বামপন্থী দল করতেন আজিজ, যিনি বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীরদের পরিবারের ছেলেমেয়েদের গৃহশিক্ষক ছিলেন। আজিজ ছিলেন দুধ বিক্রেতার ছেলে। তাঁকে তাঁরা আজিজ ভাই বলে ডাকতেন। বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর যখন ক্লাস থ্রি কিংবা ফোর-এ পড়তেন তখন একদিন আজিজ ভাই তাঁদেরকে বললেন, তোমরা তো বই পড়তে চাও, চলো তোমাদেরকে একটি লাইব্রেরী করে দেই। তিনি একটা ঘরের মধ্যে তিন-চারটা কাঠের বাক্স আনলেন এবং সেখানে বেশকিছু বই রাখলেন। বইগুলোর মধ্যে সবই ছিল বামপন্থী বই। তাঁরা সেগুলো ভালভাবে না বুঝলেও পড়তেন। ছোটদের রাজনীতি, ছোটদের অর্থনীতি সেসময় খুব চালু ছিল। তাঁদের বাসা থেকে স্কুল বেশ দূরে ছিল। তাঁরা একদিন স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হয়েছেন এমনসময় দেখলেন, আজিজ ভাইকে কোমড়ে দড়ি বেঁধে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর দৌড়ে যেয়ে তাঁর বাবাকে কথাটা বললেন। তাঁর বাবা তাঁদেরকে নিয়ে থানায় গেলেন। থানার বড় দারোগা বললেন, আজিজ সাংঘাতিক লোক, সে ব্রিটিশ সরকারকে উচ্ছেদ করার জন্য নানা ধরনের গোপন কাজ করছে, সেসব কাগজপত্র আমরা পেয়েছি এবং তাঁর শাস্তি হবে।
আজিজ ভাইকে থানায় চালান দেয়া হল। এক/দেড় বছর পর আজিজ ভাই ছাড়া পেলেন এই শর্তে, তিনি আর ঝালকাঠিতে থাকতে পারবেন না, তিনি বরিশাল চলে যাবেন। আর অল্প বয়সী ছেলেদের মাথা যেন বিগড়ে দিতে না পারেন সেকারণে তিনি তাদের সাথে মিশতে পারবেন না। আজিজ ভাই সপ্তাহ খানেক পরে বোরহান উদ্দীন খানদের বাড়িতে এলেন এবং তাঁদেরকে বললেন, আমার সাথে হয়তো তোমাদের আর দেখা হবে না। আমি খুব চেষ্টা করেছি তোমরা যাতে বুঝতে পার জীবনটা কিভাবে চলছে না চলছে, আর হিন্দু মোসলমান ভেদাভেদের মধ্যে যাবে না এগুলো খারাপ। আমি যেভাবে তোমাদেরকে বই পত্র যোগাড় করে দিয়েছি, পড়তে বলেছি, সেভাবেই চলবে।
আজিজ ভাই এবং তাঁর গড়ে দেয়া লাইব্রেরির বই বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীরকে রিদ্ধ করেছে। এখান থেকেই গড়ে উঠেছে তাঁর পড়ার অভ্যাস। আর সেকারণেই তিনি পরবর্তীতে এ দেশের শিল্প সমালোচক, প্রবন্ধকার, গল্পকার ও কবি হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছেন। ছয় দশকের বেশি সময় ধরে বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর অবাধে পদচারণা করেছেন শিল্প সাহিত্যের নানা পথে । সেই কিশোর বয়স থেকে আজ অবধি মানুষের বাসযোগ্য সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চিন্তা ও কর্মে নিযুক্ত আছেন তিনি।
কুমিল্লার চাঁদপুরের গুলবাহার গ্রামে ১৯৩৮ সালে বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীরের জন্ম। তাঁর বাবা আশেক আলী খান সরকারী প্রাইমারী স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ছিলেন। মার নাম সুলতানা বেগম। তাঁর বাবা ছিলেন চাঁদপুর এলাকার প্রথম মুসলিম গ্র্যাজুয়েট। বাবা যখন ডিগ্রি পাস করেন তখন হাজীগঞ্জের বড় মসজিদের সামনে তাঁকে বসিয়ে সবাইকে দেখানো হয়েছিল মুসলমান পরিবারের একজন বি এ পাস করেছে। সেজন্য তিনি খুব পরিচিত হয়ে গিয়েছিলেন এবং তাঁর সুবাদে বোরহান উদ্দীন খানরাও এলাকায় বেশ পরিচিত ছিলেন।
