GUNIJAN
  • মূলপাতা
  • ক্ষেত্র
    • সাহিত্য
    • আদিবাসী অধিকার আন্দোলন
    • ক্রীড়া
    • নারী অধিকার আন্দোলন
    • মুক্তিসংগ্রাম
    • শিল্পকলা
    • আলোকচিত্র
    • গণমাধ্যম
    • পারফর্মিং আর্ট
    • সংগীত
    • সংগঠক
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • ইতিহাস গবেষণা
    • চিকিৎসা বিজ্ঞান
    • প্রকৃতি ও পরিবেশ
    • লোকসংস্কৃতি
    • সমাজবিজ্ঞান
    • আইন
    • দর্শন
    • মানবাধিকার
    • শিক্ষা
    • স্থাপত্য
    • সাহিত্য
    • শিল্পকলা
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • আইন
    • আদিবাসী অধিকার আন্দোলন
    • আলোকচিত্র
    • ইতিহাস গবেষণা
    • ক্রীড়া
    • গণমাধ্যম
    • চিকিৎসা বিজ্ঞান
    • দর্শন
    • নারী অধিকার আন্দোলন
    • পারফর্মিং আর্ট
    • প্রকৃতি ও পরিবেশ
    • মানবাধিকার
    • মুক্তিসংগ্রাম
    • লোকসংস্কৃতি
    • শিক্ষা
    • সংগঠক
    • সংগীত
    • সমাজবিজ্ঞান
    • স্থাপত্য
  • কর্মসূচি
  • সহযোগিতা
  • মনোনয়ন
  • কার্যক্রম
  • মূলপাতা
  • ক্ষেত্র
    • সাহিত্য
    • আদিবাসী অধিকার আন্দোলন
    • ক্রীড়া
    • নারী অধিকার আন্দোলন
    • মুক্তিসংগ্রাম
    • শিল্পকলা
    • আলোকচিত্র
    • গণমাধ্যম
    • পারফর্মিং আর্ট
    • সংগীত
    • সংগঠক
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • ইতিহাস গবেষণা
    • চিকিৎসা বিজ্ঞান
    • প্রকৃতি ও পরিবেশ
    • লোকসংস্কৃতি
    • সমাজবিজ্ঞান
    • আইন
    • দর্শন
    • মানবাধিকার
    • শিক্ষা
    • স্থাপত্য
    • সাহিত্য
    • শিল্পকলা
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • আইন
    • আদিবাসী অধিকার আন্দোলন
    • আলোকচিত্র
    • ইতিহাস গবেষণা
    • ক্রীড়া
    • গণমাধ্যম
    • চিকিৎসা বিজ্ঞান
    • দর্শন
    • নারী অধিকার আন্দোলন
    • পারফর্মিং আর্ট
    • প্রকৃতি ও পরিবেশ
    • মানবাধিকার
    • মুক্তিসংগ্রাম
    • লোকসংস্কৃতি
    • শিক্ষা
    • সংগঠক
    • সংগীত
    • সমাজবিজ্ঞান
    • স্থাপত্য
  • কর্মসূচি
  • সহযোগিতা
  • মনোনয়ন
  • কার্যক্রম
No Result
View All Result
GUNIJAN
No Result
View All Result

রণদাপ্রসাদ সাহা

অবদানের ক্ষেত্র: শহীদ বুদ্ধিজীবী
রণদাপ্রসাদ সাহা

রণদাপ্রসাদ সাহা

আলোকচিত্র / অডিও / ভিডিও / ফাইল

বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে লৌহজং নদী। দিনমান সেই নদী তীরের গ্রাম, আম-কাঁঠালের বন আর মাঠ-ঘাট চষে বেড়ায় এক দুরন্ত কিশোর। নদীতে সাঁতার ও মাছ ধরা, বিকেলে গ্রামের ছেলেদের নিয়ে গোল্লাছুট খেলা- এই করেই কেটে যাচ্ছে তার দিন। বইয়ের পড়ায় তেমন মনোযোগ নেই। প্রাণভরে প্রকৃতির কাছ থেকে পাঠ নিচ্ছে এই শিশু। হাসিখুশি, চঞ্চল ও নির্ভীক এই শিশুই রণদা। পরিণত জীবনে দানবীর রণদাপ্রসাদ সাহা।

গ্রামের এক সাধারণ বাঙালী ঘরের মানুষ রণদা নিজের চেষ্টায় ও পরিশ্রমে বিত্তশালী হয়েছিলেন। বিত্তবৈভবের সবকিছু অকাতরে দান করেছিলেন মানুষের কল্যাণে। বিশাল হৃদয়ের এই মানুষটিকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার-আলবদর বাহিনী হত্যা করে। এই কয়েক বাক্যে রণদাপ্রসাদের কথা বললে তাঁর সম্পর্কে অনেক কথাই নাবলা থাকে। রণদাপ্রসাদের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানার জন্য তাঁর সময় ও সেই সময়ের সমাজের নানা উত্থান-পতন জানা দরকার। সময় ও সমাজের পাশাপাশি তাঁর জীবনকে রাখলেই এই মহত্‍ মানুষের কর্মময় জীবনের সবটুকু বোঝা সম্ভব।

রণদাপ্রসাদ সাহার জন্ম ১৮৯৬ সালের ৯ নভেম্বর সাভারের কাছে কাছৈড় গ্রামের নানাবাড়িতে। বাবার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরে। বাবা দেবেন্দ্রনাথ পোদ্দার ও মা কুমুদিনী দেবীর চার সন্তানের (তিন ছেলে ও এক মেয়ে) মধ্যে রণদা ছিলেন দ্বিতীয়। বাবার বিশেষ কোনো স্থায়ী পেশা ছিল না। মোটের ওপর পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন দলিল লেখক। ছোটখাটো ব্যবসাও করেছেন, তবে ব্যবসার মানসিকতা তাঁর ছিল না। মা ছিলেন গৃহিণী। মায়ের আদর বেশিদিন পাননি রণদা। অভাবের সংসারে সেদিন মায়ের জন্য ডাক্তার জোটেনি; জোটেনি ওষুধ- পথ্য বা সেবাযত্নও। তখন গ্রামের হিন্দু সমাজে অশৌচের অজুহাতে সেবাযত্ন ও চিকিত্‍সার অভাবে মারা যাওয়া ছিল নারীদের নিয়তি। মাকে সেভাবেই মারা যেতে দেখেছেন সাত বছরের শিশু রণদাপ্রসাদ। প্রসবকালে অকালে মারা যান কুমুদিনী দেবী। মায়ের সেই স্মৃতি তাঁকে তাড়িয়ে ফিরেছে। তাই পরিণত জীবনে দুস্থ মানুষের সেবা দিতে গড়ে তুলেছেন মায়ের নামে দাতব্য প্রতিষ্ঠান।

