদস্য হলেন৷ রাওবিল বা হিন্দু কোড বিল এর বিরুদ্ধে সে বছরই মহিলা সমিতি আন্দোলন শুরু করে। সমিতির একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে তিনি এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। এ সময় তিনি সনাতনপন্থীদের যুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অনেক প্রচার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। নারী আন্দোলনের এই কাজ করতে করতে তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য পদ লাভ করেন।

১৯৪৫ সালে ইলা সেনের বিয়ে হয় দেশকর্মী কমিউনিস্ট রমেন্দ্র মিত্রের সাথে। রমেন্দ্র মিত্র মালদহের নবাবগঞ্জ থানার রামচন্দ্রপুর হাটের জমিদার মহিমচন্দ্র ও বিশ্বমায়া মিত্রের ছোট ছেলে। বিয়ের পর বেথুনের তুখোর ছাত্রী ইলা সেন হলেন জমিদার পুত্রবধূ ইলা মিত্র। কোলকাতা ছেড়ে চলে এলেন শ্বশুরবাড়ি রামচন্দ্রপুর হাটে। হিন্দু রক্ষণশীল জমিদার পরিবারের নিয়মানুসারে অন্দরমহলেই থাকতেন ইলা মিত্র। তখনও তিনি মা হননি তাই হাতে অফুরন্ত অবসর। এই বন্দী জীবনে মুক্তির স্বাদ নিয়ে এলো গ্রামবাসীর একটি প্রস্তাব। রমেন্দ্র মিত্রের বন্ধু আলতাফ মিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় বাড়ির কাছেই কৃষ্ণগোবিন্দপুর হাটে মেয়েদের জন্য একটি স্কুল খোলা হলো। গ্রামের সবাই দাবি জানালেন তাঁদের নিরক্ষর মেয়েদের লেখাপড়া শেখাবার দায়িত্ব নিতে হবে বধূমাতা ইলা মিত্রকে। বাড়ি থেকে অনুমতিও মিললো কিন্তু বাড়ির চারশ গজ দূরের স্কুলে যেতে হয় গরুর গাড়ি চরে। মাত্র তিনজন ছাত্রী নিয়ে স্কুলটি শুরু হলেও ইলা মিত্রের আন্তরিক পরিচালনায় তিনমাসের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০-এ। আর এর মধ্যে তিনি হেঁটে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি লাভ করতেও সক্ষম হন। সংগ্রামী নেত্রী এভাবেই অন্দর মহল থেকে বের হয়ে এসে আবার নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন বৃহত্তর সমাজ সেবার কাজে।

এ সময়ে তিনি স্বামী রমেন্দ্র মিত্রের কাছে জমিদার ও জোতদারের হাতে বাংলার চাষীদের নিদারুণ বঞ্চনা শোষণের কাহিনী শোনেন। আরো শোনেন এই শোষণের বিরুদ্ধে তাঁদের আন্দোলনের প্রচেষ্টার কথা। কমিউনিস্ট রামেন্দ্র মিত্র এর আগেই জমিদারি প্রথার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নিজের পারিবারিক ঐতিহ্য ও মোহ ত্যাগ করে কৃষকের পাশে এসে দাঁড়িছেন৷ রমেন্দ্র মিত্র ইলা মিত্রকে তাঁদের কাজে যোগ দিতে উত্‍সাহিত করেন। ছাত্রী জীবনেই ইলা মিত্র কমিউনিস্ট আদর্শের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাই স্বামীর আদর্শ ও পথ চলার সাথে সহজেই নিজেকে যুক্ত করতে পেরেছিলেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত রাজশাহীর নবাবগঞ্জ অঞ্চলে তেভাগা আন্দোলনে নেতৃত্ব দান করেন ইলা মিত্র।

‘তেভাগা আন্দোলনের’ ইতিহাস জানতে হলে সে সময়ের ভূমি ব্যবস্থা বিষয়ে জানা প্রয়োজন। বাংলার গ্রামীণ সমাজে বৃটিশ শাসনের পূর্ব পর্যন্ত ভূমির মালিক ছিলেন চাষিরা। মোগল আমল পর্যন্ত তারা এক তৃতীয়াংশ বা কখনো কখনো তার চেয়েও কম ফসল খাজনা হিসাবে জমিদার বা স্থানীয় শাসনকর্তার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে প্রদান করতেন। বৃটিশ শাসনামলে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা প্রচলনের ফলে চাষিদের জমির মালিকানা চলে যায় জমিদারদের হাতে। জমিদাররা জমির পরিমাণ ও উর্বরতা অনুযায়ী বৃটিশদের খাজনা দিত। জমিদারদের সাথে ফসল উত্‍পাদনের কোনো সম্পর্ক ছিল না। এ সময় জমিদার ও কৃষকদের মাঝখানে জোতদার নামে মধ্যস্বত্বভোগী এক শ্রেণীর উদ্ভব ঘটে। এরা পত্তনি প্রথার মাধ্যমে জমিদারদের কাছ থেকে জমি পত্তন বা ইজারা নিত৷ এই জোতদার শ্রেণী কৃষকের জমি চাষ তদারকি ও খাজনা আদায়ের কাজ করতো। ফসল উত্‍পাদনের সম্পূর্ণ খরচ কৃষকেরা বহন করলেও যেহেতু তারা জমির মালিক নন সে অপরাধে উত্‍পাদিত ফসলের অর্ধেক তুলে দিতে হতো জোতদারদের হাতে। এ ব্যবস্থাকে বলা হতো ‘আধিয়ারী’। জোতদারি ও জমিদারি প্রথা ক্ষুদ্র কৃষকদের শোষণের সুযোগ করে দেয়। খাজনা আদায়ের জন্য জোতদাররা এদেরকে দাসের মতো ব্যবহার করে।

