প্রভারাণীর জীবনের কোনোকিছুই তাঁর নিজের মতো করে হয়নি। শিশু বয়সে মাত্র ৫০০ টাকার লোভে বোনজামাই তাঁকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য করেছিলো। গরিব মায়ের মেয়ে প্রভার বয়স তখন ১৪/১৫; আর স্বামীর বয়স তখন ৬৫ থেকে ৭০। এ বিয়ে প্রভা চায়নি।
বিয়ের মাত্র নয় মাসের মাথায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ধরে নিয়ে গেছিলো প্রভাকে। স্বামীর ঘরে থাকা অবস্থায় যুদ্ধের পর তাঁর প্রথম সন্তান কাজলের জন্ম। সেই কাজল ছোটবেলা থেকে মানুষের কাছে শুনে এসেছে সে ‘পাঞ্জাবীর সন্তান’। তাঁকে প্রতিটি মুহূর্ত একটি প্রশ্নের জবাব দিতে হয়েছে, সে কার সন্তান? একদিনের জন্যও এটা বন্ধ হয়নি। কাজল সমাজের আর দশটা স্বাভাবিক মানুষের মতো মানসিকভাবে সুস্থ নয়। এটাই সমাজ, বাস্তবতা। কিন্তু প্রভা এটা চায়নি।
জীবনবাস্তবতা কথাসাহিত্যের কল্পনার দৌড়কেও হার মানায়। জীবন যেখানে শুধু বেঁচে থাকার উৎসব, সেখানে বাস্তবতা তার নগ্ন কঙ্কাল নিয়ে আমাদের সামনে দাঁড়ায়। বিশ্বাস- অবিশ্বাসের চিরাচরিত ভেদরেখাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আমার সামনে কথা বলে যাচ্ছেন প্রভারানী।প্রভারাণী মালাকার। গ্রামের বাড়ি বিক্রমকলস, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ থানা। বাবা রাজুরাম মালাকার, মা সৌদামিনি। তাঁদের কোনো ছেলে সন্তান ছিলো না। চার মেয়ে। প্রভারাণী মালাকার সবার ছোট। রাজুরাম মালাকারের খুবই অল্প পরিমাণ জমি ছিলো। তিনি ‘গাঁও’ করতেন, মানে গ্রামে গ্রামে টুকরি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি করতেন। সংসারে খুব স্বাচ্ছন্দ ছিলো, তা নয়। তবে প্রভাদের দিন চলে যেত। বিক্রমকলস গ্রামে সেসময় পড়ালেখার চল খুব একটা ছিলো না। রাজুরামও তাঁর কোনো মেয়েকে স্কুলে পাঠাননি। প্রভা ছাড়া বাকি তিন মেয়ে নন্দরাণী, সরলারাণী ও প্রিয়রাণী তাঁদেরকে অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেন রাজুরাম। কিন্তু প্রভারাণীকে বিয়ে দেওয়ার আগেই তিনি মারা যান। ঘরে একা মা, তিনিও মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন। ফলে প্রভারাণী ছোট বয়সেই একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যান। রাজুরাম মালাকার মারা যাওয়ার সময় প্রভার ওপর মায়ের দায়িত্ব দিয়ে যান। অন্যান্য বোনদের আর্থিক অবস্থাও তেমন ছিলো না যে, প্রভার পরিবারকে নিয়মিত দেখাশোনা করবে। অনেকটা বাধ্য হয়েই তাঁকে মানুষের বাড়ি ‘টুকটাক’ কাজ করতে হতো।
এই অবস্থার মধ্যেই প্রভাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান নাছিরনগর গ্রামের কামিনি রাম মালাকার। তাঁর বয়স তখন প্রায় ৭০। প্রথম স্ত্রী কিছুদিন আগেই মারা গেছেন। তাঁর কোনো সন্তান ছিলো না। গ্রামে নিজের বাড়ি, আর কিছুটা ফসলি জমিও ছিলো কামিনি রামের। ফলে প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করার চিন্তা করেন। তখনি প্রভারাণীকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। প্রভারাণীর বয়স তখন বড়জোর ১৫। ফলে তিনি এ বিয়েতে রাজী ছিলেন না। মত ছিলো না তাঁর মায়েরও। কিন্তু কামিনি রাম প্রভারাণীকে বিয়ে করার জন্য প্রতিবেশী মান্নান মাস্টারকে