প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ছেলেমেয়েদের দেখাশুনার জন্য দেবেন্দ্রনাথ দ্বিতীয় বিয়ে করেন। নতুন মা কোকন দাসী রণদাদের দেখাশুনা তো দূরের কথা আদরের বদলে দিলেন নিষ্ঠুরতা। সত্‍ মায়ের এই অনাদর রণদাকে আরও একরোখা ও বেপরোয়া করে তুলেছিল। অবস্থা দেখে বাবা রণদাকে পাঠিয়ে দিলেন মামাবাড়ি সাভারের শিমুলিয়ায়। রণদার ঠাঁই হয়েছিল মামাবাড়িতে। ছোট ভাই ফণিকে টাঙ্গাইলের মহবোর জমিদার বাড়িতে পুষ্যি দেয়া হয়েছিল। মাহারা রণদার মন বাবা ও সত্‍ মায়ের অনাদরে এতটাই বিষিয়ে উঠেছিল যে মামাবাড়িতেও আর তাঁর মন বসল না। সেখান থেকে তিনি পালিয়ে গেলেন কলকাতায়।

বিশ শতকের শুরুর সময়টায় সারা বিশ্বেই ভাঙাগড়া চলছিল। একটা বিশ্বযুদ্ধের দিকে যাচ্ছিল বিশ্ব। ভারতে দানা বেঁধে উঠছিল ব্রিটিশবিরোধী বিক্ষোভ। সেই উত্তাপ লেগেছিল কলকাতায়ও। কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় তখন ঘুরে বেড়াচ্ছেন রণদাপ্রসাদ সাহা। তিনি তখন কিশোর। কোথাও কোনো আশ্রয় নেই, নেই কোনো আশ্বাস। শুধু ব্যর্থতার গ্লানি। তারপরও হাল ছাড়েননি। প্রতিদিন দুমুঠো ভাতের জন্য কুলিগিরি, রিক্সা চালানো, ফেরি করা, খবরের কাগজ বিক্রির মতো বিচিত্র কাজ করেছেন রণদা। কলকাতায় তখন কাজের সন্ধানে ছুটে আসা ভুখা মানুষের ভিড়, গ্রামের পর গ্রাম উজাড় করে দেয়া ম্যালেরিয়া- এসবই তাঁকে স্বদেশি আন্দোলনের দিকে নিয়ে যায়। মানুষের দুর্দশা লাঘবের জন্য বিপ্লবের দীক্ষা নেন তিনি। এজন্য অচিরেই তাঁকে পুলিশের মারধর ও জেল খাটতে হয়।

১৯১৪ সালে সারা বিশ্বে মহাযুদ্ধের দামামা বেজে উঠল। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের নেতা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বিপ্লবীদের আহ্বান জানালেন ইংরেজদের হয়ে বিশ্বযুদ্ধে লড়ার জন্য। ইংরেজ তাড়ানোর লড়াইয়ে নিয়োজিত বিপ্লবীরা প্রথমে তা মেনে নিতে চাইল না। পরে আবার যুদ্ধ শেষে বড় প্রাপ্তি জুটবে এ আশায় তারা বিশ্বযুদ্ধে নামল। স্বেচ্ছাসেবী বেঙ্গল অ্যাম্বুলেন্স কোরের হয়ে যুদ্ধে নামলেন রণদাপ্রসাদ সাহাও। কুতেল আমারায় ব্রিটিশবাহিনী যখন তুর্কি সেনাপতি হাশিম পাশার হাতে বন্দি। ব্রিটিশ সেনাদের তখন দারুণ খাদ্যাভাব, নানা রোগে আক্রান্ত তারা। রণদা আহত সৈনিকদের সেবায় একেবারে ডুবে গেলেন। তিনি শত্রুদের চোখ এড়িয়ে সবার জন্য খাদ্য সংগ্রহ করতেন। এসব খবর পেয়েছিলেন ব্রিটিশ সেনাপতি টাউনসেন্ড। তিনি বাঙালী যুবক রণদার সাহস দেখে অবাক হয়েছিলেন। ব্রিটিশ সেনাবাহিনী যখন বাগদাদে বন্দি তখন সেখানে ছিল অ্যাম্বুলেন্স কোরও। একদিন হঠাত্‍ সামরিক হাসপাতালে আগুন লেগে যায়। আগুনের ভয়ে সবাই জীবন নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল। ক্যাপ্টেন কিং দাঁড়িয়ে দেখছিলেন আগুনের তাণ্ডব। কোন মায়ের সন্তানকে নিশ্চিত এই মৃত্যুর মুখে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। রণদা এগিয়ে এসে বললেন, ‘অনুমতি দিন, হাসপাতালের ভেতর থেকে আমি রোগীদের বের করে আনি।’ কিং বললেন, ‘তোমার নিশ্চয় মা আছেন। হয়ত স্ত্রীও আছেন। তোমাকে অনুমতি দিতে পারি না।’ রণদা বললেন, ‘আমি মরলে এ দুনিয়ায় আমার জন্য কাঁদবার কেউ নেই। আপনার পায়ে পড়ি, অনুমতি দিন।’ ক্যাপ্টেন কিং বাধ্য হয়ে বললেন, ‘আচ্ছা চেষ্টা করে দেখতে পার।’

দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে কিছুক্ষণ পরই একজন রোগীকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন তিনি। তাঁকে দেখে আরও তিনজন উদ্ধার কাজে যোগ দিলেন। শেষ রোগীটিকে বের করে এনে অজ্ঞান হয়ে গেলেন রণদা। যখন চোখ খুললেন, দেখলেন তিনি এক নতুন হাসপাতালের বিছানায়। সবাই রণদার প্রশংসা করছিল। দেশে ফেরার পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও রণদাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। বেঙ্গল রেজিমেন্টে ভর্তি হয়ে রণদা যখন ইরাক যান তখন তাঁর সাথে দেখা হয় লম্বা চুল, বড় বড় চোখ আর প্রাণবন্ত এক যুবকের। তিনি কাজী নজরুল ইসলাম। রণদা তখন অস্থায়ী সুবাদার মেজর। সবাই তাঁকে ভয় পায়। তরুণ নজরুল কিন্তু সামরিক রেওয়াজের তোয়াক্কা করেন না। রণদা তাঁকে একদিন ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কাজী, তুমি গান গাও?’
‘আজ্ঞে, অল্পবিস্তর চিত্‍কার করি বটে।’
‘কবিতা লেখ?’
‘লোকে তেমন দুর্নামও করে।’

রণদাপ্রসাদ সাহা এরপর কাজী নজরুল ইসলামকে সংগীত বিভাগে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। কাজী নজরুল ইসলামও নিজের পছন্দের কাজটি পেয়ে খুশি হয়েছিলেন। রণদাপ্রসাদ যখন পরবর্তীকালে জীবনে প্রতিষ্ঠিত, হাসপাতাল গড়ে তুলেছেন মির্জাপুরে, তখন কাজী নজরুল ইসলাম পশ্চিমবঙ্গে। নজরুলের অসুস্থতার খবর পেয়ে রণদা তাঁকে বাংলাদেশে এনে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে রেখে চিকিত্‍সা করাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন, কিন্তু নানা কারণে ভারত থেকে তাঁকে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।
প্রথম মহাযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় যুদ্ধ শেষে ইংল্যান্ডের সম্রাটের সঙ্গে করমর্দনের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন রণদাপ্রসাদ। ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে সম্মানজনক এ আমন্ত্রণ পেয়ে তিনি প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড সফরে যান। পরবর্তী জীবনে অবশ্য ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজনে বহুবার সেখানে গিয়েছেন।

প্রথম মহাযুদ্ধ থেকে ফিরে আসা ভারতীয়দের সবাইকে ব্রিটিশ সরকার যোগ্যতা অনুসারে চাকরি দিয়েছিল। লেখাপড়া সামান্য হলেও যুদ্ধে তাঁর অবদানের কথা বিবেচনা করে রেলওয়ের কালেক্টরেটের চাকরি দেওয়া হয়েছিল রণদাপ্রসাদকে। কর্মস্থল ছিল সিরাজগঞ্জ থেকে শিলাইদহ। ১৯৩২ সালে এই চাকরিতে ইস্তফা দেন তিনি। মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে পড়ার কারণে ইস্তফা দিতে হয়। ক্ষতিপূরণ হিসেবে যে টাকাটা পান তা দিয়ে শুরু করেন কয়লার ব্যবসা। কলকাতায় তখন কয়লার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। প্রথমে বাড়ি বাড়ি কয়লা সরবরাহ করতেন রণদা। পরে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কয়লা সরবরাহের কাজ আসতে শুরু করল। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার জমিদার সতীশ চৌধুরী রণদার মধ্যে ছাইচাপা আগুন দেখেছিলেন। তিনি রণদার দিকে অর্থ, পরামর্শ ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন। মাত্র ছয় বছরে কলকাতার একজন প্রতিষ্ঠিত কয়লা-ব্যবসায়ী হয়ে উঠলেন রণদাপ্রসাদ।

কয়লার ব্যবসার সূত্রে রণদা লক্ষ্য করলেন, তাঁর পুরনো এক খরিদ্দার লঞ্চের মালিক কয়লার দাম পরিশোধ করতে পারছে না। খোঁজ নিয়ে জানলেন, লঞ্চের ব্যবসা ভালো চলছে না, যে কারণে ওই খরিদ্দার লঞ্চ বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজছে। রণদা দেখলেন, লঞ্চটা কিনলে তাঁর পাওনাও আদায় হবে আবার কম দামে একটি লঞ্চও পাওয়া যাবে। এই লঞ্চ দিয়েই নৌযানের ব্যবসা শুরু করলেন রণদা। অন্য ব্যবসায়ীরা যখন ব্যর্থ হয়ে কোনোকিছু জলের দামে বেচে দিত, রণদা তা কিনে নিয়ে নতুন করে দাঁড় করাতেন। কোনো ব্যবসার সমস্যাগুলো দ্রুত খুঁজে বের করে সেটিকে আবার পুনর্জীবিত করে তুলতেন তিনি।

কয়লা থেকে লঞ্চ, লঞ্চ থেকে ডকইয়ার্ড, ডকইয়ার্ড থেকে ‘বেঙ্গল রিভার সার্ভিস’- এভাবেই রণদা তাঁর ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়েছেন। নৌপথে মালামাল আনা-নেয়ার কাজে নিয়োজিত বেঙ্গল রিভার সার্ভিস প্রথমে যৌথ মালিকানায় থাকলেও পরে সব অংশীদারের অংশ কিনে নেন রণদা। এই কোম্পানির মাধ্যমেই তিনি নিজেকে একজন সফল নৌপরিবহন ব্যবসায়ী করে তোলেন।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর রণদাপ্রসাদ বাংলাদেশে চলে আসেন। এ কারণে দুই দেশের ব্যবসা দুভাগ হয়ে যায়। ভারতে থাকা কুমুদিনী ওয়েলফেরার ট্রাস্টের টাকায় পরিচালিত হতে থাকে কলকাতা, কালিংপং ও মধুপুরের কিছু দাতব্য প্রতিষ্ঠান। এদেশে-বাংলাদেশে (তত্‍কালীন পূর্ব পাকিস্তান) থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো আলাদা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। এই বছরই রণদাপ্রসাদের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কুমুদিনী ওয়েলফেরার ট্রাস্ট অব বেঙ্গলের আওতাভুক্ত হয়। নিজের স্বার্থ নয়, মানুষের কল্যাণকে বড় করে দেখার মানসিকতা থেকেই তাঁর ব্যবসা পরিচালিত হতে থাকে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