উত্‍পন্ন ফসলের পরিবর্তে একসময় কৃষককে বাধ্য করা হয় অর্থ দিয়ে খাজনা পরিশোধ করতে। ফলে কৃষকেরা গ্রামীণ মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হন। সর্বস্বান্ত হয়ে এক সময়ের সমৃদ্ধ বাংলার কৃষক পরিণত হন আধিয়ার আর ক্ষেত মজুরে। জমিদার-জোতদারদের এই শোষণ কৃষকের মনে বিক্ষোভের জন্ম দেয়। এই বিক্ষোভকে সংগঠিত করে ১৯৩৬ সালে গঠিত হয় ‘সর্বভারতীয় কৃষক সমিতি’। ১৯৪০ সালে ফজলুল হক মন্ত্রিসভার উদ্যোগে বাংলার ভূমি ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব দেয় ‘ফাউন্ড কমিশন’। এই কমিশনের সুপারিশ ছিল জমিদারি প্রথার উচ্ছেদ করে চাষিদের সরাসরি সরকারের প্রজা করা এবং তাদের উত্‍পাদিত ফসলের তিনভাগের দুইভাগের মালিকানা প্রদান করা৷ এই সুপারিশ বাস্তবায়নের আন্দোলনের জন্য কৃষক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। এছাড়া জনসাধারণের কাছ থেকে হাটের ‘তোলা’ ও ‘লেখাই’সহ নানা কর আদায় করা হতো। এসব বন্ধের জন্য আন্দোলন জোরদার হয়। চল্লিশের দশকে এসব আন্দোলনেও ইলা মিত্র নেতৃত্ব দেন।

১৯৪২ সালে (বাংলা ১৩৭৬ সনে ) সমগ্র বাংলায় দেখা দেয় দুর্ভিক্ষ। এ দুর্ভিক্ষের সময় কৃষকের ওপর শোষণের মাত্রা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। এসময়কার অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে মরিয়া হয়ে ওঠে শোষিত কৃষকেরা। তিনভাগের দুইভাগ ফসল কৃষকের, এই দাবি নিয়ে বেগবান হয় তেভাগা আন্দোলন। ১৯৪৬-৪৭ সালে দিনাজপুরে কমরেড হাজী দানেশের প্রচেষ্টায় সূচিত হয় এক যুগান্তকারী তেভাগা আন্দোলন। কমিউনিস্ট পার্টি ও কৃষক সমিতি প্রান্তিক চাষিদের সংগঠিত করে আন্দোলনকে জোরদার করতে থাকে। পার্টি থেকে রমেন্দ্র মিত্রকে গ্রামের কৃষক সমাজের মধ্যে কাজ করার দায়িত্ব দিয়ে কোলকাতা থেকে নিজ গ্রাম রামচন্দ্রপুর হাটে পাঠালে স্বামীর সাথে ইলা মিত্র সরাসরি মাঠ পর্যায়ে কৃষক সংগঠনের সাথে যুক্ত হন।

১৯৪৬ সালে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা শুরু হলে কমিউনিস্ট পার্টি দাঙ্গা বিধ্বস্ত এলাকায় সেবা ও পুনর্বাসনের কাজ করতে এগিয়ে আসে। এসময় ইলা মিত্র নোয়াখালীর দাঙ্গা বিধ্বস্ত গ্রাম হাসনাবাদে পুনর্বাসনের কাজে চলে যান। তখন নোয়াখালীতে মহাত্মা গান্ধী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করছিলেন। ইলা মিত্রের এই সাহসী পদক্ষেপ সে সময় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে৷

১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর মিত্র পরিবারের জমিদারি অঞ্চল রামচন্দ্রপুর হাট পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহী জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়। পূর্ব পাকিস্তানের বেশিরভাগ হিন্দু পরিবার সংখ্যালঘু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভারতে চলে যায়। কিন্তু ইলা মিত্রের শাশুড়ি এখানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ফলে ইলা মিত্র ও রমেন্দ্র মিত্র পূর্ব-পাকিস্তানেই রয়ে গেলেন। পাকিস্তান হবার পরও তেভাগা আন্দোলন অব্যাহত থাকে। পূর্ব-পাকিস্তানের অনেক স্থানে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে সশস্ত্র আন্দোলন হয়। মুসলিম লীগ সরকার পূর্ব পাকিস্তানে ক্ষমতাসীন হলে তারা কঠোর হাতে এই আন্দোলন দমন করে। কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। পার্টির শীর্ষ স্থানীয় হিন্দু নেতাদের প্রায় সকলকেই দেশ ছাড়া করা হয়। সরকারের এই দমননীতির ফলে কমিউনিস্ট ও কৃষক আন্দোলনের নেতারা আত্মগোপন করে কাজ করতে থাকেন। ইলা মিত্র ও রমেন্দ্র মিত্রও নাচোলের চণ্ডীপুর গ্রামে আত্মগোপন করেন।