তাঁর বাবার চাকরির কারণে তাঁদের ছেলেবেলা কেটেছে বরিশালের ঝালকাঠিতে। বরিশালের ঝালকাঠিতে ভুকৈলাশ জমিদারদের জমিদারী ছিল। তাঁর ছেলেবেলায় চারিদিকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন চলছিল। বরিশালের ঝালকাঠী থানায় একটি স্বদেশী স্কুল ছিল , এই স্কুলটি করেছিল ভুকৈলাশ জমিদাররা। ব্রিটিশ সরকার সেই স্কুল তুলে দিয়ে সেখানে একটি সরকারী স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীরের বাবাকে সেখানে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়ে আসা হয়। এরপর আস্তে আস্তে অন্যান্য শিক্ষকরা আসা শুরু করেন। এসব শিক্ষকদের মধ্যে হিন্দু, মুসলমান সবাই ছিলেন। ঝালকাঠি ছিল বিষখালি নদী বা জীবনান্দ দাশের নদীর পড়ে অবস্থিত। ছেলেবেলায় দুর্ভিক্ষের বিভীষিকা দেখেছেন তিনি। ঝালকাঠিতে তিনি ঝালকাঠি সরকারী হাইস্কুলে পড়তেন।।
দেশ তখন ভাগাভাগি হতে চলেছে। বাবার স্কুলের চাকরির মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছে। তাঁর বড় ভাই তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। তাঁর বাবা বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীরকে বললেন, তুমি ঢাকাতে যেয়ে ভর্তি হও, তবে আমি তোমাদের সব ভাইবোনের পড়ার খরচ চালাতে পারব না। বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর বললেন, বড় ভাই যখন ওখানে পড়ছেন তখন একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে। তাঁর বাবা চাঁদপুরে ফিরে গেলেন এবং সেখানে তিনটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করলেন। এই স্কুলগুলো নিয়েই তিনি বাকি জীবন কাটিয়েছেন।
বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর যখন ঢাকায় এসে মুসলিম গভর্নমেন্ট হাইস্কুলে ভর্তি হলেন তখন দেশ ভাগ হয়ে গিয়েছে। এই স্কুলের একটি মাত্র হোস্টেল ছিল এবং তারা সেখানেই থাকতেন। পরবর্তীতে এটি সরকার দখল করে নিয়েছে । তখন তাঁর থাকার জায়গা নেই। তিনি এবং তাঁর বাবা থাকার জায়গার জন্য এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছেন কিন্তু কোন জায়গায় সুবিধা করতে পারছেন না। মেট্রিক পরীক্ষা কয়েকদিন পরেই শুরু হবে কিন্তু তার থাকার জায়গা নেই। তার বাবা খুব চিন্তাই পড়লেন। অন্তত মেট্রিক পরীক্ষা পর্যন্ত তো কোথাও থাকতে হবে। তখন তাঁর স্কুলের গেইম টিচার ইজ্জত আলী স্যার তাঁর বাবাকে বললেন, তুমি চিন্তা করো না, পরীক্ষা পর্যন্ত সে আমার বাসায় থাক, পরীক্ষা শেষে বাড়ি যাবে। ১৯৪৮ সালে সেই স্যারের বাসায় থেকে তিনি মেট্রিক পরীক্ষা দেন এবং পাস করেন।
মুসলিম গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের সামনে একটি মাঠ ছিল, যার নাম পাকিস্তান মাঠ। এই মাঠে বিকেল বেলা তিনি,শামসুর রাহমান, হাসান হাফিজুর রহমান, আলাউদ্দীন আল আজাদ, সাইয়িদ আতিকুল্লাহ প্রমুখ ব্যাক্তিদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন । তাঁদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট ছিলেন। হাসান হাফিজুর রহমান ছিলেন সবচেয়ে বেশি সংগঠন চেতন ব্যাক্তি। তিনি একদিন বললেন, এখানে সবাই হাতের লেখা পত্রিকা বের করে, আমরাও একটা পত্রিকা