১৯৭১ সাল। ২৪ মার্চ। রাত প্রায় নয়টা। পাহাড় ঘেরা চট্টগ্রাম বন্দর নগরীর রেলওয়ের পাহাড়ে একাকী এসে দাঁড়ালেন একজন বাঙ্গালী। তিনি ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্-এর চট্টগ্রাম সেক্টর এর অ্যাডজুট্যান্ট। একটু পরেই সেখানে এসে উপস্থিত হলেন আরো দু’জন বাঙালী সামরিক অফিসার। তারা সেনাবাহিনীর। পদমর্যাদায় একজন লে. কর্নেল, অন্যজন মেজর। সবার মধ্যেই এক অজানা আশংকা।
আগত দু’জন সামরিক কর্মকর্তাকে অ্যাডজুট্যান্ট বুঝালেন, শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধটা এখুনি শুরু করে দেয়া উচিত। পাকিস্তানিদের উপর আঘাত হানার এটাই সঠিক সময়। এই সুযোগ হারালে পাকিস্তানীরাই আক্রমণ করার প্রথম সুযোগ পাবে, তখন আর বাঙ্গালীদের কিছুই করার থাকবেনা। বাঙ্গালীরা তখন পাকিস্তানিদের গণহত্যার পরিকল্পনা থেকে বাঁচতে পারবে না।
কিন্তু মেজর সাহেব বললেন, পাকিস্তানিরা অমন চরম ব্যবস্থা নেবে না। অতখানি আশঙ্কা করার কিছু নেই। লে. কর্নেলও একই অভিমত ব্যক্ত করেন। এদিকে অ্যাডজুট্যান্ট নিজের সিদ্ধান্তে অটল। যুক্তি দেখালেন চট্টগ্রাম ক্যান্টনম্যান্টে শ’তিনেক পাকিস্তানী সৈন্য আর তাঁর নিজের অধীনে ইপিআর-এ এক হাজারের অধিক বাঙালী সৈনিক। এদের নিয়ে বেশ কিছু সময় চট্টগ্রাম দখল রাখা যাবে।
কিন্তু লে. কর্নেল বললেন, সেটা বিদ্রোহ, বিপ্লব। বিজয়ী হলে ভাল, না হলে তোমার ভাগ্যে কি আছে তা ভাল করেই জান। রাত বেড়ে যাচ্ছিল। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সদস্যরা সন্দেহ পোষণ করতে পারে ভেবে মেজর সাহেব লে. কর্নেলকে স্থান ত্যাগ করার তাগাদা দিলেন। যে যার মতো চলে গেলেন। অ্যাডজুট্যান্ট হতাশায় সেই রাতেই নিজের ডায়রিতে লিখলেন, “এবং পশ্চিম পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রথমে আঘাত না হানার ব্যর্থতার দায়িত্ব ওরা কোনোদিনই এড়াতে পারবে না।”
নিয়তির কি বিচিত্র বিধান। তার মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল। সেটি ছিল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ-এর রাত। সেই দু’জন অফিসারের প্রথম জন লে. কর্নেল এম.আর. চৌধুরীকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বন্দি করল। তিনি পাকিস্তানিদের যে বিশ্বাস করেছিলেন, ২০ বালুচ রেজিমেন্টের সৈন্যরা তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে সেই বিশ্বাসের জবাব দিল। অফিসারদ্বয়ের অন্যজন, মেজর জিয়াউর রহমান।
আর সেদিনের সেই অ্যাডজুট্যান্ট ছিলেন মেজর রফিকুল ইসলাম। যিনি পরে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ১নং সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অসম সাহসী এই যোদ্ধা স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত হন। উপরের ঘটনাটি তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘Tale Of Millions‘ গ্রন্থে। বাংলায় অনুদিত এই বইটির নাম ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে’।
আশরাফ উল্লাহ ও রহিমা বেগমের সন্তান রফিকুল ইসলামের জন্ম ১৯৪৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার নাওড়া গ্রামে। তাঁর বাবা আশরাফ উল্লাহ ছিলেন সরকারী কর্মকর্তা। তিন ভাই ছয় বোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবার বড়। বাবার চাকুরীসূত্রে শৈশবকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেয়ে থাকতে হয়েছে যার ফলে পড়াশুনা করতে হয় ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটা স্কুলে। সেইসাথে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের সঙ্গে মেশার ও বন্ধুত্ব গড়ার সুযোগ পান তিনি। নিজ গ্রাম নাওড়াতেই প্রাথমিক স্কুলে হাতেখড়ি। পরে লেখাপড়া করেন পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুরের পালং, কুমিল্লার চান্দিনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ১৯৫৯ সালে অন্নদা মডেল হাই স্কুল থেকে রফিকুল ইসলাম মেট্রিক পাশ করেন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন।