লাগান। প্রভার এক ভগ্নিপতিকে ধরেন। একপর্যায়ে প্রভা নিজেকে বাঁচাতে মামার বাড়ি হরিশরণে গিয়ে আশ্রয় নেন। কামিনি রাম প্রভাকে বিয়ে করার জন্য ষড়যন্ত্র আঁটেন। প্রভাকে তাঁর মামাতো ভাইয়েরা অপহরণ করেছে এমন অভিযোগ তুলে থানায় মামলা করে দেন। পুলিশ গিয়ে প্রভার মামার বাড়ি ঘেরাও করে। পুলিশ প্রভার মামাত ভাইকে থানায় নিয়ে যায়। প্রভাকেও থানায় যেতে হয়। সেখানে তিনি পুলিশকে জানান, তাঁকে অপহরণ করা হয়নি। তিনি নিজে থেকেই মামাবাড়ি ছিলেন। পুলিশ তবু মানতে নারাজ। একপর্যায়ে টাকা-পয়সা দিয়ে বিষয়টির ফায়সালা হয়।
প্রভারাণীর বক্তব্য অনুযায়ী, ‘এরপর আমার ভগ্নিপতি ৫০০ টাকার জন্য আমারে বুড়া জামাইয়ের কাছে বিয়ে দিয়ে দেয়। আমার আর কিছু করার ছিলো না। আমি বাধ্য হয়ে সংসার করার জন্য মির্জানগরে চলে আসি। সেটা যুদ্ধের আগের শ্রাবণ মাস। আমার বিয়ে হয় শ্রাবণ মাসে আর যুদ্ধ লাগে বৈশাখ মাসে।’একাত্তরে যুদ্ধ শুরুর পর পরই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কমলগঞ্জে চলে আসে। তারা আশপাশের বিভিন্ন চা বাগান ও ডাক বাংলোয় অবস্থান নেয়। তাদেরকে সহযোগিতার জন্য মুসলিম লীগ নেতাদের মাধ্যমে তৈরি করা হয় রাজাকার বাহিনী। এই রাজাকার বাহিনীর সদস্যরাই পাকিস্তানি সেনাদের পথ দেখিয়ে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়।যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ এলাকার হিন্দুদের অনেকেই ভারতে চলে যায়। বাগান থেকে শ্রমিকরা লাইন ধরে প্রতিদিন সীমান্ত পাড়ি দিচ্ছে। যে যেভাবে পারে যুদ্ধ থেকে বাঁচতে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে।প্রভার স্বামীও এমন চিন্তাই করছিলেন। প্রভা যেতে রাজি, কিন্তু মাকে নিয়ে যেতে চান। মাকে রেখে তিনি কোথায় যাবেন? এ নিয়ে যখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ‘কথা’ হচ্ছে, তার মধ্যেই একদিন প্রভা পাঁচআনা পয়সা নিয়ে বাপের বাড়ির দিকে রওনা দেন। স্বামী এটা দেখে তাঁকে মারতে আসে। পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে প্রভা মায়ের কাছে চলে যান। এলাকায় পাকিস্তানিদের অত্যাচার-নির্যাতন বেড়ে গেলে একদিন কামিনি রামও ভারতে চলে যান। প্রভা মায়ের সঙ্গেই থাকে। স্বামী-স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। কেউ কারো খোঁজ জানতো না।প্রভার বাবার বাড়ির পিছনে নজির মিয়া নামে এক মুসলিম লীগ নেতার বাড়ি। তাকে দুলাভাই ডাকতেন প্রভা। তিনি তখন পিস কমিটির মেম্বার। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর লোকজন নিয়মিতই তার বাড়িতে আসে। একদিন সন্ধ্যার পর প্রভা নিজের বাড়িতে বসেছিলেন। এমন সময় নজির মিয়ার বাড়ির এক কাজের মেয়ে এসে তাঁকে তাদের বাড়িতে যেতে বলে।