বের করব। সবাই রাজি হলেন। ঠিক হলো এখানে যারা আড্ডা দিচ্ছেন সবাইকে লেখা দিতে হবে। বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর বললেন, আমি তো লিখি না, শুধু আড্ডা দেই। হাসান হাফিজুর রহমান বললেন, এসব কোন কথা শুনতে চাই না, আপনাকে লেখা দিতে হবে সামনের সপ্তাহের মধ্যে। তখন সবাই সবাইকে আপনি বলতেন। পত্রিকার নাম ঠিক হলো ‘রাঙাপ্রভাত’। সাবার লেখা জোগাড় হলো শুধু বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীরের লেখা বাদ থাকল। বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর বললেন, আমি লিখতে পারব না, আমি বাড়ি যাব। হাসান হাফিজুর রহমান নাছোরবান্দা বললেন, এসব হবে না, লেখা দিয়ে বাড়ি যান, না দিয়ে যেতে পারবেন না।
পাকিস্তান মাঠের কোনায় ইজ্জত আলী স্যারের এক আাত্মীয়ের বাড়ি। তিনি প্রায় এদিকে যাওয়া আসা করতেন। তিনি একদিন এসে দেখেন বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর মন খারাপ করে বসে আছেন। ইজ্জত আলী স্যার হাসান সাহেবকে বললেন, ব্যাপার কি খানের মন খারাপ কেন? হাসান সাহেব ব্যাপারটা বললেন। স্যার বললেন, ঠিক আছে, আমি দায়িত্ব নিচ্ছি ও লিখবে। এরপর তিনি লেখা জমা দিলেন, তবে তিনি কি লিখলেন জানেন না, কোন একটা লেখা হাসান হাফিজুরের হাতে গছিয়ে দিয়ে তিনি সোজা বাড়ি চলে গেলেন।
মেট্রিক পাস করবার পর ফুলবাড়িয়ার কাছে অবস্থিত ঢাকা কলেজে তিনি ভর্তি হন। তার সহপাঠি ছিলেন ওয়াহিদুল হক। তিনি সারাক্ষণ গানবাজনা নিয়ে থাকতেন। বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর তাঁর পিছু পিছু থাকতেন । সেইসময় তেভাগা আন্দোলন শুরু হয়েছে। হাসান হাফিজুর রহমান বললেন, তেভাগা নিয়ে সবাইকে লেখা দিতে হবে। যিনি গদ্য লিখতে চান তিনি গদ্য লিখবেন, যিনি পদ্য লিখতে চান তিনি পদ্য লিখবেন। তেভাগা আন্দোলন চলতে চলতে একুশে ফেব্রুয়ারি এসে গেল। তেভাগা আন্দোলন সবাইকে যেমন নাড়া দিয়েছিল একুশে ফেব্রুয়ারিও সবাইকে তেমনিভাবে নাড়া দিল।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টার দিকে মিটিং শুরু হলো। বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর, হাসান হাফিজুর রহমান সহ আরও অনেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আম গাছ তলায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। সভাপতি গাজীউল হক। ছাত্রনেতা আব্দুল মতিন উপস্থিত। ১৪৪ ধারা ভাঙ্গা হবে কি না সিদ্ধান্তে আসা হয়নি তখনও। সম্মিলিত ছাত্রজনতার উদ্দেশ্যে আব্দুল মতিন বললেন, ‘কি ১৪৪ ধারা ভাঙ্গবো?’ উপস্থিত সবাই বললেন -‘ভাঙ্গবো ভাঙ্গবো’। ছাত্রীরা বললেন- ‘১৪৪ ধারা ১০০ বার ভাঙ্গবো’। সিদ্ধান্ত হলো ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার। ছাত্ররা ১০ জন করে একটি দল ও ছাত্রীরা ৪ জন করে একটি দলে ভাগ হল। ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে এগিয়ে যাবে তাঁরা। ছাত্রদের প্রথম দলে ছিলেন সাইয়িদ আতিকুল্লাহ। আর মেয়েদের মধ্যে ছিলেন ফরিদা বারি মল্লিক। প্রথম দলটি ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, রাজবন্দীদের মুক্তি চাই’, চল চল এসেমব্লীতে চল, স্লোগান দিয়ে বেরিয়ে এসে পুলিশের বন্দুকের নল জোর করে সরিয়ে এগিয়ে গেল। পরবর্তী দলও একই কাজ করে। প্রথম ২ টি দল দেখে পুলিশ বুঝতে পারেনি কি করবে। পরের ২ টি দলকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এবার ছাত্ররা বন্যার পানির মতো বেরিয়ে আসে। টিআর গ্যাস, লাঠি চার্জ শুরু হয়। স্লোগানে স্লোগানে মুখর এলাকা। কিছু ছাত্র গ্রেফতার হয়। সাধারণ জনতা রিক্সাওয়ালারাও মিছিলে যোগ দেয়। বোরহান উদ্দীন খান ও হাসান হাফিজুর রহমানরাও মিছিলের সাথে এগিয়ে যান । কিছুদূর যাওয়ার পর হাসান হাফিজুর রহমান বললেন, আর বেশিদুর যাওয়ার দরকার নেই জরুরি একটা কাজ আছে। বোরহান উদ্দীন খান জিজ্ঞেস করলেন, কোথায়? । হাসান হাফিজুর রহমান বললেন, চলেন আমার সাথে । তাঁরা দ্রুত হেঁটে সেন্ট্রাল জেলের উল্টো দিকে ক্যাপিটাল প্রেসে চলে আসেন। শফিক সাহেব বলে একজন ভদ্রলোক এই প্রেস চালাতেন। এই শফিক সাহেব গোপনে কমিউনিষ্ট পার্টির সাথে যুক্ত ছিলেন। প্রেসের মধ্যে ঢুকে হাসান খুব দ্রুত হাতে কিসব লিখলেন এবং শফিক সাহেবকে বললেন, শফিক ভাই এটা আপনাকে এক্ষুনি ছেপে দিতে হবে। আপনার বিশ্বস্ত লোক ছাড়া যেন এ কথা কেউ না জানে। এক ঘন্টার মধ্যে ছাপানো হয়ে গেল। হাসান হাফিজুর রহমান তখন বোরহান উদ্দীন খানকে বললেন, আপনাকে এই লিফলেটগুলো নিয়ে উর্দুরোডে যেতে হবে। বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর তখন হাসান হাফিজুর রহমানের অনুগত ছিলেন। তাঁরা একটা ঝুড়িতে লিফলেটগুলো ভরে উপরে পেপার দিয়ে ঢেকে তাকে দিলেন। উর্দুরোডে ওয়াহিদুল হকের বাড়ি এবং তার ঠিক উল্টোদিকে সেন্ট্রাল জেল। বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর লিফলেটগুলো নিয়ে ওয়াহিদুল হকের বাড়ি এলেন। এই বাড়ির পাশেই মসজিদ । তিনি মসজিদের মিনারে উঠে দেখলেন যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা জেলের ভিতরে হাঁটাহাঁটি করছেন। বোরহান উদ্দিন খান তাদেরকে দেখে কিছু লিফলেট ছুঁড়ে দিলেন। লিফলেটগুলো পড়ার পর তাঁদের মনের জোড় খুব বেড়ে গেল। তাঁরা বোরহান উদ্দিন খানকে দেখে সালাম দিলেন, তিনিও তাঁদেরকে দেখে সালাম দিলেন। এরপর তিনি তাড়াতাড়ি মিনার থেকে নেমে হোস্টেলের দিকে চলে এলেন কারণ তিনি জানতেন ওখানে যদি তিনি বেশিক্ষণ থাকেন তাহলে তাঁকেও গ্রেফতার করবে পুলিশ।
১৯৫২ সালে বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ইন্টারমিডিয়েট পাস করলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিটিক্যাল সায়েন্সে অনার্স ভর্তি হলেন। তিনি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে তখন পাকিস্তান মাঠে যেসব সিনিয়র বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন তাঁরা ফাইনাল ইয়ারে বা কেউ কেউ পাস করে বেরিয়েছেন। তাঁরা সবাই লেখালেখি, বই পড়া এগুলোর সাথে যুক্ত ছিলেন এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাঁদের খুব পছন্দ করতেন। জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, খান সরওয়ার মুর্শিদ এসব শিক্ষকদের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন তাঁরা। তখন ঢাকা শহরে বই পাওয়া খুব কঠিন বিষয় ছিল। একজন একটা বই কিনলে অন্যরা আর সেই বই কিনতেন না। অন্য বই কিনতেন, যেন একটা বই সবাই ভাগাভাগি করে পড়তে পারেন।
