সত্যবাদী, নীতিবান এবং অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল হারুনুর রশীদ খানের সাথে সংস্কৃতি মনস্কা রোকেয়া খানমের যখন বিয়ে হয় তখন রোকেয়ার বয়স মাত্র ১৩। সময়টা ব্রিটিশ শাসনের শেষ দিকে। সময়ের পরিক্রমা আর ইতিহাসের পালা বদলে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়। চলে আসে ১৯৪৮ সাল। রোকেয়া খানম সন্তান সম্ভবা। প্রথম সন্তানের আগমনের প্রত্যাশায় চোখে মুখে স্বপ্ন এঁকে অপেক্ষা করেন এ দম্পতি। এ দম্পতির সাথে আত্মীয় পরিজনও অপেক্ষার প্রহর গণেন। এক আত্মীয় স্বপ্ন দেখেন রোকেয়ার মৃত বাবা তাঁকে বলছেন, রোকেয়ার প্রথম সন্তানের নাম যেন রাখা হয় ‘জোৎস্না’। কিন্তু রোকেয়ার এক দাদীর নাম ‘জোৎস্না’ হওয়ায় তাঁর ফুপুর পরামর্শে প্রথম সন্তানটির নাম ঠিক করা হয় ‘আলো’ ।
১৯৪৮ সাল। লিপ ইয়ার, ফেব্রুয়ারী মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন দিন ২৯ ফেব্রুয়ারীতেই হারুন-রোকেয়া দম্পতির কোলে আসে ‘আলো’। পুরো নাম আবুল কাশেম মোহাম্মদ মামুনুর রাশীদ খান।
পাহাড়ের পাদদেশে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ভাবনদত্ত গ্রাম। দূরে মধুপুরের পাহাড় আর তাঁর উপর দিয়ে বয়ে চলা লাল মাটির আঁকাবাঁকা সড়ক। যেন রমণীর দীঘল চুলের সিঁথি। গ্রাম্য প্রান্তরে ছড়ানো ধইঞ্চা-হেলেঞ্চা লতাগুল্মের ঝোপ। বনে বাদারে কুড়িয়ে পাওয়া বুনো ফল। মধুপুর পাহাড় থেকে নেমে আসা বাঘ-ভাল্লুক-বানর-শুকর-নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী। বাড়ীর পাশের চারিদিকে গাছপালার জঙ্গলে ঘেরা দিনের বেলাতেও আলো ঢুকতে না পারা ‘আন্ধা পুস্কুন্নি’, এমন আলো আঁধারীর অদ্ভুত মায়াময় প্রকৃতির বিচিত্র রুপে সাজানো পৈত্রিক বাড়ীতেই কেটেছে শৈশব কৈশোরের আনন্দময় দিন গুলি। তবে বাবার পোস্টমাস্টারের বদলীর চাকুরী হওয়ায় আর দাদীর মৃত্যুর পর দাদার ২য় বিয়ের ফলে, বাবার সাথে সৃষ্ট পিতামহের দূরত্বের কারণে স্থায়ী হওয়া হয়নি এ গ্রামে।
ভাবনদত্তের এই কোমল প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রিয় বটে কিন্তু সংস্কৃতি মনষ্ক মামাবাড়ীর আকর্ষণ
আরও বেশি ছিল আলোর কাছে। খেলাধুলা, নাটক আর গানের চর্চা ছিল সেখানে। দূর সম্পর্কের মামা রফিক আজাদ বিশিষ্ট কবি আর আশরাফ সিদ্দিকিও ছিলেন কবিতার মানুষ। সব মিলিয়ে সাংস্কৃতিক আবহ আর তাই আগ্রহও বেশী মামা বাড়িতেই।
গারো পাহাড়ের পাদদেশে ময়মনসিংহের গ্রাম ফুলপুর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভাবনদত্তের কাছাকাছি।
মাত্র ৪ বছর বয়সেই ফুলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেবি ক্লাসে লেখাপড়া শুরু। বয়স কম হলেও স্কুলে যাওয়ার উৎসাহ প্রচুর। স্কুলে যাওয়ার পথে খেয়া ঘাট আর নৌকায় চড়ে নদী পার হওয়াটাই
আকর্ষণের নেপথ্যে। যদিও মাত্র ৪-সাড়ে ৪ বছর বয়সী শিশুর নদী পার হবার বিপদের শঙ্কায়, সঙ্গে থাকা বাবার উপস্থিতি বিরক্তিকর আলোর কাছে। বাবা যে কেন বোঝেনা-একা খেয়া পাড়ি দেবার আনন্দ। বড়রা সাথে থাকলে ছোটদের আনন্দটা কি আর জমে!