রণদাপ্রসাদ সাহা বলতেন, ‘মানুষের দুটো জাত- একটা নারী আর একটা পুরুষ। আর মানুষের ধর্ম একটাই, সেটা মানবধর্ম।’ তাঁর গড়ে তোলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদেরও তিনি এই আদর্শের শিক্ষাই দিতে চেয়েছেন। জীবনে কর্মের মন্ত্রে দীক্ষিত ছিলেন তিনি। কোনো ফলের আশা নয়, কর্মকেই জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। এসব জীবনদৃষ্টিই তাঁকে এক মহামানুষে পরিণত করেছিল। নিম্নবিত্তের সন্তান হয়েও জীবনে কঠোর পরিশ্রম করে যে বিশাল সম্পদ তিনি অর্জন করেছিলেন তার সবটুকুই অকাতরে বিলিয়ে গেছেন। সম্পদ তিনি নিজের জন্য অর্জন করেননি, করেছেন মানুষের কল্যাণে ব্যয় করার জন্য। জীবনে ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠানে এবং প্রতিষ্ঠান থেকে এক নির্মোহ মহত্‍ মানুষে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। গৃহী হয়েও ছিলেন সন্ন্যাসী।

সংস্কারমুক্ত সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখতেন রণদাপ্রসাদ সাহা। এ কারণেই শহর থেকে দূরে টাঙ্গাইলের এক গ্রামকে কর্মস্থল হিসেবে বেছে নেন। গ্রামের সমাজ তখন সংস্কারের পাঁকে ডুবে আছে। রণদার গ্রামে ফেরাটাকে সে সমাজ ভালোভাবে নেয়নি। জাতে-বেজাতের সঙ্গে মেলামেশা, পথ-বিপথে ও দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ানো রণদাকে প্রায়শ্চিত্ত ছাড়া গ্রামের সমাজ সেদিন গ্রহণ করতে চায়নি। তখন এগিয়ে এলেন মির্জাপুর গ্রামের প্রভাবশালী তালুকদার সতীশচন্দ্র পোদ্দার। গ্রাম তাঁকে গ্রহণ করতে চায়নি। কিন্তু বালিয়াটির সম্ভ্রান্ত জমিদার তাঁর কন্যা কিরণবালা দেবীর বর হিসেবে তাঁকেই গ্রহণ করলেন। এক্ষেত্রে বরাবরের মতো সহযোগিতা করলেন সতীশচন্দ্র পোদ্দার। বিয়েতে গ্রামের লোকজন যথাযোগ্য মর্যাদায় আপ্যায়িত হলো আর রণদাকে গ্রাম ছাড়া করতে সমাজপতিদের চেষ্টাও ব্যর্থ হলো।

কিরণবালা দেবী ছিলেন রণদাপ্রসাদের সুযোগ্য সহধর্মিণী। ব্যবসায় লোকসান হলে নিজের গা থেকে স্বামীর হাতে অলংকার ও সঞ্চিত অর্থ তুলে দিতে কুন্ঠা করতেন না তিনি। রণদার সুখ-দুঃখের সহভাগীই শুধু নন, মানুষের কল্যাণে নিবেদিত ছিলেন তিনিও। ১৯৩৮ সালে কুমুদিনী হাসপাতালের শোভা সুন্দরী ডিসপেন্সারির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় কিরণবালা ২০০ ছাত্রীর জন্য একটি আবাসিক বালিকা বিদ্যালয় ভারতেশ্বরী হোমসের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন। কিরণবালা দেবী দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকার পর ১৯৮৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পরলোকগমন করেন। ১৯৭১ সালে পাক হানাদাররা নারায়ণগঞ্জ থেকে স্বামী ও সন্তানকে ধরে নেয়ার পর থেকেই তিনি শোকে শয্যাশায়ী হন। শেষ জীবনে নির্বাক হয়ে যান।

একটি সমাজের উন্নতির জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও যে সমানতালে এগিয়ে যেতে হয় সেটি জানতেন রণদা। নারীদের এগিয়ে নিতে চাই শিক্ষার প্রসার। আর এজন্যই পাশ্চাত্য ভাবধারায় গড়ে তুলেছিলেন ভারতেশ্বরী হোমসকে। ১৯৪৪ সালে মির্জাপুরের মতো বদ্ধগ্রামে পাশ্চাত্য ভাবধারার এই স্কুল ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ। যোগেন্দ্রচন্দ্র পোদ্দারের (সম্পর্কে রণদার কাকা) বাড়ির আঙিনায় শুরু হয়েছিল এ স্কুল। তারপর ধীরে ধীরে এ স্কুল আদর্শ এক বিদ্যাপীঠে পরিণত হয়েছে। প্রথা ও কুসংস্কারের জালে বন্দি নারীদের শিক্ষিত করার চ্যালেঞ্জ তিনি নিয়েছিলেন সমাজপতিদের চোখরাঙানি উপেক্ষা করেই। টাঙ্গাইলে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কুমুদিনী মহিলা কলেজ। এটিই দেশের প্রথম আবাসিক মহিলা ডিগ্রি কলেজ। নারী সমাজের উন্নয়নেই যে তিনি কেবল মনোযোগী ছিলেন তা নয়। অনগ্রসর গোটা বাঙালী সমাজকেই এগিয়ে নিতে চেয়েছেন তিনি। যে কারণে নারীশিক্ষার পাশাপাশি পুরুষদের জন্যও গড়েছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র সরকারি কলেজের প্রতিষ্ঠাতাও রণদাপ্রসাদ সাহা। তাঁর বাবার নামে এ কলেজের নামকরণ।

রণদাপ্রসাদ দেখেছিলেন, শিক্ষার অভাবের মতোই আরেকটি অভাব গ্রামের মানুষের জীবনে প্রবল। চিকিত্‍সার অভাবে অনেককেই মরতে দেখেছেন তিনি। মায়ের মতো অনেক নারীর অকাল মৃত্যু তাঁর মনে স্থায়ী প্রভাব ফেলেছিল। গ্রামের মানুষের সুচিকিত্‍সার জন্য তিনি মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কুমুদিনী হাসপাতাল। তত্‍কালীন সময়েই এটি ছিল দেশের হাতেগোনা উন্নত চিকিত্‍সার সুযোগ সমৃদ্ধ হাসপাতালগুলোর একটি। মাত্র ২০ শয্যা নিয়ে ১৯৪৪ সালে যাত্রা শুরু হয় এই হাসপাতালের। পরবর্তীতে ৭৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত হয়। দেশের দূর-দূরান্তের গরিব রোগীরা চিকিত্‍সা পাওয়ার আশায় আসে এ হাসপাতালে। রোগীদের থাকা-খাওয়া থেকে শুরু করে সুচিকিত্‍সার যাবতীয় খরচ বহন করে কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থা। কুমুদিনী হাসপাতালের চিকিত্‍সা ব্যবস্থায় কোনো শ্রেণীভেদ নেই। এখানে ধনী ও গরিব সবাই সমান সুযোগ ও সুচিকিত্‍সা পায়। এ হাসপাতালে কোনো কেবিন নেই। সবার জন্য অভিন্ন ঢালাও ব্যবস্থা। হাসপাতালের পাশেই একটি মহিলা মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠারও উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। মহিলা মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার সে স্বপ্ন তিনি সফল করে যেতে পারেননি।