নাচোলের চণ্ডীপুর গ্রামে ছিল সাঁওতাল নেতা ও প্রথম সাঁওতাল কমিউনিস্ট মাতলা মাঝির বাড়ি। সাঁওতালদের মধ্যে তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল। নাচোল এলাকায় মিত্র পরিবারের অনেক জমিজমা ছিল। রমেন্দ্র মিত্রের ঠাকুর্দার আমলে এই বরেন্দ্রভূমি চাষাবাদের জন্য সাঁওতালদের এনে বসতি স্থাপন করা হয়। ইলা মিত্র ও রমেন্দ্র মিত্র এই মাতলা মাঝির গোপন আশ্রয়ে থেকে চণ্ডীপুর গ্রামে এক শক্তিশালী কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলেন। মাতলা মাঝির বাড়িটি ছিল এ আন্দোলনের প্রধান কার্যালয়।

মুসলীম লীগ সরকারের দমননীতি ও শহরের মধ্যবিত্ত নেতাদের আপোষমুখিতার কারণে যে আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়েছিল, কমরেড ইলা মিত্র ও রমেন্দ্র মিত্রের পৃথক নেতৃত্বে নাচোল ও তার আশেপাশের অঞ্চলে তার জের ধরে শুরু হলো এক নতুন আন্দোলনের। ১৯৪৮ সালে ইলা মিত্র ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। সন্তান প্রসবের জন্য তিনি গোপনে কলকাতায় যান। পুত্র সন্তান জন্মের মাসখানেকের মধ্যেই ছেলেকে শাশুড়ির কাছে রামচন্দ্রপুর হাটে রেখে তিনি আবার ফিরে আসেন নাচোলে।

১৯৪৯ সালে তাঁদের নেতৃত্বে হাজার হাজার ভূমিহীন কৃষক সংগঠিত হয়। সকলে মিলে জোতদার ও মহাজনদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে জোতদার, মহাজনদের দল। এ বছর কৃষকের ধান জোতদারদের না দিয়ে সরাসরি কৃষক সমিতির উঠোনে তোলা হয়। ফলে কোথাও কোথাও সংঘর্ষ দেখা দেয়। নাচোলে সাঁওতাল ও ভূমিহীনদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে এক শক্তিশালী তীরন্দাজ ও লাঠিয়াল বাহিনী। এই বাহিনীর প্রধান ছিলেন মাতলা মাঝি। এভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ইলা মিত্র ও রমেন্দ্র মিত্র নাচোল অঞ্চলে তেভাগা আন্দোলনের বাস্তব রূপ দেয়ার চেষ্টা করেন।

এভাবেই ১৯৫০ সালে জোতদার ও ভূমি মালিকেরা নাচোলের ভিতর এবং আশেপাশে তেভাগা বাস্তবে কার্যকর করতে বাধ্য হলো। মালিকপক্ষ বাধ্য হয়ে তখনকার মতো এক তৃতীয়াংশ ফসল গ্রহণ করলেও প্রশাসনের কাছে নালিশ করা থেকে থেমে থাকেনি। ভূমি মালিকরা এই তেভাগা প্রথাকে অকার্যকর করার চেষ্টা চালাতে লাগলো। ভূমি মালিক, জোতদার ও জমিদারদের সম্মিলিত আবেদনে সাড়া দিয়ে সরকার এই আন্দোলনকে লুঠতরাজ, সন্ত্রাস এবং বিশৃঙ্খলা তৈরির অপবাদ দিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। সরকারের পুলিশ বাহিনী গ্রামে গ্রামে অভিযান চালিয়ে আন্দোলন দমনের চেষ্টা করে। নিরীহ অসহায় কৃষকের ওপর অত্যাচার চালানো শুরু হয়। হাতের নাগালে যাকে পায় তাকেই জেলে বন্দী করে রাখে। আত্মগোপনকারী নেতারা তখন চরম ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাতে থাকেন। আন্দোলন যখন চরমে পৌঁছে গেছে তখন সরকার মহল থেকে এ ধরনের আচরণে নেতারা বুঝতে পারছিলেন না কি করণীয়।