হাসান হাফিজুর রহমানের একুশে ফেব্রুয়ারির বই প্রকাশিত হলো। যেটা হাসান হাফিজুর রহমান প্রথম প্রকাশ করেন । এখনকার বই নয় কারণ এখনকার বইটিতে অনেক যোগবিয়োগ হয়েছে। কিন্তু প্রথমটাতে সেব্যাপার ছিল না। এই বই প্রকাশ হওয়ার পর পরই দাঙ্গার ৫টি গল্প নিয়ে একটি বই বের হলো। তখন যে দাঙ্গা হয়েছিল সেই দাঙ্গর উপর তাঁরা নিজেরা ৫টি গল্প লিখে বইটি বের করেছিলেন। এরপর পরিচয় পত্রিকাতে বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর একটি গল্প লিখে পাঠিয়েছিলেন তখন সেই গল্পটি ছাপা হয়েছিল। তখন তিনি ইন্টারমিডিয়েট পড়ছিলেন। পরিচয়ে বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের লেখা গল্পটি নিয়ে হৈ চৈ পড়ে গিয়েছিল। এরপর আরও প্রায় তিনটি গল্প বের হলো পরিচয়ে। তাঁকে নিয়ে বন্ধুরা হৈ চৈ করছেন। তিনিও বন্ধুদেরকে নিয়ে হৈ চৈ করছেন। কারণ তখন তাঁরাই দেশের বড় লেখক হিসেবে পরিচিত হচ্ছেন। যাঁরা কলকাতা থেকে এসেছেন তাঁরা অতটা থৈ পাচ্ছেন না। কারণ বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীররা তো তাঁদেরকে জায়গা দিচ্ছেন না।
সাহিত্যিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি তাঁরা রাজনীতির সাথেও যুক্ত ছিলেন। তখন দুটি রাজনৈতিক দল ছিল। শেখ মুজিবের আওয়ামি লীগ এবং কমিউনিষ্ট পার্টি যেখানে মওলানা ভাসানী যুক্ত ছিলেন। তাঁরা আওয়ামি লীগ ও বাম দল দুটির সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। দুই দলের সভা সমাবেশে তাঁরা যোগ দিতেন। তাঁদেরকে মুজিব এবং ভাসানী দুজন সমানভাবে স্নেহ করতেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশিওলজির শিক্ষক ছিলেন। তখন স্যোশিওলজি পলিটিক্যাল সায়েন্সের একটি অংশ হিসেবে পড়ানো হতো। আইয়ুব খানের সময় বোরহান উদ্দিন খানসহ ৫ জন শিক্ষককে রাস্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয়। বের করে দেয়ার পর তিনি বছর খানেক বেকার ছিলেন। কারণ এই ঘটনা শোনার পর তাঁকে আর কেউ চাকরি দিতে চায়নি। কারণ আইয়ুব খানের আমলে কার ঘাড়ে কয়টা মাথা আছে যে আইয়ুব খান যাকে বের করে দিয়েছে তাঁকে চাকরি দিবে। দেশ স্বাধীন হবার পর মোজাফ্ফর সাহেব ছিলেন প্রথম ভাইস চ্যান্সেলর। তিনি বোরহান উদ্দিন খানের সরাসরি শিক্ষক ছিলেন। তিনি বোরহান উদ্দিন খানকে ডেকে বললেন, দেশ পরাধীন অবস্থায় আপনার উপর একটা অন্যায় করা হয়েছে, তাঁকে যে বের করে দেয়া হয়েছিল সেটার কথা উল্লেখ করে তিনি এ কথা বললেন। মোজাফ্ফর সাহেব বললেন, আমি চাই আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন। আপনি বাইরে যে কাজ করছেন অত বেতন দিতে পারব না, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন কম। আপনি আসলে আমরা খুশি হব। বোরহান উদ্দিন খান বললেন, আসব স্যার। বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর স্যোশিওলজির টিচার হিসেবে যোগ দিলেন। তবে যোগ দেয়ার ছয় মাস থেকে একবছরের মাথায় তিনি আবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত হলেন। তার একটি বড় কারণ তখন নানা মতবাদ, নানা ব্যাপার ঘটছে। বলা হলো সরকারবিরোধী একটা অংশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে। তিনি আবার বিতাড়িত হলেন। তখন রাজ্জাক স্যার ছিলেন পলিটিক্যাল সায়েন্সের প্রধান। তিনি বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীরকে বললেন, আবার যখন স্যোশিওলজি বিভাগ থেকে বিতাড়িত হয়েছেন, তখন আপনার আর ঐ বিভাগে যাওয়ার দরকার নেই, আপনি আমার বিভাগে চলে আসেন। একথা বলে তিনি একটা কাগজে কিসব লিখেলেন। এরপর বোরহান উদ্দীন খান পলিটিক্যাল সায়েন্সে যোগ দিলেন। এখানে থাকা অবস্থায় একবছরের মাথায় তিনি ইংল্যাণ্ডে চলে যান। আসলে তখনও তাঁর উপর প্রচণ্ড চাপ ছিল। ১৯৭২ সালে তিনি ইংল্যাণ্ডে গেলেন অ্যানথ্রোপলজিতে পড়াশানা করার জন্য। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয় ছিল না। ওখানে থাকা অবস্থায় মুজিব হত্যা, জেল হত্যার ঘটনা ঘটে। ডিগ্রি শেষে তিনি ১৯৭৫-৭৬ এর দিকে দেশে ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিটিক্যাল সায়েন্সে যোগ দেন। তখন তিনি বেলা ১০-১১ টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিটিক্যাল সায়েন্স পড়াতেন। এরপর তিনি আর্ট ইনস্টিটিউটে হিসট্রি অব আর্ট পড়াতেন। পরে একটা দেড়টার দিকে চলে যেতেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যানথ্রোপলজি পড়ানোর জন্য। এভাবে একবছর করার পর তিনি ভাবলেন, তাঁর শরীর আর কুলাচ্ছে না। এসময়ই তিনি জাপানের একটা নামকরা ইনস্টিটিউট থেকে একটা অফার পেলেন। শর্ত ছিল জাপানে যেয়ে কাজ করতে হবে, গ্রামে যেয়ে থাকতে হবে। তারা বলল, তুমি তো জাপানি জান না, ইংরেজি জান, আমরা তোমার সাথে একটা দোভাষী দিয়ে দিব। তিনি জাপানে যান এবং সেখানে একবছর কাজ করেন। এরপর তিনি আরও তিনবার সেখানে যান এবং কাজ করেন। এরপর তিনি প্যাসিফিকের ছোট দ্বীপ ফিজিতে যান। ১৯৮৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন। গবেষণার কাজে তিনি ফ্রান্সের প্যারিসে বেশকিছুদিন ছিলেন। প্যারিস থেকে তিনি গিয়েছিলেন সেনেগালে। প্যারিসে তিনি বিভিন্ন সময়ে চারবার গিয়েছিলেন। তিনি সেখানে একটি নামকরা ইনস্টিটিউটে পড়াতেন।
পড়াশুনা শেষ করে প্রথম চাকরিতে ঢোকার পর তিনি সিলেটের এক অভিজাত পরিবারের মেয়ে নুজহাতকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির একমাত্র পুত্র।
পল্লবীতে তিনি একটি ছোটখাট বাড়ি কিনেছিলেন। ২৫ শে মার্চের রাত্রে তিনি তাঁর পরিবারকে নিয়ে সেখানে ছিলেন। রাতে তাঁরা ছাদে দাঁড়িয়ে দেখলেন পাক সেনারা কোথায় কোথায় আগুন লাগাচ্ছে। বিহারীরা মানুষজন খুন করছে এসবও দেখলেন তাঁরা ছাদে দাঁড়িয়ে। রাতটা এভাবে কাটানোর পর ওখানে এক বিহারি পরিবার ছিল তাঁদেরকে বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর খুব পছন্দ করতেন। সেই বিহারী এসে তাঁদেরকে বললেন, আপনারা এখানে নিজের বাড়িতে থাকবেন না, আমার বাড়িতে চলেন। ২৬ তারিখ তাঁরা ওই বাড়িতে থাকলেন। বোরহান উদ্দীন খানের একটি ছোট গাড়ি ছিল ওটা নিয়ে তিনি পরিবারসহ ২৭ তারিখে ধানমন্ডির উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন । খানিকদূর যাওয়ার পর তাঁরা দেখলেন রাস্তার দুপাশে শুধু লাশ পড়ে আছে। এভাবে তাঁরা ধানমন্ডি খেলার মাঠের কাছে এসে পৌঁছালেন। খেলার মাঠের উল্টা দিকে কিছু সরকারি কোয়ার্টার ছিল, সেখানকার একটি কোয়ার্টারে তাঁর স্ত্রীর এক দুলাভাই থাকতেন, তাঁরা সেখানে উঠলেন। ওই বাড়িতে দুই মাস থাকার পর ধানমন্ডির ১৮ নাম্বার রোডে নিজেদের বাসায় ওঠেন তাঁরা। তখন তিনি ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের একটি প্রজেক্টে কাজ করতেন।