রণদাপ্রসাদ সাহা ছিলেন সংস্কৃতিপ্রাণ একজন মানুষ। অন্যের মধ্যে শিল্প ও সংস্কৃতির গুণ দেখলে তিনি যেমন তা উস্কে দিতেন, তেমনি নিজেও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। শুরু থেকেই ভারতেশ্বরী হোমসে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন তিনি। ১৯৪৮ সালে মির্জাপুরে বিপুল উত্‍সাহ নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন সৌখিন নাট্যসংঘ ও মঞ্চ। এমন আধুনিক মঞ্চ তখন পূর্ববাংলার রাজধানী ঢাকায়ও ছিল না। ১৯৬৯ সালে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ক্ষীরদাপ্রসাদ রচিত ‘আলমগীর’ নাটকটি অভিনীত হয় আনন্দ নিকেতন মঞ্চে। ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর দুই দিন মঞ্চস্থ হয় এই নাটক। এই নাটকে বাদশাহ আলমগীরের ভূমিকায় রণদাপ্রসাদের অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদাররা বাঙালী নিধন শুরু করে। পাকিস্তানীদের রুখতে লড়াইয়ে নামে বাঙালীরাও। শুরু হয় বাঙালীর মুক্তির সংগ্রাম। সেই লড়াইয়ে অংশ নেন রণদাপ্রসাদ সাহাও। তখন অনেকেই দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেয়। শুভাকাঙ্ক্ষীরা রণদাকেও দেশত্যাগের পরামর্শ দেন। রণদা ছিলেন প্রবল আত্মবিশ্বাসী। তিনি মনে করতেন, তিনি কারও ক্ষতি করেননি, তাই কেউ তাঁর ক্ষতি করবে না। আর্তমানবতার সেবায় নিবেদিত রণদা তখন মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিত্‍সা ও সহযোগিতা করে যাচ্ছিলেন। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় যে বাংলাকে মাতৃভূমি হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের এই দুর্দিনে সেই দেশ, দেশের মানুষ, তাঁর গড়া বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রিয়জনদের ফেলে চলে যাওয়ার মানসিকতা তাঁর ছিল না।

স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই দিনগুলোতে আহত মুক্তিযোদ্ধারা সাধারণ রোগীর বেশে এসে চিকিত্‍সা নিচ্ছিল কুমুদিনী হাসপাতালে। পাকিস্তানী বাহিনীর দেশীয় দোসর রাজাকার ও আলবদরদের কারণে বিষয় জানাজানি হয়ে গেল। যারা একদিন এই হাসপাতালের ওষুধ-পথ্য ও চিকিত্‍সায় নিজেদের প্রাণ বাঁচিয়েছিল তারাই শত্রুতা করল। যুদ্ধের শুরু থেকেই মির্জাপুরে তাঁবু গেড়েছিল পাকিস্তানী বাহিনী। কুমুদিনী হাসপাতাল ও ভারতেশ্বরী হোমসের কার্যক্রমের প্রতি কড়া নজর রাখছিল তারা। হাসপাতালের রোগী ও হোমসের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে এই দুই প্রতিষ্ঠান ও রণদাপ্রসাদের পক্ষ থেকে পাকিস্তানী বাহিনীকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, এ গ্রামে কোনো গণ্ডগোল হবে না। রণদাপ্রসাদ তখন থাকতেন নারায়ণগঞ্জে। সপ্তাহান্তে মির্জাপুর আসতেন। ১৯৭১ সালের এপ্রিলের শেষের দিকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা মির্জাপুরে এসে থাকা শুরু করল। রণদাপ্রসাদ ও একমাত্র পুত্র ভবানীপ্রসাদ (রবি) তখনও থাকতেন নারায়ণগঞ্জে কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে।

১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল লাট ভবনে পুত্র রবি ও রণদাপ্রসাদকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী আটক করে। ৫ মে ছাড়া পেয়ে পিতাপুত্র নারায়ণগঞ্জে ফিরে যান। পরিবারের লোকজনও তাঁদের ফিরে পেয়ে দারুণ খুশি। সবাই ভেবেছিল, বিপদের ঝুঁকি বুঝি কেটে গেছে, কিন্তু দুই দিন পরই শুরু হয় আসল তাণ্ডব। ৭ মে দুপুরের দিকে মির্জাপুরের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ওদুদ মাওলানা টাঙ্গাইল থেকে পাকবাহিনী নিয়ে আসে। হানাদাররা মির্জাপুরে আগুন, লুটতরাজ ও নরহত্যার বর্বর উল্লাস শুরু করে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে তাদের এই নারকীয় উল্লাস। একই দিনে অর্থ্যাত্‍ ১৯৭১ সালের ৭ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে হানাদার বাহিনীর দোসররা রণদাপ্রসাদ ও ভবানীপ্রসাদকে ধরে নিয়ে যায়। ৫ মে ঘাতকদের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার ঘটনায় সবাই আশা করেছিল এবারও হয়ত ফিরে আসবেন তাঁরা। আশায় আশায় বহু দিন গেছে। তাঁরা আর ফিরে আসেননি এবং তাঁদের কোনো খোঁজও মেলেনি।

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

জন্ম ও বংশপরিচয়
রণদাপ্রসাদ সাহার জন্ম ১৮৯৬ সালের ৯ নভেম্বর (বাংলা ১৩০২) সাভারের কাছে শিমুলিয়ার কাছৈড় গ্রামে মাতুলালয়ে। বাবা দেবেন্দ্রনাথ পোদ্দার ও মা কুমুদিনী দেবী। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে রণদা দ্বিতীয়। পৈত্রিক নিবাস টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর গ্রামে।