১৯৫০ সালের ৫ জানুয়ারি পুলিশ বাহিনীর একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে একদল কনস্টেবল নাচোলের চণ্ডীপুর গ্রামে আসে। গ্রামবাসী সংগঠিত হয়ে পুলিশ বাহিনীকে পাল্টা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে উম্মত্ত গ্রামবাসী ওই পুলিশ কর্মকর্তা ও পাঁচ জন পুলিশ কনস্টেবলকে হত্যা করে। এই ঘটনার পর নাচোলের চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার দু’দিন পর ৭ জানুয়ারি শুরু হলো পুলিশের প্রতিশোধ। দুই হাজার সেনা কাছাকাছি রেলওয়ে স্টেশনের কাছে উপস্থিত হয়ে অভিযান শুরু করে। বারোটি গ্রাম ঘেরাও করে তছনছ করে, ঘরবাড়ি ধ্বংস করে, চারিদিকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে অনেক গ্রামবাসীকে। নারীদের ওপর যৌন অত্যাচার এমনকি শিশুদের ওপরও নির্যাতন করে।

অস্ত্রে সজ্জিত সেনাবাহিনীর সাথে তীর ধনুকে সজ্জিত সাঁওতাল, হিন্দু ও মুসলিম কৃষকদের বেশিক্ষণ যুদ্ধ চালানো সম্ভব ছিল না। কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রামবাসী পিছপা হতে শুরু করেন। যে যেদিক পারলেন গা ঢাকা দিলেন। গ্রামবাসী সরে যাওয়ার পর আন্ডার গ্রাউন্ডের নেতাদের অবস্থান বের করা সহজ হয়ে যায়। রমেন্দ্র মিত্র ও মাতলা মাঝি পালিয়ে ভারতে চলে যান।

এরপর ৭ জানুয়ারী ইলা মিত্র গ্রেফতার হলেন। তিনি কিভাবে গ্রেফতার হলেন এবং গ্রেফতারের পর তাঁর উপর যে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল তার বর্ণনা শুরুতেই দেওয়া হয়েছে।

গ্রেফতার করার পর ইলা মিত্রকে নিয়ে শুরু হয় আইনের খেলা। সরকারের পক্ষ থেকে ইলা মিত্র, রমেন্দ্র মিত্র ও মাতলা মাঝিকে প্রধান আসামী করে এবং শতাধিক সাঁওতাল কৃষকের বিরুদ্ধে পুলিশ হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি রাজশাহী কোর্টে ওঠে৷ এটাই কুখ্যাত ‘নাচোল হত্যা মামলা’।

নাচোল হত্যা মামলার কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী ও আলামত না পাওয়া সত্ত্বেও রাজশাহীর তত্‍কালীন দায়রা জজ প্রধান তিন আসামীকে দোষী প্রমাণ করে যাবজ্জীবন ও ১০৭ জন কৃষকের হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতার দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করে রায় দেন। মামলার কোথাও একে রাজনৈতিক মামলা হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। প্রধান তিন আসামীর বাকি দুজন ছিলেন পলাতক। ইলা মিত্রকে রাজশাহী জেলে প্রেরণ করা হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করা হলে শাস্তির মেয়াদ ১০ বছর কমিয়ে দেয়া হয়।

পুলিশের নির্যাতনে তখন ইলা মিত্রের শারীরিক অবস্থা শঙ্কটাপন্ন। ১৯৫৩ সালে তাঁকে ঢাকার সেন্ট্রাল জেলে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৫২ সালের পর ঢাকা ছিল উত্তপ্ত। কমরেড ইলা মিত্র ও তাঁর সহযোদ্ধারা তখন ছাত্র জনতার চোখে অত্যন্ত সম্মানের পাত্র। সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে তাঁকে ছেড়ে দেয়ার দাবি ওঠে। ১৯৫৪ সালে কমরেড ইলা মিত্রকে চিকিত্‍সার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে আনা হয়। তত্‍কালীন পূর্ব-পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ পুলিশী নির্যাতনের ভয়াবহতা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেন৷ ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা ফজলুল হকের নির্দেশে ইলা মিত্রের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। এই টিমের সুপারিশে বলা হয়, ‘ইলা মিত্র নানা ধরনের দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। এসবের চিকিত্‍সা পূর্ব-বাংলায় সম্ভব নয়।’ মুখ্যমন্ত্রী এই সুপারিশের ভিত্তিতে নির্দেশ দেন, ‘নাচোল হত্যা মামলার অন্যতম সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইলা মিত্রকে বিদেশে চিকিত্‍সার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেয়া হলো।’

ইলা মিত্রকে ভারতে প্রেরণের জন্য অর্থ এবং পাসপোর্ট সংগ্রহে পূর্ব-বাংলার বামপন্থী নেতারা এগিয়ে এসেছিলেন। পাসপোর্ট তৈরিতে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সাহায্য করেন এমনকি ভারত যাওয়ার প্রাক্কালে মুখ্যমন্ত্রী ফজলুল হক ইলা মিত্রর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত্‍ করেন। কলকাতা মেডিকেল কলেজে দীর্ঘ আটমাস চিকিত্‍সাধীন ছিলেন ইলা মিত্র। তিনি একমাত্র পুত্র রণেন মিত্র মোহনের মুখ দেখেন দীর্ঘ ছয় বছর পর। শোষিত জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মাতৃত্বকে ত্যাগের এই দৃষ্টান্ত সত্যিই বিরল।