প্রতিবেশী ডাকছে, কোনোকিছু না ভেবেই প্রভা চলে যান। গিয়ে দেখেন, সেখানে বন্দুক নিয়ে আরো রাজাকার বসে আছে। তারা প্রভাকে জোর করে গ্রামের বাদল মাস্টারের বাড়ি নিয়ে যায়। বাদল মাস্টারের বাড়ি গিয়ে দেখেন, সেখানে পাকিস্তানি মিলিটারি ও রাজাকাররা বসে আছে। সঙ্গে সঙ্গে প্রভাকে ধরে তারা পাকিস্তানি মিলিটারির সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। প্রভা আঁতকে উঠেন। কিন্তু বুঝতে পারেন তাঁকে পরিকল্পিতভাবেই এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। ভয়ে দৌড় দেওয়ার মতো অবস্থাও নেই। দিতে পারেন না। কারণ প্রভার মনে হয়েছিলো, দৌড় মারলে তো এরা গুলি করে মেরে ফেলবে।‘সেই রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমার ওপর নির্যাতন চালায়। সকালে ছেড়ে দেয়’- এই কথাগুলো বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন প্রভা। তাঁর চোখের কোণে জল জমে। ভারী গলায় তিনি আবার বলতে শুরু করেন, ‘আমি বাড়ি ফিরে আসি। আর মায়ের সঙ্গে থাকিনি। চলে যাই পাশের গ্রাম জাঙ্গালহাটিতে আমার বোনের বাড়িতে।’সেখানেও পাকিস্তানিদের উৎপাত ছিলো। লুকিয়ে লুকিয়ে থাকতে হতো। দিনের বেলায় আশপাশের বড় গর্তের মধ্যে আর রাতের বেলায় খড়ের গাদার মধ্যে থাকতে হতো। এভাবে সেখানে প্রায় এক মাস ছিলেন প্রভা।একদিন সন্ধ্যার দিকে গ্রামের রাজাকার কাদির মিয়া, রইছ মিয়া, ইনতাজ মিয়া, জহুর হোসেন, ইদ্রিস আলীসহ কয়েকজন রাজাকার বন্দুক নিয়ে প্রভাদের বাড়ি ঘেরাও করে। বিষয়টি টের পেয়ে প্রভা পিছনের দরজা দিয়ে বাড়ির বাইরে চলে যান। বাড়ির পিছনে একটি বীজতলা ছিলো, সেখানে গিয়ে সটান হয়ে শুয়ে লুকিয়ে থাকেন।প্রভাদের বাড়িতে একটি কুকুর ছিলো। কুকুরটি সব সময়ই প্রভার সঙ্গে সঙ্গে থাকতো। বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় কুকরটিও যে প্রভার পিছু নিয়েছে সেটি তিনি খেয়াল করেননি।সেই সময়টা কথা প্রভারাণীর এখনো মনে আছে।
তিনি বলেন, ‘এদিকে আমাকে বাড়ি না পেয়ে রাজাকাররাও টর্চলাইট জ্বালিয়ে বাড়ির আশপাশে আমাকে খুঁজতে থাকে। একটা সময় কুকুরটা বীজতলায় গিয়ে আমার শাড়িতে কামড় দিয়ে টানতে থাকে। সেটা রাজাকাররা দেখে ফেলে। পোষা কুকুরটাই আমার জন্য কাল হলো। আমাকে রাজাকাররা ধরে ফেলে। তারপর তারা আমাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করি। আমাকে জোর করে নিয়ে যাচ্ছে দেখে কুকুরটা ভীষণ চেঁচাচ্ছিলো। আমার শাড়ি কামড়ে ধরেছিলো। রাজাকারদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিলো। একপর্যায়ে জাঙ্গালহাটির আগে সোনারার দীঘি এলাকায় তারা কুকুরটাকে গুলি করে মেরে ফেলে।’সেই রাতে রাজাকাররা প্রভারাণীকে শমসেরনগর ডাক বাংলোতে নিয়ে যায়। সেখানে পাকিস্তানি সেনারা ক্যাম্প বসিয়েছিলো। রাজাকাররা তাদের হাতে তুলে দেয় প্রভাকে। সারারাত ধরে নির্যাতন চলে। একপর্যায়ে প্রভা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।কাকডাকা ভোরের দিকে প্রভার জ্ঞান ফিরে আসে। কিন্তু প্রভা মরার মতো করে পড়ে থাকেন। পাকিস্তানিরা তাঁর মাথা তুলে দেখে তিনি মরে গেছেন কি না। একপর্যায়ে তারা ভাবে প্রভা বোধহয় মরে গেছে। তখন তারা প্রভাকে ফেলে রেখে চলে যায়।ডাক বাংলোর পিছনে একটি ছোট নালার মতো ছিলো। বর্ষাকাল ছিলো বলে সেটিতে বেশ পানি ছিলো। প্রভা ভোরের আলো ফোটার আগেই ধীরে ধীরে সেখান থেকে পালিয়ে পিছনের খালে গিয়ে নেমে পড়েন। । খালটি ছিলো খুবই নোংরা এবং জোকে ভর্তি। এই খাল দিয়েই কোনোভাবে আবার বোনের বাড়ি চলে আসেন প্রভা।প্রভাকে বাড়ি ফিরতে দেখে বোন ও ভগ্নিপতি খুবই অবাক হয়। তারা রাতে গুলির শব্দ শুনেছেন। তাদের ধারণা, তখন প্রভাকেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি এমন ছিলো না যে, তারা প্রভাকে খুঁজতে বের হবেন। প্রভা তাদের বলেন, তখন গুলি করে কুকুরটাকে মারা হয়েছে। এরপর মুক্তিযুদ্ধের বাকি সময়টা প্রভা জঙ্গলহাটিতে বোনের বাড়িতেই ছিলেন। খুবই অসুস্থ তিনি। কিন্তু যেহেতু সেখানে কোনো ডাক্তার ছিলো না, সেহেতু কোনো চিকিৎসাও হয়নি।