শৈশব ও কৈশোর
ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন দুরন্ত, হাসিখুশি, চঞ্চল ও নির্ভীক। প্রাণবন্ত এই শৈশব রণদার জীবনে বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মাত্র সাত বছর বয়সে মাকে হারান তিনি। ঘরে আসে সত্‍ মা কোকন দাসী। সত্‍ মায়ের অত্যাচারে বাপের বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নেন মামাবাড়িতে। সেখানেও বেশিদিন টিকতে না পেরে শুরু হয় তার নিরুদ্দেশ যাত্রা। কৈশোরে কলকাতার রাস্তায় শুরু হয় তাঁর জীবন সংগ্রাম। কলকাতায় কুলিগিরি, রিক্সা চালানো, ফেরি করা, খবরের কাগজ বিক্রি করার মতো পেশা দিয়ে জীবনযুদ্ধ শুরু করেন তিনি।

শিক্ষাদীক্ষা
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে গ্রামবাংলার আর দশজন শিশুর মতোই রণদারও হাতেখড়ি হয়েছিল। পুঁথি ও প্রতিষ্ঠানের বিদ্যা তাঁর অর্জন করা হয়নি। তবে তিনি ছিলেন স্বশিক্ষিত; গ্রামের নদী, নিসর্গ ও মানুষ, কলকাতা শহরের নাগরিক বাস্তবতা, তত্‍কালীন পরিস্থিতি- এসবের কাছ থেকে ভালোই শিক্ষা পেয়েছিলেন তিনি। নিজস্ব আদর্শ ও চিন্তাধারাও তৈরি হয়েছিল সেসব শিক্ষার গুণেই।

পরিবার
রণদাপ্রসাদের সুযোগ্য সহধর্মিণী বালিয়াটির জমিদার কন্যা কিরণবালা দেবী। তাদের চার সন্তানের মধ্যে বড় বিজয়া। কন্যা বিজয়া অল্প বয়সেই সংসারী হয়ে যান। দ্বিতীয় পুত্র দুর্গাপ্রসাদ। দুর্গা অসুস্থ অবস্থায় কলকাতায় মারা যান। তৃতীয় সন্তান কন্যা জয়া লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরে ভারতেশ্বরী হোমসের দায়িত্ব নেন। কনিষ্ঠ সন্তান পুত্র ভবানীপ্রসাদ বাবার আদর্শে গড়া দাতব্য প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেন। ১৯৭১ সালে মাত্র ২৭ বছর বয়সে শহীদ হন তিনি। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর দোসররা তাঁকেও ধরে নিয়ে যায়। ভবানীপ্রসাদ সাহা ও শ্রীমতী সাহার পুত্র রাজিবপ্রসাদ সাহার বয়স তখন মাত্র তিন বছর।

কর্ম
রণদাপ্রসাদ সাহা ছিলেন ব্যবসায়ী। শূন্য থেকে যাত্রা শুরু করেও প্রভূত ধনসম্পদেও অধিকারী হয়েছিলেন তিনি। ধনসম্পদের সবটাই বিলিয়ে দিয়েছেন বাংলার মানুষের সেবায়। গড়ে তুলেছেন মায়ের নামে কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থা নামের দাতব্য প্রতিষ্ঠান। পরিবারের ভরণপোষণের খরচ ছাড়া এ প্রতিষ্ঠান থেকে তেমন কিছুই নিতেন না তিনি। দেশের মানুষের শিক্ষা ও সেবার মানসিকতা থেকে তিনি গড়ে তুলেন কুমুদিনী হাসপাতাল, কুমুদিনী কলেজ, বাবার নামে দেবেন্দ্র কলেজ, ঠাকুরদার মায়ের নামে ভারতেশ্বরী হোমসের মতো শিক্ষা ও সেবামূলক অনেক প্রতিষ্ঠান।

মৃত্যূ
১৯৭১ সালের ৭ মে পাকিস্তানী হানাদারদের দোসর রাজাকার-আলবদররা নারায়ণগঞ্জ থেকে রণদাপ্রসাদ ও তাঁর পুত্র ভবানীপ্রসাদকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর তাঁদের আর কোনো খোঁজ মেলেনি।

দানবীর রণদাপ্রসাদ সাহা নেই, কিন্তু তাঁর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানগুলো আজও অকাতরে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। মানবকল্যাণে নিবেদিত রণদাপ্রসাদ সাহা সেসবের মাঝেই বেঁচে আছেন।

লেখক : ষড়ৈশ্বর্য মুহম্মদ

ShareTweetShareScanSend

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

খুঁজুন

No Result
View All Result
এ পর্যন্ত ওয়েবসাইট ভিজিট করেছেন
Web Counter

সম্পৃক্ত হোন

  • সহযোগিতা করুন
  • স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিন
  • মনোনয়ন করুন

আমাদের সম্পর্কে

  • ট্রাস্টি বোর্ড
  • আপনার মতামত

যোগাযোগ

  •   info@gunijan.org.bd
  •   +৮৮০১৮১৭০৪৮৩১৮
  •   ঢাকা, বাংলাদেশ

© - All rights of Photographs, Audio & video clips on this site are reserved by Gunijan.org.bd under  CC BY-NC licence.