এরপর শুরু হয় ইলা মিত্রর জীবনের নতুন অধ্যায়। সুস্থ হয়ে তিনি কলকাতা সিটি কলেজে বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি শিক্ষকতা থেকে অবসর নেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি ইলা মিত্র পশ্চিম বঙ্গের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগঠনের জন্য কাজ করেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ কমিউনিস্ট পার্টির জেলা ও প্রাদেশিক কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৬২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি চারবার মানিকতলা নির্বাচনী এলাকা থেকে বিধান সভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬৭ ও ১৯৭২ সালে বিধান সভায় কমিউনিস্ট ডেপুটি লিডার ছিলেন। ১৯৬২ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে তিনি পাঁচবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য নির্বাচিত হন। পশ্চিমবঙ্গেও বিভিন্ন আন্দোলনের জন্য তিনি ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৭১ ও ১৯৭২ সালে কারাবরণ করেছেন। ইলা মিত্র ভারতের মহিলা ফেডারেশনের জাতীয় পরিষদ সদস্য, পশ্চিমবঙ্গ মহিলা সমিতির সহ-সভানেত্রী এবং ভারত ও সোভিয়েত সাংস্কৃতিক সমিতির সহ-সভানেত্রী ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের জন্য তাঁর ছিল বিশেষ আন্তরিকতা। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য অক্লান্তভাবে কাজ করে গেছেন।

ইলা মিত্র বেশ কয়েকটি রুশ গ্রন্থ অনুবাদ করেন। এগুলো হচ্ছে ‘জেলখানার চিঠি’, ‘হিরোশিমার মেয়ে’, ‘মনে প্রাণে’-২ খণ্ড, ‘লেনিনের জীবনী’ ও ‘রাশিয়ার ছোট গল্প’। হিরোশিমার মেয়ে বইটির জন্য তিনি ‘সোভিয়েত ল্যান্ড নেহেরু’ পুরস্কার লাভ করেন। এ্যাথলেটিক অবদানের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ভারত সরকার তাঁকে স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে স্বতন্ত্র সৈনিক সম্মানে তাম্রপত্র পদকে ভূষিত করে সম্মানিত করে।

ইলা মিত্র কলকাতায় স্বামী রমেন্দ্র মিত্র, একমাত্র পুত্র রণেন মিত্র, পুত্রবধু ও নাতি ঋতেনকে নিয়ে জীবনের শেষ সময় কাটিয়েছেন। উপমহাদেশের নারী জাগরণ ও কৃষক আন্দোলনের এই কিংবদন্তি নেত্রী ৭৭ বছর বয়সে ২০০২ সালের ১৩ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।

সংক্ষিপ্ত জীবনী:
জন্ম: ইলামিত্র ১৯২৫ সালের ১৮ অক্টোবর কোলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয় ইলা সেন। তাঁদের আদি নিবাস ছিল তত্‍কালীন যশোরের ঝিনাইদহের বাগুটিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা নগেন্দ্রনাথ সেন।

পড়াশুনা: বাবার চাকুরির সুবাদে তাঁরা কলকাতায় থাকতেন। এ শহরেই তিনি বেড়ে ওঠেন, লেখাপড়া করেন কলকাতার বেথুন স্কুল ও কলেজে। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ে এম.এ. ডিগ্রি লাভ করেন।

বিয়ে: ১৯৪৫ সালে ইলা সেনের বিয়ে হয় দেশকর্মী কমিউনিস্ট রমেন্দ্র মিত্রের সাথে। রমেন্দ্র মিত্র মালদহের নবাবগঞ্জ থানার রামচন্দ্রপুর হাটের জমিদার মহিমচন্দ্র ও বিশ্বমায়া মিত্রের ছোট ছেলে। তাঁর একমাত্র পুত্রের নাম রণেন মিত্র।

কর্মজীবন: বিয়ের পর বেথুনের তুখোর ছাত্রী ইলা সেন হলেন জমিদার পুত্রবধু ইলা মিত্র। কোলকাতা ছেড়ে চলে এলেন শ্বশুরবাড়ি রামচন্দ্রপুর হাটে। হিন্দু রক্ষণশীল জমিদার পরিবারের নিয়মানুসারে অন্দরমহলেই থাকতেন ইলা মিত্র। তখনও তিনি মা হননি তাই হাতে অফুরন্ত অবসর। এই বন্দী জীবনে মুক্তির স্বাদ নিয়ে এলো গ্রামবাসীর একটি প্রস্তাব। রমেন্দ্র মিত্রের বন্ধু আলতাফ মিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় বাড়ির কাছেই কৃষ্ণগোবিন্দপুর হাটে মেয়েদের জন্য একটি স্কুল খোলা হলো। গ্রামের সবাই দাবি জানালেন তাঁদের নিরক্ষর মেয়েদের লেখাপড়া শেখাবার দায়িত্ব নিতে হবে বধূমাতা ইলা মিত্রকে। বাড়ি থেকে অনুমতিও মিললো। কিন্তু বাড়ির চার’শ গজ দূরের স্কুলে যেতে হয় গরুর গাড়ি চরে। মাত্র তিনজন ছাত্রী নিয়ে স্কুলটি শুরু হলেও ইলা মিত্রের আন্তরিক পরিচালনায় তিনমাসের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০-এ। বাংলার শোষিত ও বঞ্চিত কৃষকের অধিকার আদায়ে তিনি সংগ্রাম করেছেন এবং জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য লড়ে গেছেন এই সংগ্রামী নারী।