মুক্তিযুদ্ধে বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের রণকৌশলটা হলো একটু ভিন্ন, তিনি বেছে নিলেন বুদ্ধিবৃত্তিকে। প্রকাশনার মাধ্যমে উদ্দীপ্ত করার চেষ্টা করলেন মুক্তিযোদ্ধাদের। প্রথমে এ প্রকাশনার নাম ছিল ‘স্বাধীনতা’, পরে নামকরণ করেন ‘প্রতিরোধ’। মুক্তিযুদ্ধের সময় অবরুদ্ধ ঢাকায় পাকিস্তানিদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে গেরিলাদের মাঝে ঢাকা শহরের মানচিত্র সরবরাহের কাজটি করা ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং দু:সাহসিকতার। আর জীবন বাজি রেখে এই দু:সাহসিকতার কাজটি করেছেন বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীর।
২৩ মার্চ, ২০২০ (বয়স ৮৪) তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী
বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর : পিতা : আশেক আলী খান; মাতা : সুলতানা বেগম; স্ত্রী : নুজহাত জাহাঙ্গীর। জন্মস্থান ও জন্মতারিখ : চাঁদপুর, ৯ই জানুয়ারি ১৯৩৬। বর্তমান ঠিকানা : বাড়ি # ১৩, এপার্টমেন্ট # ৪০২, সড়ক # ১৩৮, গুলশান # ১, ঢাকা-১২১২। স্থায়ী ঠিকানা : গুলবাহার, কচুয়া, জেলা : চাঁদপুর।
শিক্ষা : মাধ্যমিক : ঢাকা সরকারি মুসলিম হাই স্কুল (১৯৫০); উচ্চ মাধ্যমিক : ঢাকা কলেজ (১৯৫২); স্নাতক সম্মান (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৫৫); স্নাতকোত্তর (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৫৬); পিএইচডি : ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইংল্যান্ড (১৯৭৪); অভিসন্দর্ভ : Differentiat ion, Polarisation and Confrontation in Rural Bangladesh।
পেশা : অধ্যাপনা। অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। প্রাক্তন উপ- উপাচার্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রকাশিত গ্রন্থ : প্রবন্ধ : স্বদেশ ও সাহিত্য (১৯৬৯); জার্নাল ১৯৭১ (১৯৭২); মাইকেলের জাগরণ ও অন্যান্য প্রবন্ধ (১৯৮৩); নিস্তব্ধতার সংস্কৃতি (১৯৮৩); বাংলাদেশের নাম (১৯৮৪); মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদ্রোহ সাহিত্যে ও রাজনীতিতে (১৯৮৭); এক অনিশ্চিত বসন্তের কাল (১৯৯১); বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চল ও শ্রেণীসংগ্রাম (১৯৯৩); বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদ এবং মৌলবাদ (১৯৯৩); রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা (১৯৯৫); আধুনিকতা এবং জাতীয়তাবাদ (১৯৯৬); প্রজাতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে (১৯৯৬); শাহাবুদ্দীন (১৯৯৭);Shahabuddin< /font> (১৯৯৭); হত্যার রাজনীতি ও বাংলাদেশ (১৯৯৮); দক্ষিণে (১৩৭৬); কণ্ঠস্বর (১৩৭৪); শ্রাবণে আশ্বিনে (১৩৮১); বাংলাদেশ আন্দোলন ও অন্যান্য প্রবন্ধ (১৯৯৯); সাহিত্যের অভিজ্ঞতা (২০০০); যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও অন্যান্য প্রবন্ধ (২০০০); রাজনৈতিক সময় (২০০২); ইতিহাস নির্মাণের ধারা (২০০৫); নির্যাতনের রাজনীতি বনাম প্রতিরোধের রাজনীতি (২০০৫); ইতিহাস নির্মাণের ধারা, বাংলাদেশ চর্চা (২০০৫); ধর্ম রাষ্ট্র রাজনীতি (২০০৫); পৃথিবীর পথে (২০০৬); শিল্পীর চোখ (২০০৬)।