শিক্ষকরা ভীষণ স্নেহ করেন মেধাবী আলোকে। ফুলপুরে ২য় শ্রেণী শেষে বাবার বদলীর জন্য
টাঙ্গাইলেরই বল্লা এলাকায় ৩য় শ্রেণীতে ভর্তি হন বল্লা প্রাইমারী স্কুলে। পড়াশুনায় মনোযোগী ছেলেটি স্কুলের পড়া স্কুলেই শেষ করে বাড়ী ফিরে মেতে থাকে খেলাধুলা আর পাঠ্যবইয়ের বাইরের পড়া নিয়ে। সাহিত্যপাঠ শুরু তখন থেকেই। বাড়িতে রাখা পত্রিকার মুকুলের মাহফিল, কচি-কাঁচার আসর, ভারত থেকে আসা সন্দেশ, স্টেটসম্যান খোঁড়াক যোগাত পড়বার। আহা বংশাই নদীর নৌকা বাইচ দেখা আর উত্তেজনাকর ফুটবল খেলা কি আনন্দেরই না উৎস! বল্লা হাইস্কুলে নাটক হবে। ‘বিজয় সিংহ’। উৎসাহী সতীনাথ স্যার স্কুল ঘরের পার্টিশন ভেঙে কয়েকটি
চৌকি দিয়ে বানিয়ে ফেললেন মঞ্চ। দর্শক স্কুলের ছাত্র ছাত্রী শিক্ষক। গ্রামের ২/১ জন। আলোকে
তুলে দিলেন মঞ্চে। মঞ্চাভিষেক হল পরবর্তীকালে বাংলা মঞ্চ নাটকে ইতিহাস সৃষ্টিকারী মামুনুর
রশীদের, যে এতক্ষণ ‘আলো’ নামে বর্ণীত হচ্ছিল।
এবার বাবার বদলী এলেঙ্গায়। শুরু হল এলেঙ্গা হাইস্কুলের শিক্ষাজীবন। টিনের ছাউনি দেয়া স্কুলঘর।
সারি সারি বেঞ্চি। স্কুল শুরুর আগেই হাজির বিভিন্ন পোশাকের ছাত্রছাত্রীরা। টাঙ্গাইল শহর থেকে
মেঠোপথ ধরে টুং টাং ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে, স্কুলের ওয়ার্নিং বেল বাজতেই, সাদা ধুতি-পাঞ্জাবী পরা নিত্যানন্দ স্যারের বাই সাইকেলের চাকা- ঢুকে পড়ে স্কুল মাঠে । ব্যাতয় ঘটেনা কোনদিন।
নিত্যানন্দ স্যার প্রধান শিক্ষক। কী চমৎকারই না পড়াতেন দক্ষিণা স্যার। কী আত্মনিবেদন ছাত্রদের প্রতি। পিঠে চাবুকের কালো দাগ ওয়ালা অগ্নি যুগের বিপ্লবী মানুষ দক্ষিনারঞ্জন আইচ। প্রিয় শিক্ষক ‘প্রিয়নাথ’ অংক করান। ঠিক ধরে ফেলেন কে বুঝল, কে না। গ্রামের যেকোন বিপদে সবার আগে
ছুটে যাওয়া লতিফ স্যার। তাঁর প্রথম হিরো। এখনও হিরো বলতে চোখে ভাসে তাঁর মুখ। এলেঙ্গা
হাই স্কুলে ৮ম শ্রেণী শেষ করে ফিরে আসা বল্লায়। এখান থেকেই ১৯৬৩ সালে এসএসসি দেয়া।
বল্লা-এলেঙ্গা নিচু এলাকা। কাছেই খরস্রোতা নদী বংশাই। বর্ষায় ভরপুর মাঠ-ঘাট-খাল-বিল। প্রিয়
ঋতু বর্ষায় নৌকায় করে দূর দূরান্তের আত্মীয় স্বজনদের বাসায় বেড়াতে যাওয়া অনন্য সব স্মৃতির
অংশ।
দেশ ভাগের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। মাঝে মাঝে হঠাৎ ক্লাসের কোন হিন্দু সহপাঠী বন্ধু
অনুপস্থিত। সবাই মিলে তাঁর বাড়িতে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেল স্বপরিবারে চলে গেছে ভারতে।
বন্ধু হারানোর কষ্ট কাউকে বলা যায়না। শৈশবের বন্ধু হারিয়ে এক ধরনের বেদনা বোধ আর শূন্যতা সৃষ্টি হতো। সেই শূন্যতা আরও বাড়িয়ে একদিন চলে গেল ছায়াদি , অশোকা দি এমনকি সহপাঠী অনিমাও। কখনও কখনও শূন্যতাও এক নিদারুন বোঝা।