পূর্ব বাংলা তখন উত্তাল, প্রায় প্রতিদিন টানটান উত্তেজনা বিক্ষোভ-মিছিল-মিটিংয়ে। আইয়ুব খানের শিক্ষা নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে উত্তপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য সব শিক্ষাঙ্গন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলামও তখন সরাসরি জড়িত হয়ে পড়েন ছাত্র আন্দোলনে। আগ্রহ ছিল সাংবাদিকতার প্রতি। সেকারণেই ছাত্রাবস্থাতেই কাজ শুরু করেন ‘ইউপিপি’ সংবাদ সংস্থায়। কিন্তু খুব বেশীদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেন না তিনি। ১৯৬৩ সালেই যোগ দেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে। পাকিস্তানের কাকুল মিলিটারী একাডেমী থেকে প্রশিক্ষণ লাভের পর ১৯৬৫ সালে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে কমিশন পান। পরে তাঁকে আর্টিলারী কোরে নেয়া হয়। পাকিস্তানিদের শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতন থেকে দেশকে মুক্ত করে স্বাধীন মাতৃভূমি, নতুন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখতেন তিনি। চাকরি জীবনের শুরু থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নির্মম বৈষম্যের চিত্র দেখেন। বাঙালী হওয়ার কারণে শিকার হন সেই বৈষম্যের। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড গভীরভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিলেন। পশ্চিম পাকিস্তানিদের বৈষম্যমূলক আচরণ, অন্যায়, শাসন, শোষণ ও বঞ্চনা তাঁর রাজনৈতিক চেতনাকে আরো তীক্ষ্ণ ক্ষুরধার করে ফেলে। মুক্ত, স্বাধীন নতুন রাষ্ট্রের স্বপ্ন তাঁর সমস্ত চিন্তা চেতনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে।
১৯৬৮ সালে লাহোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে মেজর রফিকুল ইসলামকে বদলি করে দেয়া হয় পূর্ব পাকিস্তানে। তিনি নিজ রেজিমেন্টসহ যশোর ক্যান্টনমেন্টে রেজিমেন্টের অ্যাডজুট্যান্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। কিছুদিন পর তাঁকে ডেপুটেশনে বদলি করা হয় দিনাজপুরে ইপিআর-এর ৮ নং উইংয়ের অ্যাসিসটেন্ট উইং কমান্ডার পদে। সেখান থেকে ১৯৭০ সালের প্রথম দিকে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্-এর চট্টগ্রাম সেক্টর হেডকোয়ার্টারে অ্যাডজুট্যান্ট পদে পোষ্টিং দেয়া হয়।
ততদিনে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে সৃষ্টি হয়েছে ভয়ানক অস্থিরতা। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন; ১৯৫৮ সালে গণতন্ত্র ধ্বংস করে সামরিক শাসন জারী; ১৯৬২ সালে জনস্বার্থ বিরোধী শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও তার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ; ১৯৬৬ সালে পূর্ব বাংলার স্বাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ৬-দফা প্রস্তাবনা প্রকাশ; এবং বাঙালির স্বাধিকারের দাবিকে নস্যাৎ করার লক্ষ্যে পাকিস্তানি সামরিক শাসকগোষ্ঠি কর্তুক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বেশ কিছু বাঙালি সামরিক বাহিনীর সদস্যকে বন্দী করা এবং শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতারের ফলে সৃষ্ট গণআন্দোলন অচিরেই গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এসব কিছুই পূর্ব বাংলার বাঙালি জনগোষ্ঠিকে পশ্চিম পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে চরমভাবে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল।