মৃত্যু: এই কিংবদন্তি নেত্রী ৭৭ বছর বয়সে ২০০২ সালের ১৩ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্য ও ছবিসূত্র:
১. শত বছরের বাংলাদেশের নারী (সম্পাঃ) নারী গ্রন্থ প্রবর্তনা, ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৩।
২. পারভেজ, আলতাফ৷ বাংলাদেশে নারীর ভূ-সম্পদের লড়াই। নাগরিক উদ্যোগ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০০৩৷
৩. কাস্টার্স, পিটার (কৃষ্ণা নিয়োগী অনুদিত)। তেভাগা অভ্যুত্থানে নারী৷ ঢাকা, মে ১৯৯২।
৪. আজকের কাগজ, ১৭ অক্টোবর ২০০৪।

মূল লেখক : খাদিজা খানম
পুনর্লিখন : মৌরী তানিয়া

ShareTweetShareScanSend

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

খুঁজুন

No Result
View All Result
এ পর্যন্ত ওয়েবসাইট ভিজিট করেছেন
Web Counter

সম্পৃক্ত হোন

  • সহযোগিতা করুন
  • স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিন
  • মনোনয়ন করুন

আমাদের সম্পর্কে

  • ট্রাস্টি বোর্ড
  • আপনার মতামত

যোগাযোগ

  •   info@gunijan.org.bd
  •   +৮৮০১৮১৭০৪৮৩১৮
  •   ঢাকা, বাংলাদেশ

© - All rights of Photographs, Audio & video clips on this site are reserved by Gunijan.org.bd under  CC BY-NC licence.