এলেঙ্গার জমিদার ছিলেন দেবেশ ভট্টাচার্য্য। অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য তাঁরই ছেলে। গণিতের বিখ্যাত পন্ডিত যাদব চক্রবর্তীর মেয়ে ছিলেন দেবপ্রিয়র ঠাকুমা। মামুন দাদু বলেই ডাকেন। দাদু এত সুন্দর উচ্চারণে আলো বলে ডাকেন- মনটাই ভরে যায়। যে যাদব বাবুর পাটিগণিত স্কুলে কষেন তাঁর মেয়েকে দেখছেন সামনে, বিস্ময় আর মুগ্ধতার আলো লাগে আলোর চোখে। কালি উপাসক ভট্টাচার্য্যিদের বাড়িতে হতো বিশাল কালিপূজা। পূজা উপলক্ষে নাট মন্দিরে খ্যামটা নাচ হতো। যাত্রা , পাঠাবলী আরও কতো কি! এ বাড়ির কল্যাণেই শ্রী কৃষ্ণলীলা, রাসলীলা দেখা।
রামায়ন ,মহাভারতের গল্প বলা কথক ঠাকুরের হাতে ১ টি লাঠি। সেটিই কখনও হয়ে যায় তরবারি তো কখনও রথের রশি। মন্ত্রমুগ্ধ আলো। এলেঙ্গার যাত্রা আর বল্লা নগরের কলকাতা থেকে আগত বাবুদের থিয়েটার চমৎকৃত করত, ভাবাত। অভিনেতা অভিনয় করছেন, দর্শক নিষ্পলক তাকিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা, মন্ত্র মুগ্ধের মত। অভিনেতারা কি বিশাল ক্ষমতাবান! সোহরাব-রুস্তম তো আর এক বিশাল অনুপ্রেরণা। সারারাত পালা দেখে ভোর বেলা মানুষ কাঁদছে সোহরাব-রুস্তমের ট্রাজেডি দেখে।
অভিনয় শেষে মঞ্চের পেছনে বিড়ি ফোঁকা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চির বিজয় বাবু কৃষকায় অথচ মঞ্চে হয়ে
ওঠেন ইরানী বীর। কি অদ্ভুত! অভিনয়ের কি অসাধারন ক্ষমতা, অভিনেতা কি ক্ষমতাবান!
হিন্দুদের বিভিন্ন পূজা পার্বণ, যাত্রা, নাট মন্দিরের আয়োজন, থিয়েটার, পালা, রামায়ন,মহাভারত
অনাবিল আনন্দের সাথে দেখতে দেখতে মনে সংস্কৃতির ভিতটাও ক্রমে গড়ে উঠতে থাকে মামুনুর রশীদের। পরবর্তীকালে সে সবই হয়তো তাঁকে নাট্যচর্চার প্রতি ধাবিত করেছে।
মাধ্যমিকের পর ভর্তি হন ময়মনসিংহ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬৩ সালে, কিন্তু ভালো লাগলোনা। কৃষি
কলেজে পড়ার ভবিষ্যৎ নেই ভেবে চলে এলেন ঢাকা কলেজে। সেখানেও পড়া হয়ে উঠল না।
অর্থনৈতিক অবস্থাও খুব ভালো নয়। চলে এলেন ঢাকা পলিটেকনিক এ। মেধা বৃত্তি পান ৮৫০ টাকা, মাধ্যমিক ফলাফলের জন্য। এখানেই পেলেন রকিব উদ্দিন স্যারকে, অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদের স্বামী। রফিক উদ্দিন স্যার নাটক চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত ছিলেন, নাট্যকার বিধায়ক ভট্টাচার্যের সাথে কাজ করেন তিনি। পেলেন রনেন্দু স্যার। নাট্যজন রামেন্দু মজুমদারের ভাই। সবাই নাট্যানুরাগী। প্রচুর কালচারাল একটিভিটিস হয় এখানে। তাঁদের উৎসাহে ১৯৬৫ সালে একটি একাঙ্ক নাটক- ‘মহানগরীতে একদিন’ লিখে ফেললেন, নির্দেশনা দিলেন আবুল কাশেম, পলিটেকনিকের শিক্ষক।
যিনি পরে সদস্য হয়েছিলেন নাটকের দল নাগরিকের। মামুনুর রশীদের নাটক লেখার শুরু এভাবেই। পেলেন উৎসাহ আর প্রশংসা। ছেলে বেলায় যাত্রা দেখতে গিয়ে মনে হতো, এই পুরো ব্যাপারটার পেছনে নিশ্চয় একজন আছেন যিনি এটা লিখছেন। তাঁর মানে তিনি দারুণ ক্ষমতাবান। সেখান থেকেই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন, এবার অনুপ্রেরণা পেলেন। এরপর তিনি লিখেছেন অনেক নাটক, সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা নাট্য সাহিত্যের ভান্ডার।