প্রভা বোনের বাড়ি থাকা অবস্থায়ই দেশ স্বাধীন হয়। তারপর প্রভা আবার তাঁর মায়ের কাছে বিক্রমকলস গ্রামে চলে আসেন।প্রভারাণী ভাবতে থাকেন, স্বামীর কোনো খোঁজ নেই। স্বামী তাঁকে ভারতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি যাননি। তিনি মায়ের কাছে চলে আসেন। আর তার মধ্যেই এ ঘটনা ঘটলো। এখন স্বামী যদি ফিরে আসেনও, তাহলে তিনি তাঁকে গিয়ে মুখ দেখাবেন কীভাবে? স্বামীর বাড়ির সমাজের কাছেই বা মুখ দেখাবেন কীভাবে? এসব ভাবতে ভাবতেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, স্বামী যদি ফিরে আসেও তাহলে তিনি আর তাঁর সঙ্গে ফিরে যাবেন না। মায়ের কাছেই থাকবেন। কাজ-কর্ম করে কোনো না কোনোভাবে জীবনটা কাটিয়ে দেবেন।একদিন প্রভার স্বামী প্রতিবেশী মান্নান মাস্টারকে সঙ্গে নিয়ে বিক্রমকলস গ্রামে চলে আসেন। কামিনি রাম স্ত্রীকে নিয়ে যেতে চান। তিনি আগেই স্ত্রীর ওপর পাকিস্তানি সেনাদের অত্যাচারের কথা জানতে পেরেছিলেন। মান্নান মাস্টারও প্রভাকে সব ভুলে স্বামীর সঙ্গে আসার জন্য পরামর্শ দেন, নতুনভাবে জীবন শুরু করার কথা বলে। প্রভাও স্বামীকে সবকিছু খুলে বলেন। প্রভা স্বামীকে জানান, তিনি যেতে চান না। যা হবার হবে। তিনি এভাবেই জীবন কাটিয়ে দেবেন। কিন্তু কামিনি রাম সেই কথা মানতে নারাজ। শেষ পর্যন্ত প্রভা আবার স্বামীর বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু তাঁকে তো আর এভাবে তারা ঘরে তুলবে না। স্বামীর বাড়ির লোকজন প্রভাকে প্রায়শ্চিত্ব করায়।
তারপর ঘরে তুলে। যুদ্ধের পর আরেকটি ঘটনা ঘটে। মুজিব সরকার তখন অনেক রাজাকারকে আটক করে জেলে পাঠায়। প্রভাকে যারা পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দিয়েছিলো, তাদের কয়েকজনকেও জেলে পাঠানো হয়। একপর্যায়ে তাদের পরিবারের লোকজন এসে প্রভার হাত-পা ধরা শুরু করে, প্রভা যেন তাদের ক্ষমা করে দেন। প্রভা যেন থানায় গিয়ে তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেন। কিন্তু প্রভা তাতে রাজি ছিলেন না। তখন মান্নান মাস্টারও এসে প্রভাকে তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা বলে, চাপ দেয়। তারপরও প্রভা তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেননি। দুই বছর পরে অবশ্য তারা এমনিতেই ছাড়া পেয়ে যায়।’মুক্তিযুদ্ধের পর এক বছরের মাথায় আমার ছেলে কাজল হয়। সেই ছেলেকেই তখন থেকে মানুষ সন্দেহ করতে থাকে। মানুষ চলতে ফিরতে নানা কথা বলে। সেই কথা আজ ৪৪ বছর ধরেই চলছে। ছোট থাকতে আমার ছেলে কাঁদতে কাঁদতে এসে বলতো, মা দেখ আমারে মানুষ পাকিস্তানির ছেলে বলে গালি দেয়। তুমি বলো, আমার বাবা কে?’২০১৫ সালরে ডসিম্বের মাসে মৌলভীবাজার জলোর কমলগঞ্জ উপজলোর নাছিরনগর গ্রামে প্রভারাণী মালাকারের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।লেখক : চন্দন সাহা রায়