No Result
View All Result
  • #8898 (শিরোনামহীন)
  • অজয় রায়
  • অজিত গুহ
  • অনিল মুখার্জি
  • অনুপম সেন
  • অমলেন্দু বিশ্বাস
  • অরবিন্দ ঘোষ
  • অরিণা বেগম
  • অরিণা বেগম
  • অরিণা বেগম
  • অশ্বিনীকুমার দত্ত
  • আ ন ম গোলাম মোস্তফা
  • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
  • আজহারুল হক
  • আজিজুর রহমান মল্লিক
  • আঞ্জেলা গমেজ
  • আতাউস সামাদ
  • আতিউর রহমান
  • আনিসুজ্জামান
  • আনোয়ার পাশা
  • আনোয়ার হোসেন
  • আনোয়ার হোসেন
  • আপনার মতামত
  • আবদুর রাজ্জাক
  • আবদুল আলীম
  • আবদুল আহাদ
  • আবদুল ওয়াহাব তালুকদার
  • আবদুল গাফফার চৌধুরী
  • আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
  • আবদুল্লাহ আল মামুন
  • আবদুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দিন
  • আবিরন
  • আবু ইসহাক
  • আবু ওসমান চৌধুরী
  • আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
  • আবু তাহের
  • আবু হেনা মোস্তফা কামাল
  • আবুল ফজল
  • আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান
  • আবুল হাসান
  • আবুল হোসেন
  • আব্দুল জব্বার
  • আব্দুল মতিন
  • আব্বাসউদ্দীন আহমদ
  • আমিনুল ইসলাম
  • আরজ আলী মাতুব্বর
  • আরমা দত্ত
  • আল মাহমুদ
  • আলতাফ মাহমুদ
  • আলম খান
  • আলমগীর কবির
  • আলী আহাম্মদ খান আইয়োব
  • আলোকচিত্রী শহিদুল আলম
  • আসিয়া বেগম
  • আহসান হাবীব
  • ইদ্রিছ মিঞা
  • ইমদাদ হোসেন
  • ইলা মজুমদার
  • ইলা মিত্র
  • উল্লাসকর দত্ত
  • এ এফ এম আবদুল আলীম চৌধুরী
  • এ কে খন্দকার
  • এ. এন. এম. মুনীরউজ্জামান
  • এ. এম. হারুন অর রশীদ
  • এ.এন.এম. নূরুজ্জামান
  • এ.টি.এম. হায়দার
  • এবিএম মূসা
  • এম আর খান
  • এম এ জলিল
  • এম হামিদুল্লাহ্ খান
  • এম. এ. মঞ্জুর
  • এম. এ. রশীদ
  • এম. এন. রায়
  • এস এম সুলতান
  • ওবায়েদ উল হক
  • কবরী
  • কবীর চৌধুরী
  • কমলা বেগম (কিশোরগঞ্জ)
  • কমলা বেগম (সিরাজগঞ্জ)
  • করিমন বেগম
  • করেপোরাল আবুল বাশার মো. আবদুস সামাদ
  • কর্মসূচি
  • কলিম শরাফী
  • কল্পনা দত্ত
  • কাইয়ুম চৌধুরী
  • কাঁকন বিবি
  • কাজী আবদুল আলীম
  • কাজী আবুল কাসেম
  • কাজী এম বদরুদ্দোজা
  • কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ
  • কাজী নূর-উজ্জামান
  • কাজী সালাউদ্দিন
  • কামরুল হাসান
  • কামাল লোহানী
  • কার্যক্রম
  • কিউ এ আই এম নুরউদ্দিন
  • কুমুদিনী হাজং
  • কে এম সফিউল্লাহ
  • ক্ষুদিরাম বসু
  • খাদেমুল বাশার
  • খালেকদাদ চৌধুরী
  • খালেদ মোশাররফ
  • খোকা রায়
  • গণেশ ঘোষ
  • গাজীউল হক
  • গিয়াসউদ্দিন আহমদ
  • গুণীজন ট্রাষ্ট-এর ইতিহাস
  • গোপাল দত্ত
  • গোবিন্দচন্দ্র দেব
  • চাষী নজরুল ইসলাম
  • চিকিৎসক নুরুল ইসলাম
  • চিত্তরঞ্জন দত্ত
  • চিত্তরঞ্জন দাশ
  • ছবিতে আমাদের গুনীজন
  • জয়গন
  • জয়নুল আবেদিন
  • জসীমউদ্দীন মণ্ডল
  • জহির রায়হান
  • জহুর হোসেন চৌধুরী
  • জামাল নজরুল ইসলাম
  • জামিলুর রেজা চৌধুরী
  • জাহানারা ইমাম
  • জিতেন ঘোষ
  • জিয়া হায়দার
  • জিয়াউর রহমান
  • জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী
  • জুয়েল আইচ
  • জোবেরা রহমান লিনু
  • জোহরা বেগম কাজী
  • জ্ঞান চক্রবর্তী
  • জ্যোতি বসু
  • জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা
  • জ্যোৎস্না খাতুন
  • ট্রাস্টি বোর্ড
  • তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া
  • তরুবালা কর্মকার
  • তাজউদ্দীন আহমদ
  • তিতুমীর
  • ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী
  • দিলওয়ার খান
  • দীনেশ গুপ্ত
  • দুলু বেগম
  • দ্বিজেন শর্মা
  • ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত
  • নভেরা আহমেদ
  • নভেরা আহমেদ
  • নয়ন মিয়া
  • নলিনী দাস
  • নাজমুল হক
  • নিজাম উদ্দিন আহমদ
  • নিতুন কুন্ডু
  • নির্মলেন্দু গুণ
  • নীলিমা ইব্রাহিম
  • নীলুফার ইয়াসমীন
  • নুরজাহান
  • নূর মোহাম্মদ শেখ
  • নূরজাহান বেগম
  • নূরজাহান বেগম (ময়মনসিংহ)
  • নেত্রকোণার গুণীজন
  • নেপাল নাগ
  • পার্থ প্রতীম মজুমদার
  • পূর্ণেন্দু দস্তিদার
  • প্রতিভা মুৎসুদ্দি
  • প্রফুল্ল চাকী
  • প্রভারাণী মালাকার
  • প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
  • ফজল শাহাবুদ্দীন
  • ফজলুর রহমান খান
  • ফজলে হাসান আবেদ
  • ফয়েজ আহমদ
  • ফররুখ আহমদ
  • ফরিদা পারভীন
  • ফিরোজা বেগম
  • ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী
  • ফেরদৌসী রহমান
  • ফেরদৌসী রহমান
  • ফ্লাইট সার্জেন্ট আব্দুল জলিল
  • ফ্লোরা জাইবুন মাজিদ
  • বদরুদ্দীন উমর
  • বশির আহমেদ
  • বশিরন বেগম