এ সময় বন্ধু হিসেবে পান দেলোয়ার হোসেন বাচ্চু (সবুজ অপেরার মালিক), পরিচালক ছটকু
আহমেদ, ক্রিকেটার বজলুর রশীদ, নিয়াজ আহমেদকে। ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় কবি নির্মলেন্দু গুণ আর আবুল হাসানের সাথে। ১৯৬৫/৬৬ সাল। ৪/৫ টা নাটক লিখে ফেলেছেন। রেডিওতে অডিশন দিয়ে পাশ করেছেন। নাটকে অভিনয়ও করেছেন কয়েকটা। ইতিমধ্যে টেলিভিশনও এসে গেছে। সেখানেও ঘুরাঘুরি শুরু করেছেন। আব্দুল্লাহ ইউসুফ ইমামের ‘চেনা মুখ’ নাটক দিয়ে টিভি নাট্যকার হিসেবে মামুনুর রশীদের আবির্ভাব। পরিচয় হয় জিয়া হায়দার, আবদুল্লাহ্ আল মামুন, মুনীর চৌধুরী, শহীদুল্লা কায়সারের সাথে।
১৯৬৮/৬৯ সালে এসে ২ জন নাট্যগুরু পেয়ে গেলেন। আসকার ইবনে শাইখ আর আবদুল্লাহ
ইউসুফ ইমাম। তাঁদের অনুপ্রেরনায় রচনা করেছেন বেশ কিছু নাটক। আবদুল্লাহ আল মামুনের কথায় “সংশপ্তক” নাটকের নাট্যরূপ দেন টিভির জন্য, সেই সুবাদে শহীদুল্লা কায়সারের কাছে আসার সুযোগ হয়। কিন্তু ৫/৬ টি পর্ব প্রচারিত হবার পরই স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়ে যাওয়ায় নাটকটি আর টিভি পর্দায় প্রচারিত হয়নি।
১৯৬৮সালে পলিটেকনিক্যাল থেকে পাশ করার পর আবার বিএ পরীক্ষা দিলেন প্রাইভেটে। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে ভর্তি হতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী স্যার বললেন
কোন পার্টটাইম স্টুডেন্ট এর কাজ না ইংরেজি পড়া। স্যার সত্যিই ধরেছিলেন । ততদিনে নাটকই যে তাঁর জীবনের প্রধান হয়ে গেছে। পরে ভর্তি হন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে। অনিয়মিত ছাত্র হিসেবে পরে পাশও করেছিলেন। ভাল ছাত্র হিসেবে যার শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল তাঁর একাডেমিক কেরিয়ারটা সেভাবে দাঁড়ালো না। সেজন্য আফসোস নেই। কারণ তাঁর ঝোঁকটাই ছিল সংস্কৃতির দিকে।
পলিটেকনিক পড়ার সময় সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। কিছু দিন ছাত্র রাজনীতি
করেই তিনি ছাত্রলীগের ঢাকা সিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন। সভাপতি কাজী আরেফ। তবে কিছুদিন পর আর ভাল লাগলনা। সেই তুলনায় ছাত্র ইউনিয়ন ভাল লাগল। কিন্তু যখন যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তখন তা ২ টি গ্রুপে ভাগ হয়ে গেল। মেনন আর মতিয়া গ্রুপ। তাঁর আর ছাত্র ইউনিয়ন করা হলো না।
টিভিতে নাটক লিখছেন কিন্তু খুঁজে ফিরছেন কিভাবে মঞ্চের সাথে জড়ানো যায়। খোঁজ পেলেন
আসকার ইবনে শাইখ মঞ্চ নাটকের সাথে যুক্ত। ঘুরতে লাগলেন তাঁর পিছে এবং কিছু দিনের মাঝেই ওনার নাটকে সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করলেন, টিভি নাটকের সূত্রেই যার সাথে পরিচয়।
ষাটের দশকের সাহিত্যের লোকদের সাথে তাঁর যোগাযোগ বাড়তে লাগল। নির্মলেন্দু গুণ, আবুল
হাসানের সাথে তো আগেই পরিচয়, এর সাথে যুক্ত হলেন আব্দুল মান্নান সৈয়দ, আখতারুজ্জামান