No Result
View All Result
  • #8898 (শিরোনামহীন)
  • অজয় রায়
  • অজিত গুহ
  • অনিল মুখার্জি
  • অনুপম সেন
  • অমলেন্দু বিশ্বাস
  • অরবিন্দ ঘোষ
  • অরিণা বেগম
  • অরিণা বেগম
  • অরিণা বেগম
  • অশ্বিনীকুমার দত্ত
  • আ ন ম গোলাম মোস্তফা
  • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
  • আজহারুল হক
  • আজিজুর রহমান মল্লিক
  • আঞ্জেলা গমেজ
  • আতাউস সামাদ
  • আতিউর রহমান
  • আনিসুজ্জামান
  • আনোয়ার পাশা
  • আনোয়ার হোসেন
  • আনোয়ার হোসেন
  • আপনার মতামত
  • আবদুর রাজ্জাক
  • আবদুল আলীম
  • আবদুল আহাদ
  • আবদুল ওয়াহাব তালুকদার
  • আবদুল গাফফার চৌধুরী
  • আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
  • আবদুল্লাহ আল মামুন
  • আবদুল্লাহ আল-মুতী শরফুদ্দিন
  • আবিরন
  • আবু ইসহাক
  • আবু ওসমান চৌধুরী
  • আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
  • আবু তাহের
  • আবু হেনা মোস্তফা কামাল
  • আবুল ফজল
  • আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান
  • আবুল হাসান
  • আবুল হোসেন
  • আব্দুল জব্বার
  • আব্দুল মতিন
  • আব্বাসউদ্দীন আহমদ
  • আমিনুল ইসলাম
  • আরজ আলী মাতুব্বর
  • আরমা দত্ত
  • আল মাহমুদ
  • আলতাফ মাহমুদ
  • আলম খান
  • আলমগীর কবির
  • আলী আহাম্মদ খান আইয়োব
  • আলোকচিত্রী শহিদুল আলম
  • আসিয়া বেগম
  • আহসান হাবীব
  • ইদ্রিছ মিঞা
  • ইমদাদ হোসেন
  • ইলা মজুমদার
  • ইলা মিত্র
  • উল্লাসকর দত্ত
  • এ এফ এম আবদুল আলীম চৌধুরী
  • এ কে খন্দকার
  • এ. এন. এম. মুনীরউজ্জামান
  • এ. এম. হারুন অর রশীদ
  • এ.এন.এম. নূরুজ্জামান
  • এ.টি.এম. হায়দার
  • এবিএম মূসা
  • এম আর খান
  • এম এ জলিল
  • এম হামিদুল্লাহ্ খান
  • এম. এ. মঞ্জুর
  • এম. এ. রশীদ
  • এম. এন. রায়
  • এস এম সুলতান
  • ওবায়েদ উল হক
  • কবরী
  • কবীর চৌধুরী
  • কমলা বেগম (কিশোরগঞ্জ)
  • কমলা বেগম (সিরাজগঞ্জ)
  • করিমন বেগম
  • করেপোরাল আবুল বাশার মো. আবদুস সামাদ
  • কর্মসূচি
  • কলিম শরাফী
  • কল্পনা দত্ত
  • কাইয়ুম চৌধুরী
  • কাঁকন বিবি
  • কাজী আবদুল আলীম
  • কাজী আবুল কাসেম
  • কাজী এম বদরুদ্দোজা
  • কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ
  • কাজী নূর-উজ্জামান
  • কাজী সালাউদ্দিন
  • কামরুল হাসান
  • কামাল লোহানী
  • কার্যক্রম
  • কিউ এ আই এম নুরউদ্দিন
  • কুমুদিনী হাজং
  • কে এম সফিউল্লাহ
  • ক্ষুদিরাম বসু
  • খাদেমুল বাশার
  • খালেকদাদ চৌধুরী
  • খালেদ মোশাররফ
  • খোকা রায়
  • গণেশ ঘোষ
  • গাজীউল হক
  • গিয়াসউদ্দিন আহমদ
  • গুণীজন ট্রাষ্ট-এর ইতিহাস
  • গোপাল দত্ত
  • গোবিন্দচন্দ্র দেব
  • চাষী নজরুল ইসলাম
  • চিকিৎসক নুরুল ইসলাম
  • চিত্তরঞ্জন দত্ত
  • চিত্তরঞ্জন দাশ
  • ছবিতে আমাদের গুনীজন
  • জয়গন
  • জয়নুল আবেদিন
  • জসীমউদ্দীন মণ্ডল
  • জহির রায়হান
  • জহুর হোসেন চৌধুরী
  • জামাল নজরুল ইসলাম
  • জামিলুর রেজা চৌধুরী
  • জাহানারা ইমাম
  • জিতেন ঘোষ
  • জিয়া হায়দার
  • জিয়াউর রহমান
  • জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী
  • জুয়েল আইচ
  • জোবেরা রহমান লিনু
  • জোহরা বেগম কাজী
  • জ্ঞান চক্রবর্তী
  • জ্যোতি বসু
  • জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা
  • জ্যোৎস্না খাতুন
  • ট্রাস্টি বোর্ড
  • তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া
  • তরুবালা কর্মকার
  • তাজউদ্দীন আহমদ
  • তিতুমীর
  • ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী
  • দিলওয়ার খান
  • দীনেশ গুপ্ত
  • দুলু বেগম
  • দ্বিজেন শর্মা
  • ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত
  • নভেরা আহমেদ
  • নভেরা আহমেদ
  • নয়ন মিয়া
  • নলিনী দাস
  • নাজমুল হক
  • নিজাম উদ্দিন আহমদ
  • নিতুন কুন্ডু
  • নির্মলেন্দু গুণ
  • নীলিমা ইব্রাহিম
  • নীলুফার ইয়াসমীন
  • নুরজাহান
  • নূর মোহাম্মদ শেখ
  • নূরজাহান বেগম
  • নূরজাহান বেগম (ময়মনসিংহ)
  • নেত্রকোণার গুণীজন
  • নেপাল নাগ
  • পার্থ প্রতীম মজুমদার
  • পূর্ণেন্দু দস্তিদার
  • প্রতিভা মুৎসুদ্দি
  • প্রফুল্ল চাকী
  • প্রভারাণী মালাকার
  • প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
  • ফজল শাহাবুদ্দীন
  • ফজলুর রহমান খান
  • ফজলে হাসান আবেদ
  • ফয়েজ আহমদ
  • ফররুখ আহমদ
  • ফরিদা পারভীন
  • ফিরোজা বেগম
  • ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী
  • ফেরদৌসী রহমান
  • ফেরদৌসী রহমান
  • ফ্লাইট সার্জেন্ট আব্দুল জলিল
  • ফ্লোরা জাইবুন মাজিদ
  • বদরুদ্দীন উমর
  • বশির আহমেদ
  • বশিরন বেগম
  • বশীর আল্‌হেলাল