  • বশীর আল্‌হেলাল
  • বাদল গুপ্ত
  • বিনয় বসু
  • বিনোদবিহারী চৌধুরী
  • বিপিনচন্দ্র পাল
  • বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল
  • বুলবুল আহমেদ
  • বেগম রোকেয়া
  • বেগম শামসুন নাহার মাহমুদ
  • বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর
  • বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর
  • ব্লগ
  • ভগৎ সিং
  • ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়
  • ভিডিও
  • মঙ্গল পান্ডে
  • মজনু শাহ
  • মণি সিংহ
  • মণিকৃষ্ণ সেন
  • মতিউর রহমান
  • মনোনয়ন
  • মনোরমা বসু
  • মমতাজ বেগম
  • ময়না বেগম
  • মশিউর রহমান
  • মহাদেব সাহা
  • মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর
  • মামুন মাহমুদ
  • মামুনুর রশীদ
  • মায়া রাণী
  • মারিনো রিগন
  • মালেকা বেগম
  • মাহমুদুল হক
  • মাহেলা বেওয়া
  • মীর শওকত আলী
  • মুকশেদ আলী
  • মুকুন্দদাস
  • মুকুল সেন
  • মুক্তিযুদ্ধ
  • মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ‘মহিমা তব উদ্ভাসিত’
  • মুক্তিসংগ্রাম
  • মুজফফর আহমদ
  • মুনীর চৌধুরী
  • মুন্সি আব্দুর রউফ
  • মুর্তজা বশীর
  • মুস্তাফা নূরউল ইসলাম
  • মুস্তাফা মনোয়ার
  • মুহ. আব্দুল হান্নান খান
  • মুহম্মদ আবদুল হাই
  • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
  • মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
  • মুহাম্মদ ইঊনূস
  • মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
  • মুহাম্মাদ কুদরাত-এ-খুদা
  • মূলপাতা
  • মেহেরজান বেগম
  • মোহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী
  • মোঃ আওলাদ হোসেন খান
  • মোঃ ইসমাইল হোসেন
  • মোঃ শফিকুল আনোয়ার
  • মোজাফফর আহমদ
  • মোনাজাতউদ্দিন
  • মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী
  • মোয়াজ্জেম হোসেন
  • মোরশেদুল ইসলাম
  • মোহাম্মদ আবদুল জব্বার
  • মোহাম্মদ কিবরিয়া
  • মোহাম্মদ মনসুর আলী
  • মোহাম্মদ মোর্তজা
  • মোহাম্মদ রুহুল আমিন
  • মোহাম্মদ হামিদুর রহমান
  • মোহাম্মাদ আব্দুল কাদির
  • মোহিউদ্দীন ফারুক
  • যতীন সরকার
  • যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়
  • যোগেশ চন্দ্র ঘোষ
  • রওশন আরা রশিদ
  • রওশন জামিল
  • রংগলাল সেন
  • রণদাপ্রসাদ সাহা
  • রণেশ দাশগুপ্ত
  • রফিকুন নবী
  • রফিকুল ইসলাম
  • রবি নিয়োগী
  • রশিদ চৌধুরী
  • রশীদ তালুকদার
  • রশীদ হায়দার
  • রহিমা
  • রাজিয়া খান
  • রাজুবালা দে
  • রাণী হামিদ
  • রাবেয়া খাতুন
  • রাবেয়া খাতুন তালুকদার
  • রামকানাই দাশ
  • রাশীদুল হাসান
  • রাসবিহারী বসু
  • রাসমণি হাজং
  • রাহিজা খানম ঝুনু
  • রাহেলা বেওয়া
  • রিজিয়া রহমান
  • রেহমান সোবহান
  • রোনাল্ড হালদার
  • লীলা নাগ
  • লুকাস মারান্ডী
  • শওকত আলী
  • শওকত ওসমান
  • শম্ভু আচার্য
  • শরীয়তুল্লাহ
  • শহীদ খান
  • শহীদ সাবের
  • শহীদুল্লা কায়সার
  • শাকুর শাহ
  • শামসুন নাহার
  • শামসুর রাহমান
  • শামীম আরা টলি
  • শাহ আব্দুল করিম
  • শাহ মোঃ হাসানুজ্জামান
  • শিমুল ইউসুফ
  • শেখ আবদুস সালাম
  • শেখ মুজিবুর রহমান
  • সকল জীবনী
  • সতীশ পাকড়াশী
  • সত্যেন সেন
  • সন্‌জীদা খাতুন
  • সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য
  • সফিউদ্দিন আহমদ
  • সমাজবিজ্ঞানী নুরুল ইসলাম
  • সরদার ফজলুল করিম
  • সহযোগিতা
  • সাইদা খানম
  • সাঈদ আহমদ
  • সাখাওয়াত আলী খান
  • সাবিত্রী নায়েক
  • সামিনা খাতুন
  • সালমা সোবহান
  • সালাহ্উদ্দীন আহমেদ
  • সাহিত্য
  • সাহিত্য গবেষণা
  • সিরাজুদ্দিন কাসিমপুরী
  • সিরাজুদ্দীন হোসেন
  • সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
  • সুকুমার বড়ুয়া
  • সুধীন দাশ
  • সুফিয়া আহমেদ
  • সুফিয়া কামাল
  • সুভাষ চন্দ্র বসু
  • সুরাইয়া
  • সুলতানা সারওয়াত আরা জামান
  • সুহাসিনী দাস
  • সূর্য বেগম
  • সূর্যসেন
  • সেলিনা পারভীন
  • সেলিনা হোসেন
  • সেলিম আল দীন
  • সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্‌
  • সৈয়দ নজরুল ইসলাম
  • সৈয়দ মাইনুল হোসেন
  • সৈয়দ শামসুল হক
  • সৈয়দ হাসান ইমাম
  • সোনাবালা
  • সোমেন চন্দ
  • স্বেচ্ছাসেবক
  • হবিবুর রহমান
  • হাজেরা খাতুন
  • হাতেম আলী খান
  • হামিদা খানম
  • হামিদা বেগম
  • হামিদা হোসেন
  • হামিদুর রাহমান
  • হালিমা খাতুন
  • হাশেম খান
  • হাসান আজিজুল হক
  • হাসান হাফিজুর রহমান
  • হাসিনা বানু
  • হীরামনি সাঁওতাল
  • হুমায়ুন আজাদ
  • হুমায়ূন আহমেদ
  • হেনা দাস
  • হেরাম্বলাল গুপ্ত

© 2025 JNews - Premium WordPress news & magazine theme by Jegtheme.