ইলিয়াস, নিউ মার্কেটের নলেজ হোমে জমে ওঠে আড্ডা। পরিচয় হয় আবদুল্লাহ আবু সাঈদের
সাথে। তিনি ‘কন্ঠস্বর’ এর সম্পাদক। ‘কণ্ঠস্বর’ কে কেন্দ্র করে একটি লেখক গোষ্ঠীও গড়ে ওঠে। সাইদ স্যার তখন ইন্টারমিডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজ বর্তমান বিজ্ঞান কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল। পৃথিবীর আধুনিকতম সাহিত্য, বোঁদলেয়ার, র্যাঁবো, পশ্চিমের কবি সাহিত্যিকদের জীবনযাপন আর রবীন্দ্রনাথের চমৎকার সব খবর এসে পৌঁছাত তাঁদের কাছে। আড্ডা জমত পাবলিক লাইব্রেরীর মাঠ সংলগ্ন শরীফ মিঞার ক্যান্টিন এ, ৫০ পয়সার বিরিয়ানী সহযোগে, আর বিউটি বোর্ডিং এ। কবিতার নির্মলেন্দু গুণ, আবুল হাসান, সঙ্গীতের রাজা হোসেন খান, গল্পের মলয় কুমার ভৌমিক, এক বহূমাত্রিক শিল্প যোগাযোগ। এই সকল নিত্য আড্ডার সর্বশেষ স্থান ছিলো রাতের বেলার ক্যাফে ডি তাজের আসর। বসা হতো সেখানেও ।
সিনেমার মানুষদের সাথেও যোগাযোগ তৈরি হয় এখানে। সূজয় শ্যাম, রাজা হোসেন খান,
হেলাল,সমর দাশ, জহির রায়হানদের সাথে তুমুল আড্ডা চলত আব্দুস সামাদ, রোজী সামাদ
দম্পতির বাসায়। সাথে মোরগ পোলাও। সে এক শিল্প যাপনই বটে। তখন ইনকামটাও ভাল। টিভিতে একটা নাটক লিখে ৪৮০ টাকা। এমনও হয়েছে মাসে ৪ টি নাটক লিখেছেন। গভীর রাতে ফিরে আসেন হাতির পুলের খালের ধারের বাড়ীতে যেখানে তিনি আর গুণ একসাথে থাকতেন।
প্রতিষ্ঠিত টিভি নাট্যকারের প্রতি রমনীরা আকৃষ্ট হতো খুব, হতেন তিনিও। চলত চিঠি লেখা লিখি
আর ফোনে কথা বলাও। যদিও পরিনতি পায়নি সেসব প্রেম।
পুরো ষাটের দশক এক স্বর্ণযুগ। শিক্ষা দীক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতির ক্রমবিকাশমান উত্থান। সামনে
বিরাট স্বপ্ন। অপেক্ষায় দেশ। সেই উত্তাল সময় পাড়ি দিয়ে এলো ৭১। ২৫ মার্চ রাতে আটকা পরলেন গ্রীন রোডে। পাক আর্মি টিভি দখল করে ১ মার্চ প্রচারিত তাঁর ‘আবার আসিব ফিরে’ নাটকের টেপ নিয়ে চলে যায়। ২৭ তারিখ কারফিউ শিথিল হলে চলে আসেন বাবু বাজার, সেখান থেকে জিঞ্জিরার কাছাকাছি শুভাড্যায়। কিছু দিন শাইন পুকুর, নবাব গঞ্জের আজিজপুরে কাটিয়ে ফিরে আসেন ঢাকা, টাঙ্গাইল যাবার জন্য। সেখানে কেউ নেই। নানা বাড়ি পাইকড়ে এসে পৌঁছেন অবশেষে।
টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে একটা যুদ্ধ হয়েছিল। যুদ্ধের পর পাওয়া কিছু অস্ত্র পালেরা তাদের পুণে
ঢুকিয়ে মাটি দিয়ে লেপে দিয়েছিল। তিনি জানতে পারেন। কাদের সিদ্দীকিকে জানান এবং তাঁর
নির্দেশে গ্রামবাসীদের সহায়তায় অস্ত্র উদ্ধার করে কাদের সিদ্দীকিকে দেন। কাদের সিদ্দীকি তখন টাঙ্গাইল এলাকার পরিচিত নাম। তাঁর সাথে ছিলেন, এর পর আগরতলা হয়ে চলে আসেন কলকাতা।
যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। সেখানে সাক্ষাত মেলে মুস্তাফা মনোয়ার, হাসান ইমাম,
আশরাফুল আলম, শহীদুল ইসলাম, মুস্তাফা আনোয়ার, আব্দুল্লাহ আল ফারুখ, আলী যাকেরের