গবেষণা : Contemporary Painters : Bangladesh (১৯৭৪); চিত্রশিল্প : বাংলাদেশ (১৯৭৪); উপমাহাদেশে গ্রামীণ গবেষণা চর্চা ও প্রাসঙ্গিক সমস্যা (১৯৭৭); বাংলাদেশে ধনতন্ত্রের বিকাশ (১৯৭৮); Differentiat ion, Polarisation and Confrontation in rural Bangladesh(১৯৭৯); বাংলাদেশের লোকশিল্প (১৯৮২); Rural Society, Power Structure and Class Practice (১৯৮২); শিল্পকলার ইতিহাস (১৯৮৫); Problematies of Nationalism in Bangladesh (১৯৮৬); Violence and Consent in a Peasant Society and Other Essays(১৯৯০); কামরুল হাসান (১৯৯১); অপ্রতিরোধ্য রবীন্দ্রনাথ এবং অন্যান্য প্রবন্ধ (১৯৯৬); জয়নুল আবেদিনের জিজ্ঞাসা (১৯৯৬); আধুনিকতা এবং উত্তর আধুনিকতার অভিজ্ঞতা (১৯৯৭);Quamrul Hassan (১৯৯৭); দেশজ আধুনিকতা : সুলতানের কাজ (১৯৯৯); The Quest of Zainul Abedin (২০০০); Nationalism. Fundamentalism and Democracy in Bangladesh (২০০২)।
ছোটগল্প : অবিচ্ছিন্ন (১৯৬০); দূর দুরান্ত (১৯৬৮); বিশাল ক্রোধ (১৯৬৯); মুন্ডহীন মহারাজ (১৯৮১); এক ধরনের যুদ্ধ (১৯৮৫); গণতন্ত্রের প্রথম দিন ও অন্যান্য গল্প (১৯৯২); বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক (১৯৯৭); আগামীকাল বাঁচবার এবং ভালোবাসার (২০০০); গল্প সমগ্র (২০০১); বারুদের গন্ধ চার ধারে (২০০৪)। উপন্যাস : সর্বনাশ চতুর্দিকে (১৩৮১); মহাকাব্য (২০০৩); আমরা যেভাবে বেঁচে আছি (২০০৫)। কবিতা : আমাদের মুখ (১৯৯৩); পুরানো বৃক্ষের ডালপালা (১৯৯৪); মানুষের বুকের মধ্যে (১৯৯৮); আসবাবহীন ঘর (২০০৫); তোমার পছন্দের নীল শার্ট পরে (২০০৬)।
অনুবাদ : সম্রাট জাহাঙ্গীরের আত্মজীবনী (১৯৬২); সংস্কৃতির সমাজতত্ত্ব (১৯৮০); হেমিংওয়ে ফ্রষ্ট ফকনার; The Doctors Who Conquered Yellow Fever : Mark Twain, Henry James. Thomas Wolfe; The Process of Economic Growth।
সম্পাদনা : বাউল গান ও দুদ্দুশাহ (১৯৬৪); বাংলাদেশে নারী নির্যাতন (যৌথ, ১৯৯৩); বাংলাদেমের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং পাকিস্তান সরকারের শ্বেতপত্র (১৯৯৩); India Bangladesh Cooparation Broadening Measures (যৌথ, ১৯৯৭); সমাজ নিরীক্ষণ (১৯৭৬)।
পুরস্কার : বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৯); Foll of Honour. UNESCO and Govt. of France (১৯৮৬); মুজাফফর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার, কলকাতা (২০০৫)।
মৃত্যু: ২৩ মার্চ, ২০২০ (বয়স ৮৪)
তথ্যসূত্র : নভেম্বর ৬, ২০১৫ সালে বোরহান উদ্দীন খান জাহাঙ্গীরের সরাসরি ইন্টারভিউ নেয়া হয়েছিল। তার ভিত্তিতে জীবনীটি করা হয়েছে। এছাড়া সংক্ষিপ্ত জীবনীটি নেয়া হয়েছে বাংলা একাডেমী লেখক অভিধান, প্রধান সম্পাদক : সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ, প্রকাশকাল : সেপ্টেম্বর, ২০০৮ থেকে।