তারপর ১৯৭০ সালে নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিস্ঠ দল হিসাবে জনগণের ম্যান্ডেট পাওয়া আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও বাঙালির নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ৩ মার্চ ১৯৭১ সালে জাতীয় সংসদের নির্ধারিত অধিবেশন বাতিলের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ গণবিস্ফোরণে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটির অস্তিত্বে চূড়ান্ত ভাঙ্গনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। সেখান থেকে ফেরার সব পথ ক্রমান্বয়ে হয়ে আসে বন্ধ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অসহযোগ আন্দোলনের আহ্বান প্রতিটি বাঙালীর মনে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্নের বীজ বুনে দেয়। স্বাধীনতার রক্তিম সূর্যকে ছিনিয়ে আনতে যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রতিটি বাঙালী যেন অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় চূড়ান্ত যুদ্ধের।
প্রস্তুতি নেন মেজর রফিকুল ইসলাম নিজেও। অবশেষে ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে শুরু হয়ে যায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং সেই যুদ্ধে মেজর রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয় ১ নং সেক্টরের যুদ্ধ পরিচালনা করার।
১নং সেক্টরটি বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা এবং নোয়াখালী জেলার মুহুরী নদী পর্যন্ত সমগ্র এলাকা নিয়ে গঠিত। এখানে সক্রিয় যুদ্ধ চলেছিল অর্ধশতাধিক মাইলেরও অধিক সীমান্ত এলাকা জুড়ে। অবশিষ্ট শত শত মাইলের বিশাল অঞ্চল এতই দুর্গম এবং প্রায় জনবসতিশূন্য সেখানে কোন পক্ষই স্থায়ী কোন অবস্থান নেয়নি। ১ নং সেক্টরকে পাঁচটি সাব-সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। এই সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল ভারত সীমান্তের কয়েক কিলোমিটার অভ্যন্তরে- হরিনা নামক স্থানে। ১ নং সেক্টরে নিয়মিত সৈন্য সংখ্যা ছিল ২ হাজারের মত। এইসব সৈনিকের মধ্যে চৌদ্দশর মতো ছিল ই.পি.আর., দুইশতের মতো ছিল পুলিশ, তিনশতের মতো ছিল সেনাবাহিনী এবং একশতের মতো ছিল নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর সদস্য। এছাড়াও গেরিলাদের সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ হাজার, যার মধ্যে প্রায় ৮ হাজার যোদ্ধাকে অ্যাকশন গ্রুপ হিসাবে গড়ে তোলা হয়। এইসব গেরিলাকে ১৩৭টি গ্রুপে বিভক্ত করে দেশের অভ্যন্তরে পাঠানো হয়। প্রথমদিকে এই সেক্টরে চারজন সেনাবাহিনীর ও দুইজন বিমান বাহিনীর অফিসার ছিল।
তার বিপরীতে শত্রুপক্ষের শক্তি ছিল প্রায় এক ব্রিগেডের মত। এছাড়াও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আগত আরো দু’টি আধা-সামরিক ব্যাটালিয়নও এই অঞ্চলে শত্রুপক্ষের শক্তিবৃদ্ধি করেছিল। পাক বাহিনীর পক্ষে এখানে সরাসরি যুদ্ধরত অফিসারের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫০ জন।
নিজের যুদ্ধদিনের একটি অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে মেজর রফিকুল ইসলাম বলেন, “১৪ ডিসেম্বর ভোররাত ৩টায় আমরা কুমিরা পুরোপুরি মুক্ত করে ফেলি। চট্টগ্রাম এখন মাত্র ১২ মাইল দূরে। কুমিরা মুক্ত হওয়ার মাত্র ৩ ঘন্টার মধ্যে আমাদের যানবাহন এবং কামানগুলো বিধ্বস্ত সেতু এড়িয়ে খাল পার হতে শুরু করে। কয়েক হাজার নারী, পুরুষ ও শিশু ভাঙ্গা সেতুর কাছে জমায়েত হয়ে আমাদের সাহায্য করেছিল। অন্যদল আবার গাছ, পাথর, মাটি যা কিছু পাচ্ছিল তাই দিয়ে খাল ভরে ফেলার চেষ্টা করছিল। আমি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখছিলাম। এই সময় এক বৃদ্ধা আমার কাঁধে হাত রেখে বললেন, ‘বাবা, চিন্তা করো না। এ কাজ আমরাই পারব। দ্যাখো তোমাদের মালপত্র আর গাড়ী-ঘোড়া কিভাবে পার করার বন্দোবস্ত করছি। দরকার হলে আমরা সবাই খালে শুয়ে পড়ব। আর তার ওপর দিয়ে তোমাদের গাড়ী পার করার ব্যবস্থা করব। দেরী করো না বাবা। প্রত্যেক মুহুর্তে ওরা আমাদের লোক মারছে।’ বৃদ্ধা একটু থামলেন। তার দুই চোখ পানিতে ভরে গেছে। বৃদ্ধা বলে চললেন, ‘তোমরা জানো না, কিছুদিন আগে ঈদের সময় চাটগাঁয়ে একটি লোকাল ট্রেন থামিয়ে ওরা সকল বাঙালী যাত্রীকে খুন করেছে। প্রায় এক হাজার হবে। দা-ছুরি দিয়ে মেরেছে। আমার মেয়ে আর নাতী-নাতনীও ছিল।’ আর বলতে পারল না বৃদ্ধা। ‘তোমরা এগিয়ে যাও, তাড়াতাড়ি এগিয়ে যাও।’ তিনি আমাকে প্রায় এগিয়ে দিয়েই আবার কাজে ফিরে গেলেন।”
যুদ্ধ শেষে ১৯৭২ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন মেজর রফিকুল ইসলাম । এরপর তিনি কিছুদিন চট্টগ্রামে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত হন। সেসময় তিনি স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত ইংরেজী দৈনিক ‘The Peoples View‘এর অ্যাসোসিয়েট এডিটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৭ সালে ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত হন। এবং পরে বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম বোর্ডের চেয়ারম্যান হন। ১৯৯০ সালের নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত মেজর রফিকুল ইসলাম বি.আই.ডব্লিউ.টি.সি.’র চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
মেজর রফিকুল ইসলাম ১৯৮১ সালে আমেরিকার Harvard Business School-এ Senior Management Program কোর্স সমাপ্ত করেন। সামরিক শাসক এরশাদ সরকারের পতন হলে ১৯৯০ সালে দেশের প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারে তিনি মন্ত্রী পদমর্যাদায় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ শাহরাস্তি নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি সমকালীন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে গবেষণা এবং একই সাথে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডেও তিনি জড়িত আছেন।
২৯ ডিসেম্বর, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাজিগঞ্জ শাহরাস্তি এলাকা থেকে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত জাতীয় সংসদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তিনি সভাপতি।
তথ্যসূত্র:
১. ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র- দশম খন্ড’।
২. রফিকুল ইসলাম সম্পাদিত ‘সম্মুখ সমরে বাঙালি’।
৩. সুকুমার বিশ্বাস রচিত ‘মুক্তিযুদ্ধে রাইফেল্স ও অন্যান্য বাহিনী’।
৪. ‘শত মুক্তিযোদ্ধার কথা’।
৫. ‘সেক্টর কমান্ডাররা বলছেন-মুক্তিযুদ্ধের স্মরণীয় ঘটনা’ ।
৬. ‘A Tale Of Millions‘ গ্রন্থ।
লেখক : চন্দন সাহা রায়