সাথে। মুস্তাফা মনোয়ার মনের কথাটি বললেন চল নাটক করি। বেতারের জন্য নাটক লেখা চলল।
থাকতেন নরেন বিশ্বাস, আহমেদ ছফার সাথে উদয়ন ছাত্রাবাসে। এসময় কলকাতায় মঞ্চ নাটক
দেখা এবং মঞ্চের মানুষদের সাথে পরিচয়ের সুযোগ হয়ে ওঠে। দেখেছেন উৎপল দত্ত, শম্ভু মিত্র, অজিতেশ বন্দোপাধ্যায়ের নাটক, রবীন্দ্র সদন, রঙ্গনা, একাডেমী অফ ফাইন আর্টস এ। চলে ভিতরে ভিতরে মঞ্চ নাটকের প্রস্তুতি। স্বীকার করেন মঞ্চ নাটকের মানুষ হওয়ার জন্য উৎপল দত্তের প্রভাবই বেশি। যিনি বলতেন- আই আ্যম নট অ্যান আর্টিস্ট, আই আম এ প্রপাগান্ডিস্ট। মামুনুর রাশীদ নিজেকেও তাই মনে করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগের মঞ্চনাটকের চর্চা ছিল অনিয়মিত ও ঢাকা কেন্দ্রিক। সমসাময়িক ও অগ্রজদের অনেকে নিয়মিত নাট্যচর্চায় আগ্রহী ছিলেন। স্বাধীনতার আগে অনেকের সুযোগ হয়েছিল কলকাতার গ্রুপ থিয়েটার চর্চার সাথে পরিচিত হবার। ড্রামা সার্কেল প্রতিষ্ঠা পায় ১৯৫৬ সালে। পরে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়, পারাপারও প্রতিষ্ঠা পায় স্বাধীনতার আগে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ঢাকায় উত্থান ঘটে কয়েকটি নাটকের দলের। আরণ্যক নাট্যদল, নাট্যচক্র, থিয়েটার, বহুবচন, প্রতিদ্বন্দ্বী নাট্য গোষ্ঠী ইত্যাদি। নাটকের দল করলেন তিনি। আবদুল্লাহ আল মামুনের কাছে দলের নাম চাইলে বললেন,-নাগরিক তো আছেই, তোমারা আরণ্যক হয়ে যাও। হয়ে গেলেন।
১৯৭২ সালের ১ লা ফেব্রুয়ারি আরণ্যক দলটি স্বাধীন দেশে প্রথম মঞ্চ নাটকের মঞ্চায়ন করে। মঞ্চায়িত হয় মুনির চৌধুরীর কবর নাটক, মামুনুর রশীদের নির্দেশনায়। এ নাটকেই অভিষেক ঘটে শক্তিমান মঞ্চাভিনেতা আলী যাকেরের। বিশিষ্ট পরিচালক সুভাষ দত্তও অভিনয় করেছেন এ নাটকে। এ বছরেই মঞ্চে আসে তাঁর রচনা ও নির্দেশনায় ‘পশ্চিমের সিঁড়ি’। এতে অভিনয় করেন পরবর্তীকালের শক্তিমান অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ। ১৯৭২ সালে দল তৈরী, নাটক মঞ্চায়ন হয়ে থাকলেও ১৯৭৩ সাল থেকে ভাটা পড়ে। অনিয়মিত হয়ে পড়ে। নিয়মিত হয় ১৯৭৬ সালে এসে।
চলচ্চিত্রের মোহে পড়েন তিনি। যুদ্ধের পূর্বে ২ টি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য করেছিলেন। ‘সূর্য গ্রহন’ ও ‘রাঙ্গা বৌ’ । এবার প্রযোজনায় আসেন, ‘ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে’ , ‘ও পায়ে চলা পথ’। কিন্তু চলা হয়না, হোঁচট খান। নিঃস্ব হয়ে হাত গুটিয়ে নেন। কিন্তু সাহিত্যের চর্চা ও বিশ্ব নাটকের সাথে পরিচিত হবার মাধ্যমে ভবিষ্যতের নাট্য চর্চার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। ১৯৭৬ এ এসে আবার নতুন করে শুরু করেন।
‘ওরা কদম আলী’, ‘ওরা আছে বলেই’,‘ ইবলিশ’, ‘গিনিপিক’, ‘সমতট’, ‘পাথর’, ‘মানুষ’,
‘জয়জয়ন্তি’, ‘সংক্রান্তি’, ‘রাঢ়াং’ প্রভৃতি মঞ্চ নাটক তাঁর হাত থেকে বেরোতে থাকে একের পর এক।
যৌবনের শুরুতে শেক্সপিয়ারে আচ্ছন্ন হন। কি চমৎকার গল্প, কিন্তু পড়তেই। দেখার উপায় নেই। এ সময় কলকাতার উৎপল দত্তের শেক্সপিয়ার চর্চার খবর আসে। শেক্সপিয়ারের সমাজ চেতনা শ্রেণী ভাবনার খোঁজ পান।