  • বাদল গুপ্ত
  • বিনয় বসু
  • বিনোদবিহারী চৌধুরী
  • বিপিনচন্দ্র পাল
  • বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল
  • বুলবুল আহমেদ
  • বেগম রোকেয়া
  • বেগম শামসুন নাহার মাহমুদ
  • বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর
  • বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর
  • ব্লগ
  • ভগৎ সিং
  • ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়
  • ভিডিও
  • মঙ্গল পান্ডে
  • মজনু শাহ
  • মণি সিংহ
  • মণিকৃষ্ণ সেন
  • মতিউর রহমান
  • মনোনয়ন
  • মনোরমা বসু
  • মমতাজ বেগম
  • ময়না বেগম
  • মশিউর রহমান
  • মহাদেব সাহা
  • মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর
  • মামুন মাহমুদ
  • মামুনুর রশীদ
  • মায়া রাণী
  • মারিনো রিগন
  • মালেকা বেগম
  • মাহমুদুল হক
  • মাহেলা বেওয়া
  • মীর শওকত আলী
  • মুকশেদ আলী
  • মুকুন্দদাস
  • মুকুল সেন
  • মুক্তিযুদ্ধ
  • মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ‘মহিমা তব উদ্ভাসিত’
  • মুক্তিসংগ্রাম
  • মুজফফর আহমদ
  • মুনীর চৌধুরী
  • মুন্সি আব্দুর রউফ
  • মুর্তজা বশীর
  • মুস্তাফা নূরউল ইসলাম
  • মুস্তাফা মনোয়ার
  • মুহ. আব্দুল হান্নান খান
  • মুহম্মদ আবদুল হাই
  • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
  • মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
  • মুহাম্মদ ইঊনূস
  • মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
  • মুহাম্মাদ কুদরাত-এ-খুদা
  • মূলপাতা
  • মেহেরজান বেগম
  • মোহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী
  • মোঃ আওলাদ হোসেন খান
  • মোঃ ইসমাইল হোসেন
  • মোঃ শফিকুল আনোয়ার
  • মোজাফফর আহমদ
  • মোনাজাতউদ্দিন
  • মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী
  • মোয়াজ্জেম হোসেন
  • মোরশেদুল ইসলাম
  • মোহাম্মদ আবদুল জব্বার
  • মোহাম্মদ কিবরিয়া
  • মোহাম্মদ মনসুর আলী
  • মোহাম্মদ মোর্তজা
  • মোহাম্মদ রুহুল আমিন
  • মোহাম্মদ হামিদুর রহমান
  • মোহাম্মাদ আব্দুল কাদির
  • মোহিউদ্দীন ফারুক
  • যতীন সরকার
  • যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়
  • যোগেশ চন্দ্র ঘোষ
  • রওশন আরা রশিদ
  • রওশন জামিল
  • রংগলাল সেন
  • রণদাপ্রসাদ সাহা
  • রণেশ দাশগুপ্ত
  • রফিকুন নবী
  • রফিকুল ইসলাম
  • রবি নিয়োগী
  • রশিদ চৌধুরী
  • রশীদ তালুকদার
  • রশীদ হায়দার
  • রহিমা
  • রাজিয়া খান
  • রাজুবালা দে
  • রাণী হামিদ
  • রাবেয়া খাতুন
  • রাবেয়া খাতুন তালুকদার
  • রামকানাই দাশ
  • রাশীদুল হাসান
  • রাসবিহারী বসু
  • রাসমণি হাজং
  • রাহিজা খানম ঝুনু
  • রাহেলা বেওয়া
  • রিজিয়া রহমান
  • রেহমান সোবহান
  • রোনাল্ড হালদার
  • লীলা নাগ
  • লুকাস মারান্ডী
  • শওকত আলী
  • শওকত ওসমান
  • শম্ভু আচার্য
  • শরীয়তুল্লাহ
  • শহীদ খান
  • শহীদ সাবের
  • শহীদুল্লা কায়সার
  • শাকুর শাহ
  • শামসুন নাহার
  • শামসুর রাহমান
  • শামীম আরা টলি
  • শাহ আব্দুল করিম
  • শাহ মোঃ হাসানুজ্জামান
  • শিমুল ইউসুফ
  • শেখ আবদুস সালাম
  • শেখ মুজিবুর রহমান
  • সকল জীবনী
  • সতীশ পাকড়াশী
  • সত্যেন সেন
  • সন্‌জীদা খাতুন
  • সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য
  • সফিউদ্দিন আহমদ
  • সমাজবিজ্ঞানী নুরুল ইসলাম
  • সরদার ফজলুল করিম
  • সহযোগিতা
  • সাইদা খানম
  • সাঈদ আহমদ
  • সাখাওয়াত আলী খান
  • সাবিত্রী নায়েক
  • সামিনা খাতুন
  • সালমা সোবহান
  • সালাহ্উদ্দীন আহমেদ
  • সাহিত্য
  • সাহিত্য গবেষণা
  • সিরাজুদ্দিন কাসিমপুরী
  • সিরাজুদ্দীন হোসেন
  • সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
  • সুকুমার বড়ুয়া
  • সুধীন দাশ
  • সুফিয়া আহমেদ
  • সুফিয়া কামাল
  • সুভাষ চন্দ্র বসু
  • সুরাইয়া
  • সুলতানা সারওয়াত আরা জামান
  • সুহাসিনী দাস
  • সূর্য বেগম
  • সূর্যসেন
  • সেলিনা পারভীন
  • সেলিনা হোসেন
  • সেলিম আল দীন
  • সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্‌
  • সৈয়দ নজরুল ইসলাম
  • সৈয়দ মাইনুল হোসেন
  • সৈয়দ শামসুল হক
  • সৈয়দ হাসান ইমাম
  • সোনাবালা
  • সোমেন চন্দ
  • স্বেচ্ছাসেবক
  • হবিবুর রহমান
  • হাজেরা খাতুন
  • হাতেম আলী খান
  • হামিদা খানম
  • হামিদা বেগম
  • হামিদা হোসেন
  • হামিদুর রাহমান
  • হালিমা খাতুন
  • হাশেম খান
  • হাসান আজিজুল হক
  • হাসান হাফিজুর রহমান
  • হাসিনা বানু
  • হীরামনি সাঁওতাল
  • হুমায়ুন আজাদ
  • হুমায়ূন আহমেদ
  • হেনা দাস
  • হেরাম্বলাল গুপ্ত

© 2025 JNews - Premium WordPress news & magazine theme by Jegtheme.