তাঁর কাছে মঞ্চ এক অদ্ভুত জায়গা। এক মহা আন্তর্জাতিক ব্যাপার। চারিদিকে নেই কোন
জাতীয়তাবাদের সীমা। মঞ্চে অবলীলায় এসে দাঁড়ায় শেক্সপিয়ার, সফোক্লিস, মঁলিয়র, ইবসেন,
ব্রেশট; সে কলকাতা বা ঢাকা বা মফস্বল যেখানেই হোক না কেন। শেক্সপিয়ারের পর তিনি
ইবসেন, বার্নার্ড শ তে মুগ্ধ হন। বন্ধুদের আড্ডার বিষয়বস্তু হতো ইবসেন বার্নার্ড শ র নাটকের সুদীর্ঘ ভূমিকা। সামাজিক রাজনৈতিক ভাবনা, ঘুরে ফিরে আসত লরেন্স অলিভিয়ে, জন গিলগুড।
অলিভিয়ে, যিনি অভিনয় দক্ষতা আর দৈহিক অভিব্যাক্তির মাধ্যমে পাল্টে দিয়েছিলেন ১৯ শতকের শেক্সপিয়েরের ইংরেজী ঢং। যৌবনের শুরুতেই পরিচিতি হয়েছিলেন রাশিয়ান সাহিত্যের খনি টলস্তয়, দস্তয়ভস্কি, পুশকিন, মায়াকোভস্কি, নিকোলাই অস্ত্রভস্কির সাথে। ফাউস্টের মাধ্যমে পরিচয় গোর্কির সাথেও। নিউ ইয়র্কের নাটকের জন্য বিখ্যাত ‘ব্রডওয়ে’ আর ‘অফ ব্রডওয়ের’ কথাও জেনেছেন। পরে অনেকবার নাটক দেখার সুযোগ হয়েছে সেখানে। সে এক রোমাঞ্চই বটে।
বাবুল চৌধুরীর সাথে পলিটেকনিকে পড়বার সময় মামুনুর রাশীদের পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব। বন্ধুত্বের সূত্রে বন্ধুর বাড়ী যাওয়া আসা। বাবুলের বড় বোন টুলী, পুরো নাম গওহর আরা চৌধুরীর সাথে পরিচয়-প্রনয়- পরিনয়। ১৯ জানুয়ারি ১৯৭৩ থেকে আজ অবধি তাঁরা জীবন পথের যাত্রী, মামুনুর রাশীদের থিয়েটারের পথ চলার সহযোগী, প্রেরনায়, অনুপ্রেরনায় অনুক্ষণ। কন্যা শাহনাজ মামুন এবং পুত্র আদিব রাশীদ মামুন।
‘কীর্তনখোলা’, ‘মনপুরা’, ‘না মানুষ’, ‘মৃত্তিকা মায়া’, ‘ভূবন মাঝি’, ‘মেয়েটি কোথায় যাবে’, ‘খাঁচা’ প্রভৃতি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। মনপুরায় পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। মঞ্চের পাশাপাশি টেলিভিশনে প্রচুর অভিনয় করেছেন। ‘ইটের পর ইট’, ‘এখানে নোঙ্গর’, ‘একটি সেতুর গল্প’, ‘সাম্প্রতিক’, সবই তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ‘বাঁচা’, ‘সাম্প্রতিক’, ‘দানব’, ‘শিল্পী’, ‘সুন্দরী’, ‘সুপ্রভাত ঢাকা’ নাটকগুলো তাঁর রচনা। ‘সময়-অসময়ে’ তাঁর সৃষ্ট -মধু পাগলা চরিত্রটি আজও মানুষের স্মৃতিতে আছে।
গত শতাব্দীর সত্তর দশকের গোড়ার দিকে নাটকের দলগুলো নিয়ে একটি ফেডারেশন গঠন করবার ইচ্ছায় নাট্যব্যাক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার থিয়েটার পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে ১৯৮০ সালের ২৯ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি এস সি তে সবাইকে নিয়ে এক মত বিনিময় সভা করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন মামুনুর রাশীদ। এর ধারাবাহিকতায় গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন গঠিত হয় এবং রামেন্দু মজুমদার প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন। পরবর্তীকালে মামুনুর রাশীদ দুই দফায় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
মামুনুর রাশীদের হাত ধরেই যাত্রা শুরু হয় মুক্ত নাটকের। লিখিত পান্ডুলিপি ছাড়া, নিরক্ষর মানুষদের দিয়ে, তাদেরই অভিজ্ঞতার গল্পে, তাদেরই অভিনয়ে তৈরি নাটক। মানুনুর রাশীদ এর নাম দিয়েছেন মুক্ত নাটক। তাঁর মাধ্যমে সারা দেশে মুক্ত নাটকের দল গড়ে ওঠে এবং আলোচিত পারফরম্যান্স হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। কিন্তু পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক আর রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তা আর এগিয়ে যেতে পারেনি। মুক্ত নাটক করতে গিয়ে সমাজের যে শোষক শ্রেণীর আঁতে ঘা লাগছিল তাদের শত্রু হবার হাত থেকে নাটকের সাধারন নিরীহ মানুষ গুলোকে রক্ষা করবার জন্য যে গোষ্ঠীগত শক্তির দরকার ছিল , তা ছিল না।
আশির দশকে রচনা করেন ‘নীলা’, ‘মে দিবস’, ‘কদম আলীর মে দিবস’, এর মাধ্যমে পথ নাটকেও মামুনুর রাশীদের ছিল সরব উপস্থিতি।
থিয়েটারের সুবাদে গিয়েছেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ। আমেরিকা, কোরিয়া,কানাডা, জার্মানি সহ
এশিয়ার অনেক দেশ। সে সব প্রভাব পড়েছে তাঁর থিয়েটারএ।
স্বৈরাচার এরশাদের আমলে তাঁকে বাংলা একাডেমী পদকের জন্য মনোনীত করা হলে রাজনৈতিক মত ভিন্নতার কারণে তিনি পদক প্রত্যাখ্যান করেন। ২০১১ সালে তিনি একুশে পদক পান ও গ্রহন করেন। এ ছাড়া দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, মাওলানা ভাসানী পদক, মুনীর চৌধুরী পদক, মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার সহ অসংখ্য সন্মাননা পেয়েছেন। সবচেয়ে বেশী যা পেয়েছেন মানুষের ভালবাসা। এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর তো নেই কিছু।
কামাল লোহানী বলেছেন- ‘‘নাটক শুধু বিনোদন নয়, শ্রেণী সংগ্রামের সুতীক্ষ্ণ হাতিয়ার-এই
রাজনীতিই তাঁকে মহীয়ান করে তুলেছে’’ বলেছেন-“সংস্কৃতির বিপন্নতায়, রাজনৈতিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তির দাবীতে, মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক ঘৃন্য অপশক্তি উৎপাটনে মানুনুর রাশীদ সুউচ্চকন্ঠে সোচ্চার”।
সারাটা জীবন নাটক রচনা, নির্দেশনা, অভিনয় করেছেন মামুনুর রাশীদ নিষ্ঠার সাথে। এসেছেন
মানুষের কাছাকাছি দেশে বিদেশে। এই মানুষই তাঁর নাটকের গল্প হয়ে ওঠে, এই মানুষই তাঁকে
ভালবাসে।
তথ্যসুত্রঃ
১. মামুনুর রাশীদ । থিয়েটারের পথে
–ফয়েজ জহির,হাসান শাহরিয়ার
প্রকাশক: আদিব রশীদ মামুন, বাঙলা পাবলিকেশন
প্রথম প্রকাশ : ২০১৬
২. দ্রোহ দাহ স্বপ্নের মামুনুর রশীদ
৩. সাক্ষাতকারঃ সাপ্তাহিক
—স্বকৃত নোমান
৪. সাক্ষাৎকারঃ থিয়েটারওয়ালা
–হাসান শাহরিয়ার , আজাদ আবুল কালাম, বিপ্লব বালা
৫. জন্মদিনের আড্ডায় মামুনুর রাশীদ
-দ্রোহ দাহ স্বপ্নের নাট্য আয়োজন; প্রশ্ন উত্তর পর্ব,
৬. সাক্ষাৎকারঃ মামুনুর রাশীদ (২৮-৪-২০১৭)
লেখক: রাজিত আলম পুলক